ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান দিয়ে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হলেন ইমাম

  • পোস্ট হয়েছে : ০৯:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
  • 10

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে একটি মসজিদে সুদ-ঘুষ ও জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বয়ান দেওয়ায় মুসল্লিদের তোপের মুখে চাকরি ছেড়েছেন মসজিদের ইমাম হাফেজ মো. হামিদুল ইসলাম।

সম্প্রতি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের চিকনী সরকার পাড়া জামে মসজিদে জুমার নামাজের আগে বয়ান দিতে গিয়ে মুসল্লিদের কাছে লাঞ্ছিত হন ওই ইমাম। সোমবার (১৫ জুন) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন, জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান শুভ।

জানা যায়, প্রায় বছর চারেক আগে সাদুল্লাপুর উপজেলার চিকনী সরকার পাড়া জামে মসজিদে ইমামতির দায়িত্ব পান উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের চাঁদ করিম গ্রামের মজমল মিয়ার ছেলে হাফেজ মো. হামিদুল ইসলাম। গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে মুসল্লিদের উদ্দেশে জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বয়ান দেওয়ায় তাকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ আখ্যায়িত করে গালি দেওয়া হয়। মসজিদটির কিছু দায়িত্বশীল ব্যক্তি এই গালি দেন বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর কিছুদিন আগে সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে মসজিদে বয়ান দেন ইমাম হাফেজ মো. হামিদুল ইসলাম। এতেও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন কতিপয় মুসল্লি। তখন থেকে এই ইমামকে সরানোর জন্য বিভিন্ন অপকৌশল চালানো হয়। গেলো রমজানে তারাবির নামাজ পড়াতে না দেওয়াসহ অন্যান্য সামাজিক বিষয়েও ইমামকে বঞ্চিত করা হয়। এছাড়া মসজিদটির নাম পরিবর্তন করে চিকনী উত্তরপাড়া জামে মসজিদ নামে চালাচ্ছেন সেই দায়িত্ববান ব্যক্তিরা। সেইসঙ্গে ইমাম হামিদুল ইসলামের সঙ্গে অশোভনীয় আচরণের প্রতিবাদ করায় জাহাঙ্গীর আলম সরকার হারুন নামের এক মুসল্লিকে সমাজ ছাড়তে হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে হাফেজ মো. হামিদুল ইসলাম বলেন, চার বছর আগে সাদুল্লাপুর উপজেলার চিকনী সরকার পাড়া জামে মসজিদে ইমাম হিসেবে যোগদান করি। এরই ধারাবাহিকতায় মুসল্লিদের উদ্দেশে জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বয়ান দেওয়ায় আমাকে রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান দেওয়ায় আমার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তারা। মসজিদটির দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের এমন আচারণের কারণে আমি ইমামতি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছি।

চিকনী সরকার পাড়া জামে মসজিদ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ছামছুল সরকার বিদ্যুৎ বলেন, আমাদের ইমাম হাফেজ মো. হামিদুল ইসলামকে রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেওয়ার ঘটনাটি সত্য। ইমামের সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ানকে কেন্দ্র করে আর কোনো ঝামেলা না বাড়ানোই ভালো।

জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান শুভ বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে সংশ্লিষ্টরা আমাকে অবগত করেনি। লোকমুখে শুনেছি। ঘটনাটি খুবই ধিক্কারজনক।

বিজনেস আওয়ার/ ১৭ জুন / কাউছার

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান দিয়ে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হলেন ইমাম

পোস্ট হয়েছে : ০৯:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে একটি মসজিদে সুদ-ঘুষ ও জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বয়ান দেওয়ায় মুসল্লিদের তোপের মুখে চাকরি ছেড়েছেন মসজিদের ইমাম হাফেজ মো. হামিদুল ইসলাম।

সম্প্রতি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের চিকনী সরকার পাড়া জামে মসজিদে জুমার নামাজের আগে বয়ান দিতে গিয়ে মুসল্লিদের কাছে লাঞ্ছিত হন ওই ইমাম। সোমবার (১৫ জুন) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন, জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান শুভ।

জানা যায়, প্রায় বছর চারেক আগে সাদুল্লাপুর উপজেলার চিকনী সরকার পাড়া জামে মসজিদে ইমামতির দায়িত্ব পান উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের চাঁদ করিম গ্রামের মজমল মিয়ার ছেলে হাফেজ মো. হামিদুল ইসলাম। গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে মুসল্লিদের উদ্দেশে জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বয়ান দেওয়ায় তাকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ আখ্যায়িত করে গালি দেওয়া হয়। মসজিদটির কিছু দায়িত্বশীল ব্যক্তি এই গালি দেন বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর কিছুদিন আগে সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে মসজিদে বয়ান দেন ইমাম হাফেজ মো. হামিদুল ইসলাম। এতেও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন কতিপয় মুসল্লি। তখন থেকে এই ইমামকে সরানোর জন্য বিভিন্ন অপকৌশল চালানো হয়। গেলো রমজানে তারাবির নামাজ পড়াতে না দেওয়াসহ অন্যান্য সামাজিক বিষয়েও ইমামকে বঞ্চিত করা হয়। এছাড়া মসজিদটির নাম পরিবর্তন করে চিকনী উত্তরপাড়া জামে মসজিদ নামে চালাচ্ছেন সেই দায়িত্ববান ব্যক্তিরা। সেইসঙ্গে ইমাম হামিদুল ইসলামের সঙ্গে অশোভনীয় আচরণের প্রতিবাদ করায় জাহাঙ্গীর আলম সরকার হারুন নামের এক মুসল্লিকে সমাজ ছাড়তে হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে হাফেজ মো. হামিদুল ইসলাম বলেন, চার বছর আগে সাদুল্লাপুর উপজেলার চিকনী সরকার পাড়া জামে মসজিদে ইমাম হিসেবে যোগদান করি। এরই ধারাবাহিকতায় মুসল্লিদের উদ্দেশে জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বয়ান দেওয়ায় আমাকে রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান দেওয়ায় আমার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তারা। মসজিদটির দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের এমন আচারণের কারণে আমি ইমামতি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছি।

চিকনী সরকার পাড়া জামে মসজিদ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ছামছুল সরকার বিদ্যুৎ বলেন, আমাদের ইমাম হাফেজ মো. হামিদুল ইসলামকে রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেওয়ার ঘটনাটি সত্য। ইমামের সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ানকে কেন্দ্র করে আর কোনো ঝামেলা না বাড়ানোই ভালো।

জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান শুভ বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে সংশ্লিষ্টরা আমাকে অবগত করেনি। লোকমুখে শুনেছি। ঘটনাটি খুবই ধিক্কারজনক।

বিজনেস আওয়ার/ ১৭ জুন / কাউছার

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: