ঢাকা , শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভয়ে অফিস করছেন না বিএসইসি চেয়ারম্যান!

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ অগাস্ট ২০২৪
  • 222

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: চলতি সপ্তাহে একদিনও অফিস করেননি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। সদ্য ক্ষমতা থেকে বিতারিত আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন শিবলী রুবাইয়াত জনরোষের ভয়ে অফিস করছেন না বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। তিনি বাসায় আছেন নাকি অন্য কোথাও আত্মগোপনে গেছেন, সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি।

গত সোমবার (৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবল গণআন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। এর পরপর দেশের পুরো দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। বিক্ষুব্ধ জনতা আওয়ামীলীগ নেতা ও সরকার ঘনিষ্ট উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তাদের উপর চড়াও হচ্ছেন। পুলিশ, র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর শীর্ষ কর্তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেক কর্মকর্তা ভয়ে পদত্যাগ করছেন।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামও ভয়ে আছেন। তার মেয়াদে পুঁজিবাজারে ব্যাপক লুটতরাজ হয়েছে। তারসঙ্গে যোগসাজশ করে হাজার থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপের সালমান এফ রহমান। বাজারে লাগামহীন কারসাজি করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ফতুর করে দিয়েছেন আবুল খায়ের হিরো, এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমালসহ শিবলীঘনিষ্ট চক্র। পর্ষদ পুনর্গঠনের নামে বিভিন্ন কোম্পানিতে নিজের ঘনিষ্ট ব্যক্তিদের পরিচালক হিসেবে বসিয়ে নতুনভাবে লুটপাটের সুযোগ করে দেওয়া; ব্যবসা না করতে পেরে বন্ধ হয়ে যাওয়া কোম্পানিকে নিজের লোকদের হাতে তুলে দিয়ে সেগুলোকে পুনরায় বাজারে নিয়ে এসে বিনিয়োগকারীদের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ করে দেন তিনি।

তার বিরুদ্ধে টাকা পাচার এবং পাচারকারীদের সহায়তা করারও অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ সম্মেলন আয়োজনের অন্যতম লক্ষ্য ছিল এর আড়ালে টাকা পাচারের সুযোগ করে দেওয়া। তার উদ্যোগে সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জাপান, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে রোড শো বা বিনিয়োগ সম্মেলন হয়েছে।

মুখে বাজারে অনেক সংস্কার এবং বিদেশী বিনিয়োগ আনার চেষ্টার কথা বললেও বাজারের অবস্থা দিন দিন খারাপ হয়েছে। দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ফ্লোরপ্রাইস নামের কৃত্রিম ব্যবস্থায় বাজারের পতন ঠেকিয়ে রাখতে হয়েছে।সাম্প্রতিক সময়ে ভারত, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের মতো দেশের পুঁজিবাজারে মূল্যসূচকের বড় উল্লম্ফন হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে পুরো বিপরীত অবস্থা। গত সপ্তাহ পর্যন্ত বাজারে বড় দর পতন হয়েছে। বর্তমানে সূচকের অবস্থা ২০২২ সালেরও নিচে। আর এর পুরো দায় শিবলী রুবাইয়াতের প্রশ্রয়ে চলা লাগামহীন কারসাজি ও লুটপাট। তাই বিনিযোগকারীসহ স্টেকহোল্ডাররা তার উপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। এ ভয়ে তিনি আফিস করছেন না বলে জানা গেছে।

বিজনেস আওয়ার/ ০৭ আগস্ট/ এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ভয়ে অফিস করছেন না বিএসইসি চেয়ারম্যান!

পোস্ট হয়েছে : ০১:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ অগাস্ট ২০২৪

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: চলতি সপ্তাহে একদিনও অফিস করেননি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। সদ্য ক্ষমতা থেকে বিতারিত আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন শিবলী রুবাইয়াত জনরোষের ভয়ে অফিস করছেন না বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। তিনি বাসায় আছেন নাকি অন্য কোথাও আত্মগোপনে গেছেন, সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি।

গত সোমবার (৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবল গণআন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। এর পরপর দেশের পুরো দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। বিক্ষুব্ধ জনতা আওয়ামীলীগ নেতা ও সরকার ঘনিষ্ট উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তাদের উপর চড়াও হচ্ছেন। পুলিশ, র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর শীর্ষ কর্তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেক কর্মকর্তা ভয়ে পদত্যাগ করছেন।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামও ভয়ে আছেন। তার মেয়াদে পুঁজিবাজারে ব্যাপক লুটতরাজ হয়েছে। তারসঙ্গে যোগসাজশ করে হাজার থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপের সালমান এফ রহমান। বাজারে লাগামহীন কারসাজি করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ফতুর করে দিয়েছেন আবুল খায়ের হিরো, এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমালসহ শিবলীঘনিষ্ট চক্র। পর্ষদ পুনর্গঠনের নামে বিভিন্ন কোম্পানিতে নিজের ঘনিষ্ট ব্যক্তিদের পরিচালক হিসেবে বসিয়ে নতুনভাবে লুটপাটের সুযোগ করে দেওয়া; ব্যবসা না করতে পেরে বন্ধ হয়ে যাওয়া কোম্পানিকে নিজের লোকদের হাতে তুলে দিয়ে সেগুলোকে পুনরায় বাজারে নিয়ে এসে বিনিয়োগকারীদের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ করে দেন তিনি।

তার বিরুদ্ধে টাকা পাচার এবং পাচারকারীদের সহায়তা করারও অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ সম্মেলন আয়োজনের অন্যতম লক্ষ্য ছিল এর আড়ালে টাকা পাচারের সুযোগ করে দেওয়া। তার উদ্যোগে সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জাপান, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে রোড শো বা বিনিয়োগ সম্মেলন হয়েছে।

মুখে বাজারে অনেক সংস্কার এবং বিদেশী বিনিয়োগ আনার চেষ্টার কথা বললেও বাজারের অবস্থা দিন দিন খারাপ হয়েছে। দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ফ্লোরপ্রাইস নামের কৃত্রিম ব্যবস্থায় বাজারের পতন ঠেকিয়ে রাখতে হয়েছে।সাম্প্রতিক সময়ে ভারত, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের মতো দেশের পুঁজিবাজারে মূল্যসূচকের বড় উল্লম্ফন হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে পুরো বিপরীত অবস্থা। গত সপ্তাহ পর্যন্ত বাজারে বড় দর পতন হয়েছে। বর্তমানে সূচকের অবস্থা ২০২২ সালেরও নিচে। আর এর পুরো দায় শিবলী রুবাইয়াতের প্রশ্রয়ে চলা লাগামহীন কারসাজি ও লুটপাট। তাই বিনিযোগকারীসহ স্টেকহোল্ডাররা তার উপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। এ ভয়ে তিনি আফিস করছেন না বলে জানা গেছে।

বিজনেস আওয়ার/ ০৭ আগস্ট/ এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: