ঢাকা , রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফুলকপি-বাঁধাকপি আড়তেই পচছে, বিপাকে ব্যবসায়ীরা

  • পোস্ট হয়েছে : ১৪ মিনিট আগে
  • 1

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বরিশালের পাইকারি বাজারে অন্যান্য সবজির বেচাবিক্রি ভালো হলেও তিন সবজি (ফুলকপি-বাঁধাকপি-শালগম) নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বহুমুখী সিটি মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। রোববার (১৯ জানুয়ারি) সকালে বরিশালের একমাত্র সবজির পাইকারি বাজার খ্যাত বহুমুখী সিটি মার্কেটের বিভিন্ন আড়ত ঘুরে বিষয়টি জানা গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এবার দেশের বিভিন্ন স্থানে সবজির উৎপাদন ভালো হওয়ায় দাম কমে এসেছে। এরমধ্যে ফুলকপি-বাঁধাকপি-শালগমের দাম এতটাই কমেছে যে বেচাবিক্রি না হওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই বস্তা ভরে ফেলে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেশ কিছু দিন ধরেই ফুলকপি ৫-৬ টাকা কেজি, বাঁধাকপি ৬-৭ টাকা কেজি ও শালগম ২-৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এবার এই সবজির সরবরাহ পর্যাপ্ত পরিমাণে হওয়ায় ক্রেতা মিলছে না। ফলে ক্রেতাদের আগ্রহ না থাকায় আড়তে থেকে বস্তায় পচে যাচ্ছে।

বহুমুখী সিটি মার্কেটের ব্যবসায়ী দুলাল বাণিজ্যালয়ের মালিক আমিন শুভ জানান, গত কয়েকদিন ধরেই ফুলকপি, বাঁধাকপি ও শালগম কিনছে না কেউ। এসব সবজি নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আড়তদারদের। এই তিন সবজি এখন বিক্রি হচ্ছে না বললেই চলে। ফলে বেশ কিছুদিন ধরেই এর লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।

সিটি মার্কেটের আরেক ব্যবসায়ী বাবুল বাণিজ্যালয়ের মালিক বাবুল হোসেন হাওলাদার বলেন, গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও শালগমের বিক্রি নেই। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে এসব সবজি আনা নেওয়ার গাড়ি ভাড়া পর্যন্ত উঠছে না।

তবে বাজারে অন্যান্য সবজির দাম রয়েছে ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে। এর মধ্যে টমেটো ২০-২২ টাকা কেজি, কাঁচামরিচ ২৫-৩০ টাকা কেজি, লাউ আকার ভেদে ১৫-২০ টাকা পিস, গাজর প্রকার ভেদে ১০-২০ টাকা কেজি, সিম প্রকার ভেদে ৫-১০ টাকা কেজি, বেগুন আকার ভেদে ১৫-২৫ টাকা কেজি, করোলা ২০-৩০ টাকা কেজি, মুলা ৩-৫ টাকা কেজি, পেঁপে ২০-৩০ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে এসব সবজি খুচরা বাজারে দ্বিগুণ দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

নগরীর বাংলাবাজার এলাকার খুচরা সবজি বিক্রেতা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, পাইকারি বাজার থেকে সবজি কেনার পর তা শ্রমিক দিয়ে আনতে হয়। এরপর বাজারে সবজি নিয়ে বসলে সেখানে আলাদা খরচ দিতে হয়। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিলের জন্য আলাদা টাকা দিতে হয়। অনেক সময় সবজি নষ্ট হলে লোকসান আমাদেরই গুনতে হয়। তাই খুচরা বাজারের সঙ্গে পাইকারি বাজারের তুলনা করে লাভ নেই।

তিনি আরও বলেন, শীতকালীন সবজির মৌসুম প্রায় শেষের দিকে। তাই ফুলকপি, বাঁধাকপি ও শালগমের প্রতি মানুষের চাহিদা কমেছে। তবুও এই তিন সবজি নামমাত্র রাখা হয়। তবে যা রাখা হয় তার অধিকাংশই থেকে যায়।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক অপূর্ব অধীকারী বলেন, অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি রোধে প্রায় প্রতিদিনই বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হচ্ছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

বিজনেস আওয়ার/ ১৯ জানুয়ারি / রহমান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ফুলকপি-বাঁধাকপি আড়তেই পচছে, বিপাকে ব্যবসায়ীরা

পোস্ট হয়েছে : ১৪ মিনিট আগে

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বরিশালের পাইকারি বাজারে অন্যান্য সবজির বেচাবিক্রি ভালো হলেও তিন সবজি (ফুলকপি-বাঁধাকপি-শালগম) নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বহুমুখী সিটি মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। রোববার (১৯ জানুয়ারি) সকালে বরিশালের একমাত্র সবজির পাইকারি বাজার খ্যাত বহুমুখী সিটি মার্কেটের বিভিন্ন আড়ত ঘুরে বিষয়টি জানা গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এবার দেশের বিভিন্ন স্থানে সবজির উৎপাদন ভালো হওয়ায় দাম কমে এসেছে। এরমধ্যে ফুলকপি-বাঁধাকপি-শালগমের দাম এতটাই কমেছে যে বেচাবিক্রি না হওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই বস্তা ভরে ফেলে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেশ কিছু দিন ধরেই ফুলকপি ৫-৬ টাকা কেজি, বাঁধাকপি ৬-৭ টাকা কেজি ও শালগম ২-৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এবার এই সবজির সরবরাহ পর্যাপ্ত পরিমাণে হওয়ায় ক্রেতা মিলছে না। ফলে ক্রেতাদের আগ্রহ না থাকায় আড়তে থেকে বস্তায় পচে যাচ্ছে।

বহুমুখী সিটি মার্কেটের ব্যবসায়ী দুলাল বাণিজ্যালয়ের মালিক আমিন শুভ জানান, গত কয়েকদিন ধরেই ফুলকপি, বাঁধাকপি ও শালগম কিনছে না কেউ। এসব সবজি নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আড়তদারদের। এই তিন সবজি এখন বিক্রি হচ্ছে না বললেই চলে। ফলে বেশ কিছুদিন ধরেই এর লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।

সিটি মার্কেটের আরেক ব্যবসায়ী বাবুল বাণিজ্যালয়ের মালিক বাবুল হোসেন হাওলাদার বলেন, গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও শালগমের বিক্রি নেই। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে এসব সবজি আনা নেওয়ার গাড়ি ভাড়া পর্যন্ত উঠছে না।

তবে বাজারে অন্যান্য সবজির দাম রয়েছে ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে। এর মধ্যে টমেটো ২০-২২ টাকা কেজি, কাঁচামরিচ ২৫-৩০ টাকা কেজি, লাউ আকার ভেদে ১৫-২০ টাকা পিস, গাজর প্রকার ভেদে ১০-২০ টাকা কেজি, সিম প্রকার ভেদে ৫-১০ টাকা কেজি, বেগুন আকার ভেদে ১৫-২৫ টাকা কেজি, করোলা ২০-৩০ টাকা কেজি, মুলা ৩-৫ টাকা কেজি, পেঁপে ২০-৩০ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে এসব সবজি খুচরা বাজারে দ্বিগুণ দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

নগরীর বাংলাবাজার এলাকার খুচরা সবজি বিক্রেতা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, পাইকারি বাজার থেকে সবজি কেনার পর তা শ্রমিক দিয়ে আনতে হয়। এরপর বাজারে সবজি নিয়ে বসলে সেখানে আলাদা খরচ দিতে হয়। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিলের জন্য আলাদা টাকা দিতে হয়। অনেক সময় সবজি নষ্ট হলে লোকসান আমাদেরই গুনতে হয়। তাই খুচরা বাজারের সঙ্গে পাইকারি বাজারের তুলনা করে লাভ নেই।

তিনি আরও বলেন, শীতকালীন সবজির মৌসুম প্রায় শেষের দিকে। তাই ফুলকপি, বাঁধাকপি ও শালগমের প্রতি মানুষের চাহিদা কমেছে। তবুও এই তিন সবজি নামমাত্র রাখা হয়। তবে যা রাখা হয় তার অধিকাংশই থেকে যায়।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক অপূর্ব অধীকারী বলেন, অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি রোধে প্রায় প্রতিদিনই বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হচ্ছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

বিজনেস আওয়ার/ ১৯ জানুয়ারি / রহমান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: