বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণের আগে ও পরে কী ঘটেছিল, সে বিষয়ে সম্প্রতি মুখ খুলেছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে সুইজারল্যান্ডের দাভোস সফরের সময় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের পডকাস্ট ‘রাখমান রিভিউ’-তে কথা বলেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এই সাক্ষাৎকারে উঠে আসে ছাত্র আন্দোলন, সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ এবং তার প্যারিস থেকে বাংলাদেশে ফেরার ঘটনা।
ড. ইউনূস জানান, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা। এরপর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাকে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার অনুরোধ জানান। তবে শুরুতে তিনি এতে রাজি হননি।
তিনি বলেন, আমি তখন প্যারিসে ছিলাম, অলিম্পিক আয়োজন নিয়ে কাজ করছিলাম। ঠিক সে সময়ই প্রথম ফোন আসে। আমি তখন হাসপাতালে ছোট্ট একটি অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি ছিলাম। ফোনে বলা হয়, তিনি (শেখ হাসিনা) চলে গেছেন, এখন আমাদের সরকার গঠন করতে হবে। অনুগ্রহ করে আমাদের জন্য সরকার গঠন করুন। আমি বললাম, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না এবং এতে জড়াতে চাই না।
কিন্তু আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাকে বারবার অনুরোধ জানান। তারা বলেন, দেশের এই সংকট মুহূর্তে তিনিই উপযুক্ত ব্যক্তি।‘আমি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করলাম, বাংলাদেশে অনেক ভালো নেতা আছেন, তোমরা কাউকে খুঁজে নাও। কিন্তু তারা বলল, না, আমরা কাউকে পাচ্ছি না। আপনাকেই আসতে হবে।’
শেষ পর্যন্ত ছাত্রদের আত্মত্যাগের কথা ভেবে রাজি হন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপরের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুই ঘণ্টা পর হাসপাতালের এক নার্স এসে আমাকে ফুলের তোড়া দিলো। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটি কেন? সে বললো, আপনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, আমরা জানতাম না। আমি তখনই প্রথম এ খবর জানতে পারি।
সকাল হলে ফরাসি সেনাবাহিনীর একটি দল ড. ইউনূসকে বিমানবন্দরে নিয়ে যায়। সেখান থেকে একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে চেপে তিনি ঢাকায় আসেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে পৌঁছানোর পর দেখি পুরো জাতি আমার অপেক্ষায়। বিমানবন্দরে নামার পরই আমাকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে হয়। আমি সবাইকে শান্তি, ঐক্য ও ধৈর্যের আহ্বান জানাই। এভাবেই আমার নতুন দায়িত্বের যাত্রা শুরু হয়।
বিজনেস আওয়ার/ ০১ ফেব্রুয়ারি / হাসান