বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক মৌমিতা দেবনাথকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গসহ পুরো ভারত উত্তাল হয়ে উঠেছে। এই ঘটনায় ইতোমধ্যেই সঞ্জয় নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মৌমিতাকে ভয়াবহ নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার আগে মোট চার বার হাসপাতাল চত্বরে ঢুকেছিলেন ওই অভিযুক্ত।
অভিযোগ উঠেছে, ঠান্ডা মাথায় ধর্ষণ-খুনের পরেও এক নারীকে ফোন করে তাকেও বিরক্ত করেন সঞ্জয়। এই মামলার তদন্তে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
ঘটনার তদন্তকারী কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআইয়ের একটি সূত্রে মঙ্গলবার জানা গেছে, ঘটনার আগের দিন সকাল থেকে পরের দিন ভোর পর্যন্ত মোট চারবার আরজি করে যান সঞ্জয়। এর মধ্যে একবার গিয়েছিলেন তার এক স্বেচ্ছাসেবী বন্ধুর সঙ্গে।সেই বন্ধুর কোনো এক পরিচিত আর জি করে ভর্তি ছিলেন। তাকে দেখতে যাওয়ার বাহানায় বন্ধুর সঙ্গে হাসপাতালে ঢোকেন তিনি। মৌমিতা ধর্ষণ এবং খুন হওয়ার আগে আরও দুবার নানা অজুহাতে আর জি কর চত্বরে প্রবেশ করেন তিনি।
সিবিআই সূত্রে আরও জানা গেছে, ঘটনার পর এক ‘দিদি’কে ফোন করেন অভিযুক্ত। ‘দিদি’ বলে সম্বোধন করলেও তাকে ফোন করে হয়রানি করেন তিনি। ঘটনার আগের রাতের সিসিটিভি ফুটেজ বলছে, গত ৮ আগস্ট রাত ৮টার দিকে একবার হাসপাতাল থেকে বের হন সঞ্জয়। সেদিন চেতলার এক যৌনপল্লিতে যান তিনি। সেখান থেকে ফেরার পথে শম্ভুনাথ পণ্ডিত স্ট্রিটে আরও একটি মেয়েকে উত্ত্যক্ত করেন।
গত ৯ আগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চারতলায় সেমিনার হলে চিকিৎসকের রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করা হয়। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে সেদিন রাতেই সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিকে লালবাজারে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।
টানা জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। সঞ্জয় যে এবারই প্রথম এ ধরনের অপরাধ করেছের তা নয়। এর আগেও সে অন্য এক নারীকে হয়রানি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগে এক চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন থেকে এক নারীর ফোন নম্বর সংগ্রহ করেন সঞ্জয়।
প্রায় তিন মাস আগে ওই নারী তার ছেলেকে আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। সেখানেই সঞ্জয়ের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সঞ্জয় তাকে ওষুধ কিনতে সাহায্য করেছিলেন। একটি সূত্রের বরাত দিয়ে নিউজ১৮-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এরপরেই ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন সঞ্জয়।
ওই নারীর অভিযোগ, সঞ্জয় তাকে ক্রমাগত কল দিতে থাকেন। শুধু কল দিয়েই ক্ষান্ত হননি তিনি। বার বার ওই নারীকে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য হুমকি দিতে থাকেন।
সঞ্জয় একাধিক বিয়ে করেছেন বলেও জানা যায়। যদিও তার কোনো বিয়েই টেকেনি। পুলিশ ওয়েলফেয়ার বোর্ডে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার কারণে হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে তার সহজ প্রবেশাধিকার ছিল।
এ ধরনের স্বেচ্ছাসেবকদের চুক্তির ভিত্তিতে কর্মী হিসেবে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এবং দুর্যোগ প্রতিক্রিয়াসহ বিভিন্ন ধরণের কাজে পুলিশকে সহায়তা করার জন্য নিয়োগ করা হয়। তারা মাসিক প্রায় ১২ হাজার রুপির মতো বেতন পান।
বিজনেস আওয়ার/ ২০ আগস্ট / হাসান