ঢাকা , শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সক্রিয় হতে শুরু করেছে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৪
  • 90

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারের বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল)-এর তথ্য অনুযায়ি, গত সাত দিনে শেয়ারবাজারে নতুন বিও হিসাব খোলা হয়েছে ৫ হাজার ৬৪৭টি। আর তিন কর্মদিবসে নিষ্ক্রিয় বিও হিসাবগুলোর মধ্য থেকে ৫ হাজার ৯৭৮টি সক্রিয় হয়েছে।

এর আগে গত ১১ আগস্ট শেয়ারবাজারে শেয়ার আছে এমন সক্রিয় বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ৮৮ হাজার ২৯৪টি। ১৪ আগস্ট লেনদেন শেষে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৯৪ হাজার ২৭২টিতে। নিষ্ক্রিয় বিও হিসাব সক্রিয় হতে শুরু করায় শেয়ারবাজারে শেয়ারশূন্য অর্থাৎ শেয়ার নেই এমন বিও হিসাবের সংখ্যা কমছে।

সিডিবিএলের তথ্য বলছে, ১১ আগস্ট বাজারে শেয়ারশূন্য বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ১৮ হাজার ৫২৩। ১৪ আগস্ট এই সংখ্যা কমে হয় ৩ লাখ ১৪ হাজার ১৭৬। সেই হিসাবে তিন কর্মদিবসে শেয়ারশূন্য বিও হিসাবের সংখ্যা কমেছে ৪ হাজার ৩৪৭।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন। তার পদত্যাগের পর টানা কয়েক দিন শেয়ারবাজারে বড় ধরনের উত্থান ঘটে।

গত ৬ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ৮ কর্মদিবসে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৬৭৪ পয়েন্ট। এই আট কর্মদিবসের মধ্যে পাঁচ কর্মদিবস সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। আর সূচক কমেছে তিন কর্মদিবস। পাঁচ কর্মদিবসে সূচক বেড়েছে ৮৭১ পয়েন্ট। আর তিন কর্মদিবসে সূচক কমেছে ১৯৭ পয়েন্ট। আট কর্মদিবসের উত্থান-পতন শেষ সূচকের বৃদ্ধি হয়েছে ৬৭৪ পয়েন্ট।

কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সূচক টানা বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যক্তিশ্রেণির ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হয়েছেন। পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণও বাড়তে শুরু করেছে। কারণ, কয়েক বছর ধরে বাজারে ভালো মৌলভিত্তির শেয়ারগুলো অবমূল্যায়িত অবস্থায় ছিল। এখন রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এসব শেয়ার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। তাতে বাজারের প্রতি ব্যক্তিশ্রেণির ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে। এর সাথে বাজারে ফিরতে শুরু করেছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত দুই বছরের বেশি দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রিই বেশি ছিল। এর অর্থ হলো-শেয়ারবাজারের প্রতি বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আস্থা পাচ্ছিলেন না। এর মূল কারণ হলো, দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাব।

বর্তমান রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরতে শুরু করেছে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উচ্চ মাত্রার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এখন দেশে রেমিট্যান্স বাড়বে, পোশাকপণ্যসহ রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে, যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের জিএপফি সুবিধা ফিরবে। এসবের ইতিবাচক প্রভাব শেয়ারবাজারেও পড়বে। এছাড়া, শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণও ধীরে ধীরে নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে-এমন প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।

বিজনেস আওয়ার/ ১৮ আগস্ট/ এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সক্রিয় হতে শুরু করেছে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা

পোস্ট হয়েছে : ০১:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৪

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারের বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল)-এর তথ্য অনুযায়ি, গত সাত দিনে শেয়ারবাজারে নতুন বিও হিসাব খোলা হয়েছে ৫ হাজার ৬৪৭টি। আর তিন কর্মদিবসে নিষ্ক্রিয় বিও হিসাবগুলোর মধ্য থেকে ৫ হাজার ৯৭৮টি সক্রিয় হয়েছে।

এর আগে গত ১১ আগস্ট শেয়ারবাজারে শেয়ার আছে এমন সক্রিয় বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ৮৮ হাজার ২৯৪টি। ১৪ আগস্ট লেনদেন শেষে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৯৪ হাজার ২৭২টিতে। নিষ্ক্রিয় বিও হিসাব সক্রিয় হতে শুরু করায় শেয়ারবাজারে শেয়ারশূন্য অর্থাৎ শেয়ার নেই এমন বিও হিসাবের সংখ্যা কমছে।

সিডিবিএলের তথ্য বলছে, ১১ আগস্ট বাজারে শেয়ারশূন্য বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ১৮ হাজার ৫২৩। ১৪ আগস্ট এই সংখ্যা কমে হয় ৩ লাখ ১৪ হাজার ১৭৬। সেই হিসাবে তিন কর্মদিবসে শেয়ারশূন্য বিও হিসাবের সংখ্যা কমেছে ৪ হাজার ৩৪৭।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন। তার পদত্যাগের পর টানা কয়েক দিন শেয়ারবাজারে বড় ধরনের উত্থান ঘটে।

গত ৬ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ৮ কর্মদিবসে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৬৭৪ পয়েন্ট। এই আট কর্মদিবসের মধ্যে পাঁচ কর্মদিবস সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। আর সূচক কমেছে তিন কর্মদিবস। পাঁচ কর্মদিবসে সূচক বেড়েছে ৮৭১ পয়েন্ট। আর তিন কর্মদিবসে সূচক কমেছে ১৯৭ পয়েন্ট। আট কর্মদিবসের উত্থান-পতন শেষ সূচকের বৃদ্ধি হয়েছে ৬৭৪ পয়েন্ট।

কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সূচক টানা বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যক্তিশ্রেণির ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হয়েছেন। পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণও বাড়তে শুরু করেছে। কারণ, কয়েক বছর ধরে বাজারে ভালো মৌলভিত্তির শেয়ারগুলো অবমূল্যায়িত অবস্থায় ছিল। এখন রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এসব শেয়ার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। তাতে বাজারের প্রতি ব্যক্তিশ্রেণির ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে। এর সাথে বাজারে ফিরতে শুরু করেছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত দুই বছরের বেশি দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রিই বেশি ছিল। এর অর্থ হলো-শেয়ারবাজারের প্রতি বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আস্থা পাচ্ছিলেন না। এর মূল কারণ হলো, দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাব।

বর্তমান রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরতে শুরু করেছে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উচ্চ মাত্রার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এখন দেশে রেমিট্যান্স বাড়বে, পোশাকপণ্যসহ রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে, যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের জিএপফি সুবিধা ফিরবে। এসবের ইতিবাচক প্রভাব শেয়ারবাজারেও পড়বে। এছাড়া, শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণও ধীরে ধীরে নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে-এমন প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।

বিজনেস আওয়ার/ ১৮ আগস্ট/ এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: