বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের দেহাংশ এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এখন পর্যন্ত ভারত ও বাংলাদেশে গ্রেফতার হওয়া আসামিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, কলকাতার পাশ্ববর্তী অঞ্চল ভাঙ্গরের কৃষ্ণ মাটি ও জিরানগাছার বাগজোলা খালে ফেলা হয়েছে তার দেহাংশ। কিন্তু বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালিয়েও কোনো আশার আলো দেখা যায়নি।
এদিকে ভাঙ্গরের স্থানীয় বাসিন্দা মোজাফফর হোসেন বলেন, এই খালে দেহাংশ পাওয়া সম্ভব নয়। এই অঞ্চলে প্রচুর শিয়াল, বনবিড়াল আছে। এই খালে পানির যা স্রোত তাতে দেহাংশ পাওয়া বেশ কঠিন।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, দেহাংশ খালের পানিতে ফেলা হলে পানির টানে চলে যাবে। দেহাংশ সহজে পাওয়া যাবে না।
গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান এমপি আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ আনোয়ারুল আজীম।
ভারতে এসেছিলেন চিকিৎসা করাতে। কিন্তু চিকিৎসার আগেই খুন হন আনোয়ারুল আজীম। প্রায় ১০ দিন নিখোঁজ থাকার পর গত বুধবার (২২ মে) তার খুনের বিষয়টি সামনে আসে। এরপরেই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব পরে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডির হাতে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ থেকে গ্ৰেফতার হয় এক বাংলাদেশি নাগরিক। জিহাদ হাওলাদার নামে ২৪ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির বাড়ি বাংলাদেশের খুলনা জেলার দিঘোলিয়া থানার বারাকপুর গ্রামে। তার পিতার নাম জয়নাল হাওলাদার।
জিহাদ হাওলাদার সিআইডি জেরায় স্বীকার করেছেন যে, আখতারুজ্জামানের নির্দেশে তিনি এমপি আনারকে তার নিউটাউনের ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন।
তারপর তারা ফ্ল্যাটের মধ্যেই পুরো শরীর থেকে মাংস আলাদা করেন এবং পরিচয় নষ্ট করার জন্য মাংসের কিমা করে তারপর সবকিছু পলিথিনের প্যাকে রাখে। পাশাপাশি হাড়গুলোকে ছোট ছোট টুকরো টুকরো করে প্যাক করা হয়। এরপর থেকে ওই প্যাকেটগুলো ফ্ল্যাট থেকে বের করে আনা হয়।
কলকাতার পাশ্ববর্তী শহরাঞ্চল বরাহনগর বিধানসভা এলাকার ডানলপের কাছ থেকে শুরু হয়ে কলকাতার বহু এলাকা পেরিয়ে কুলটির ঘুসি ঘাটার কাছে গিয়ে বিদ্যাধরী নদীতে মিশে গেছে এই বাগজোলা খাল। কোথাও এই খালের দুই ধারে গড়ে উঠেছে বসতি। আবার কোথাও এই খালের দুই ধারে ঘন জঙ্গল।
পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হওয়া প্রায় ৪০ কিলোমিটার এই জলপথের দুটি অংশ রয়েছে। এই খালের সঙ্গে প্রায় ৭ থেকে ৮টি খাল এসে মিশেছে। ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী, ওই সব শাখা খাল দিয়ে কলকাতার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের সব পানি বাগজোলা খালে পরে। এই খালে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। তাই পানি বা ডাঙায় এমপি আনারের দেহাংশ খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। স্থানীয় লোকজনও এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
বিজনেস আওয়ার/২৬ মে/ হাসান