ঢাকা , সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আইপিও মূল্যায়ন করবে স্টক এক্সচেঞ্জ, অনুমোদন দেবে বিএসইসি

  • পোস্ট হয়েছে : ১২:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫
  • 5

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: আগামী সপ্তাহে চূড়ান্ত হতে পারে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) এর খসড়া নীতিমালা। চলতি সপ্তাহে স্টক এক্সচেঞ্জ, মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের মতামত গ্রহণ করবে সংস্কার কমিটি। এসব মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত করে তা শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের কাছে পাঠানো হবে।

কমিটির একজন সদস্য জানায়, “আশা করছি চলতি সপ্তাহে অংশীজনদের সাথে আলোচনা শেষ হয়ে আগামী সপ্তাহেই আইপিও খসড়া চূড়ান্ত হবে।”

এদিকে, এই খসড়া নীতিমালায় আইপিও প্রক্রিয়ার বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। বিশেষত, অডিটর ও ইস্যু ম্যানেজারদের জবাবদিহি রাখার জন্য নতুন প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। অতীতে একেকটি প্রতিষ্ঠান একে অপরের ওপর দায় চাপিয়ে দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করতো, কিন্তু এখন প্রত্যেককে তাদের কাজের জন্য দায়ী থাকতে হবে। যদি কোনো কোম্পানির আর্থিক বিবরণীতে কোনো অনিয়ম দেখা যায়, তাহলে শুধু অডিটরকেই নয়, কোম্পানির বোর্ডও তার জন্য দায়ী থাকবে। এছাড়া, শেয়ারদর নির্ধারণ, লক-ইন পদ্ধতি, স্টক এক্সচেঞ্জের ক্ষমতা ইত্যাদি বিষয়ও খসড়া বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

নতুন বিধিমালায় বলা হচ্ছে, স্টক এক্সচেঞ্জ কোম্পানির তালিকাভুক্তির আবেদন মূল্যায়ন করবে। আর্থিক বিবরণীসহ অন্যান্য বিষয় পর্যালোচনা করে, স্টক এক্সচেঞ্জ তাদের মূল্যায়ন বিএসইসি এর কাছে পাঠাবে। বিএসইসি সেই মূল্যায়নের ভিত্তিতে কোম্পানির তালিকাভুক্তির অনুমোদন দেবে। বিএসইসি কোনো কোম্পানির তালিকাভুক্তির বিষয়ে নিজে কোনো আদেশ বা নির্দেশ দিতে পারবে না, বরং শুধুমাত্র স্টক এক্সচেঞ্জের মূল্যায়নের ভিত্তিতে অনুমোদন দিবে।

এছাড়া, আইপিও খসড়ায় শেয়ার দর নির্ধারণে নতুন কিছু সুপারিশ রয়েছে। বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ার বিক্রির আগে কিছু নতুন শর্ত জুড়ানো হয়েছে, যেগুলি শেয়ারের সঠিক মূল্য নির্ধারণে সহায়ক হবে। এছাড়া, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য শেয়ার বিক্রির সময় লক-ইন প্রথা পুনরায় চালু করার সুপারিশ করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে এক সদস্য জানান, “লক-ইন না থাকার কারণে শেয়ারদর কারসাজির মাধ্যমে বাড়ানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ প্রবণতা রোধ করতে লক-ইন প্রথা ফেরানো হচ্ছে।”

এছাড়া, শেয়ারবাজারে কোম্পানির তালিকাভুক্তিতে অনেক অনিয়ম হয়েছে বলে জানা গেছে। আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে দুর্বল কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হয়েছে এবং বিশেষ কিছু গোষ্ঠীকে সুবিধা দেয়ার অভিযোগও রয়েছে। সংস্কার কমিটি এসব বিষয় মাথায় রেখে আইপিও খসড়া প্রস্তুত করছে।

আগামী সপ্তাহে এই খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত হওয়ার পর, বিএসইসি তা পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

বিজনেস আওয়ার/ ১৬ মার্চ / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

আইপিও মূল্যায়ন করবে স্টক এক্সচেঞ্জ, অনুমোদন দেবে বিএসইসি

পোস্ট হয়েছে : ১২:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: আগামী সপ্তাহে চূড়ান্ত হতে পারে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) এর খসড়া নীতিমালা। চলতি সপ্তাহে স্টক এক্সচেঞ্জ, মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের মতামত গ্রহণ করবে সংস্কার কমিটি। এসব মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত করে তা শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের কাছে পাঠানো হবে।

কমিটির একজন সদস্য জানায়, “আশা করছি চলতি সপ্তাহে অংশীজনদের সাথে আলোচনা শেষ হয়ে আগামী সপ্তাহেই আইপিও খসড়া চূড়ান্ত হবে।”

এদিকে, এই খসড়া নীতিমালায় আইপিও প্রক্রিয়ার বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। বিশেষত, অডিটর ও ইস্যু ম্যানেজারদের জবাবদিহি রাখার জন্য নতুন প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। অতীতে একেকটি প্রতিষ্ঠান একে অপরের ওপর দায় চাপিয়ে দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করতো, কিন্তু এখন প্রত্যেককে তাদের কাজের জন্য দায়ী থাকতে হবে। যদি কোনো কোম্পানির আর্থিক বিবরণীতে কোনো অনিয়ম দেখা যায়, তাহলে শুধু অডিটরকেই নয়, কোম্পানির বোর্ডও তার জন্য দায়ী থাকবে। এছাড়া, শেয়ারদর নির্ধারণ, লক-ইন পদ্ধতি, স্টক এক্সচেঞ্জের ক্ষমতা ইত্যাদি বিষয়ও খসড়া বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

নতুন বিধিমালায় বলা হচ্ছে, স্টক এক্সচেঞ্জ কোম্পানির তালিকাভুক্তির আবেদন মূল্যায়ন করবে। আর্থিক বিবরণীসহ অন্যান্য বিষয় পর্যালোচনা করে, স্টক এক্সচেঞ্জ তাদের মূল্যায়ন বিএসইসি এর কাছে পাঠাবে। বিএসইসি সেই মূল্যায়নের ভিত্তিতে কোম্পানির তালিকাভুক্তির অনুমোদন দেবে। বিএসইসি কোনো কোম্পানির তালিকাভুক্তির বিষয়ে নিজে কোনো আদেশ বা নির্দেশ দিতে পারবে না, বরং শুধুমাত্র স্টক এক্সচেঞ্জের মূল্যায়নের ভিত্তিতে অনুমোদন দিবে।

এছাড়া, আইপিও খসড়ায় শেয়ার দর নির্ধারণে নতুন কিছু সুপারিশ রয়েছে। বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ার বিক্রির আগে কিছু নতুন শর্ত জুড়ানো হয়েছে, যেগুলি শেয়ারের সঠিক মূল্য নির্ধারণে সহায়ক হবে। এছাড়া, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য শেয়ার বিক্রির সময় লক-ইন প্রথা পুনরায় চালু করার সুপারিশ করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে এক সদস্য জানান, “লক-ইন না থাকার কারণে শেয়ারদর কারসাজির মাধ্যমে বাড়ানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ প্রবণতা রোধ করতে লক-ইন প্রথা ফেরানো হচ্ছে।”

এছাড়া, শেয়ারবাজারে কোম্পানির তালিকাভুক্তিতে অনেক অনিয়ম হয়েছে বলে জানা গেছে। আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে দুর্বল কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হয়েছে এবং বিশেষ কিছু গোষ্ঠীকে সুবিধা দেয়ার অভিযোগও রয়েছে। সংস্কার কমিটি এসব বিষয় মাথায় রেখে আইপিও খসড়া প্রস্তুত করছে।

আগামী সপ্তাহে এই খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত হওয়ার পর, বিএসইসি তা পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

বিজনেস আওয়ার/ ১৬ মার্চ / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: