ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হানিয়ার মৃত্যু বিশ্বকে আরও নিরাপদ করে তুলবে: ইসরায়েলি মন্ত্রী

  • পোস্ট হয়েছে : ০৩:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪
  • 74

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: ইরানে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া নিহত হওয়ার খবরে স্বস্তি জানিয়েছেন ইসরায়েলের এক মন্ত্রী। যদিও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে ইতোমধ্যেই দেশটির বেশ কিছু রাজনীতিবিদ তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

ইসরায়েলের ঐতিহ্য বিষয়কমন্ত্রী আমিচায় ইলিয়াহু সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে বলেন, হানিয়ার মৃত্যু বিশ্বকে আরও নিরাপদ করে তুলবে। তিনি বলেন, বিশ্ব থেকে কলুষতা দূর করার এটাই সঠিক উপায়। এদের জন্য আর কোনো শান্তি/আত্মসমর্পণ চুক্তি নয়, আর কোনো করুণা নেই।

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান হানিয়াকে ইরানের রাজধানী তেহরানে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানি গণমাধ্যম। ইরানের বিপ্লবী গার্ডস বাহিনী বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসমাইল হানিয়া তার এক দেহরক্ষীসহ তেহরানে নিহত হয়েছেন।

ইসলামিক রেভোল্যুশনারি গার্ড কোরের সেপাহ নিউজের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তেহরানে হামাস ইসলামিক রেজিস্ট্যান্সের রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান ইসমাইল হানিয়ার বাসভবনে হামলা চালানো হয়। এতে তিনি এবং তার এক দেহরক্ষী নিহত হয়েছেন। হামাসের পক্ষ থেকেও বুধবার এক বিবৃতিতে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

বুধবার এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, ইরানের রাজধানী তেহরানে হানিয়ার বাসস্থানে ‘ইহুদিবাদী গুপ্ত হামলার’ ঘটনা ঘটেছে। এতে ৬২ বছর বয়সী হামাসপ্রধান ও তার একজন দেহরক্ষী নিহত হয়েছেন।

ওই বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের ভাই, নেতা, মুজাহিদ ইসমাইল হানিয়া, আন্দোলনের প্রধান তেহরানে তার সদর দপ্তরে ইহুদিবাদী আগ্রাসনে নিহত হয়েছেন। তিনি ইরানের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন।

ইসমাইল আবদেল সালাম হানিয়ার ডাক নাম আবু আল-আবদ। তার জন্ম ১৯৬২ সালে গাজার শাতি শরণার্থী শিবিরে। হামাস আন্দোলনের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান এবং ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ সরকারের দশম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ইসমাইল হানিয়া।

গাজার আল-আজহার ইনস্টিটিউটে এবং পরে গাজার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন হানিয়া। সেখান থেকে আরবি সাহিত্যে স্নাতক পাস করেন তিনি।

১৯৮৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকাকালীন তিনি ইসলামিক ছাত্র ব্লকে যোগদান করেন। সংগঠনটিকে হামাসের অগ্রদূত হিসেবে মনে করা হয়।

১৯৮৯ সালে আটকের পর ইসরায়েল হানিয়াকে তিন বছর বন্দি রাখে। এরপর তাকে মারজ আল-জুহুর নামের ইসরায়েল এবং লেবাননের মধ্যকার একটি নো-ম্যানস-ল্যান্ডে নির্বাসিত করা হয়। সেখানে বেশ কয়েকজন হামাস নেতার সঙ্গে অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে অন্তত এক বছর কাটিয়েছিলেন তিনি।

নির্বাসন শেষে হানিয়া গাজায় ফিরে আসেন এবং ১৯৯৭ সালে হামাস আন্দোলনের আধ্যাত্মিক নেতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের অফিসের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন। এটি তার অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করে।

২০০৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি হামাস তাকে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করে এবং একই মাসের ২০ তারিখ তাকে নিযুক্ত করা হয়।

নির্বাসন শেষে হানিয়া গাজায় ফিরে আসেন এবং ১৯৯৭ সালে হামাস আন্দোলনের আধ্যাত্মিক নেতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের অফিসের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন। এটি তার অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে। ২০১৭ সালের ৬ মে থেকে তিনি হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

বিজনেস আওয়ার/ ৩১ জুলাই / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

হানিয়ার মৃত্যু বিশ্বকে আরও নিরাপদ করে তুলবে: ইসরায়েলি মন্ত্রী

পোস্ট হয়েছে : ০৩:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: ইরানে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া নিহত হওয়ার খবরে স্বস্তি জানিয়েছেন ইসরায়েলের এক মন্ত্রী। যদিও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে ইতোমধ্যেই দেশটির বেশ কিছু রাজনীতিবিদ তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

ইসরায়েলের ঐতিহ্য বিষয়কমন্ত্রী আমিচায় ইলিয়াহু সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে বলেন, হানিয়ার মৃত্যু বিশ্বকে আরও নিরাপদ করে তুলবে। তিনি বলেন, বিশ্ব থেকে কলুষতা দূর করার এটাই সঠিক উপায়। এদের জন্য আর কোনো শান্তি/আত্মসমর্পণ চুক্তি নয়, আর কোনো করুণা নেই।

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান হানিয়াকে ইরানের রাজধানী তেহরানে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানি গণমাধ্যম। ইরানের বিপ্লবী গার্ডস বাহিনী বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসমাইল হানিয়া তার এক দেহরক্ষীসহ তেহরানে নিহত হয়েছেন।

ইসলামিক রেভোল্যুশনারি গার্ড কোরের সেপাহ নিউজের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তেহরানে হামাস ইসলামিক রেজিস্ট্যান্সের রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান ইসমাইল হানিয়ার বাসভবনে হামলা চালানো হয়। এতে তিনি এবং তার এক দেহরক্ষী নিহত হয়েছেন। হামাসের পক্ষ থেকেও বুধবার এক বিবৃতিতে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

বুধবার এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, ইরানের রাজধানী তেহরানে হানিয়ার বাসস্থানে ‘ইহুদিবাদী গুপ্ত হামলার’ ঘটনা ঘটেছে। এতে ৬২ বছর বয়সী হামাসপ্রধান ও তার একজন দেহরক্ষী নিহত হয়েছেন।

ওই বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের ভাই, নেতা, মুজাহিদ ইসমাইল হানিয়া, আন্দোলনের প্রধান তেহরানে তার সদর দপ্তরে ইহুদিবাদী আগ্রাসনে নিহত হয়েছেন। তিনি ইরানের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন।

ইসমাইল আবদেল সালাম হানিয়ার ডাক নাম আবু আল-আবদ। তার জন্ম ১৯৬২ সালে গাজার শাতি শরণার্থী শিবিরে। হামাস আন্দোলনের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান এবং ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ সরকারের দশম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ইসমাইল হানিয়া।

গাজার আল-আজহার ইনস্টিটিউটে এবং পরে গাজার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন হানিয়া। সেখান থেকে আরবি সাহিত্যে স্নাতক পাস করেন তিনি।

১৯৮৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকাকালীন তিনি ইসলামিক ছাত্র ব্লকে যোগদান করেন। সংগঠনটিকে হামাসের অগ্রদূত হিসেবে মনে করা হয়।

১৯৮৯ সালে আটকের পর ইসরায়েল হানিয়াকে তিন বছর বন্দি রাখে। এরপর তাকে মারজ আল-জুহুর নামের ইসরায়েল এবং লেবাননের মধ্যকার একটি নো-ম্যানস-ল্যান্ডে নির্বাসিত করা হয়। সেখানে বেশ কয়েকজন হামাস নেতার সঙ্গে অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে অন্তত এক বছর কাটিয়েছিলেন তিনি।

নির্বাসন শেষে হানিয়া গাজায় ফিরে আসেন এবং ১৯৯৭ সালে হামাস আন্দোলনের আধ্যাত্মিক নেতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের অফিসের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন। এটি তার অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করে।

২০০৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি হামাস তাকে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করে এবং একই মাসের ২০ তারিখ তাকে নিযুক্ত করা হয়।

নির্বাসন শেষে হানিয়া গাজায় ফিরে আসেন এবং ১৯৯৭ সালে হামাস আন্দোলনের আধ্যাত্মিক নেতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের অফিসের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন। এটি তার অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে। ২০১৭ সালের ৬ মে থেকে তিনি হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

বিজনেস আওয়ার/ ৩১ জুলাই / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: