বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: শুষ্ক বাতাস থেকে পায়ের সুরক্ষায় জুতার বিকল্প নেই। প্রয়োজন অনুযায়ী বছরের একেক সময় আমাদের একেক ধরনের জুতা পরতে হয়। আবার তাদের যত্নেও রয়েছে ভিন্নতা। বর্ষার দিনে জুতা রক্ষা করা একটু কঠিন। পানিতে ভিজে গেলেই নরম হয়ে যেতে পারে, রং উঠে যেতে পারে বা ফেটে যেতে পারে। পুরোনো হোক আর নতুন যত্নের অভাবে জুতা সহজেই নষ্ট হয়ে যায়। তাই নিয়মিত জুতার যত্ন নিতে হবে তাহলে সেই জুতা বেশিদিন টিকবে।
আসুন জেনে নেওয়া যাক শখের জুতার যত্ন নেবেন যেভাবে-
স্নিকারের যত্ন
আমাদের দেশে স্নিকারের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি। বৃষ্টির পানি থেকে জুতাকে বাচাতে হলে এই দিনে ব্যবহার না করাই ভালো। যদি পরতেই হয় আর রাস্তায় বৃষ্টিতে কাদা-পানি লেগে যায়, তাহলে ভেজা জুতা থেকে যত দ্রুত সম্ভব অতিরিক্ত পানি মুছে ফেলতে হবে। অতিরিক্ত পানি মুছে ফেলতে হবে। এটি কাপড়ের তৈরি বলে সহজেই সাবান-পানি দিয়ে পরিষ্কার করা যায়। পরিষ্কার করার পর অবশ্যই ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে। ব্যবহারের পর বদ্ধ কেবিনেটে না রেখে বাতাস চলাচল করে এমন জায়গায় রাখতে হবে। এতে স্নিকারে দুর্গন্ধ হবে না।
চুলার তাপে না শুকানো
জুতা কখনোই সরাসরি চুলার তাপ বা ড্রায়ার দিয়ে শুকানো উচিত নয়। এতে চামড়াসহ জুতার বিভিন্ন উপাদানের ক্ষতি হয়। আকার নষ্ট হয়ে ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে। তাই তাপে শুকানোর চিন্তা একেবারেই বাদ দিতে হবে।
প্রতিদিন একই জুতা না পরা
প্রতিদিন একই জুতা না পরে এক জোড়া জুতা এক দিন পরপর পরাই উত্তম। এতে করে জুতার আর্দ্রতা দূর হবে। পরতে আরাম ও স্বস্তিদায়ক পাওয়া যাবে। প্রতিদিন পরা জুতার চেয়ে একদিন পর পর জুতা পরলে চার গুণ টেকসই হবে।
সুতি কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করা
চামড়ার জুতা ব্যবহার করার পর সুতি কাপড় দিয়ে মুছে রাখুন। পানি এবং রোদ দুটোই লেদারের জুতার জন্য ক্ষতিকর। প্রতিবার ব্যবহারের পর নরম সুতি কাপড় দিয়ে মুছে রাখুন।
কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে রাখা
চামড়ার জুতা বেশিদিন বদ্ধ জায়গায় রাখলে রং নষ্ট হয়ে যায়। আবার কিছু ক্ষেত্রে চামড়া উঠে যেতে পারে। তাই চামড়া বা কৃত্রিম চামড়া জাতীয় জুতা আলো-বাতাস চলাচল করে এমন জায়গায় সুতি কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে রাখলে ভালো থাকবে বেশি দিন।
নিয়মিত পালিশ করা
জুতা বেশিদিন ভালো রাখতে হলে নিয়মিত ভালো মানের ক্রিম ও ব্রাশ দিয়ে পালিশ করতে হবে। সেটা ঘরে করতে পারেন কিংবা চর্মকারের কাছে করতে পারেন। ঘরে পালিশ করার সময়ে ব্রাশে সামান্য পেট্রোলিয়াম জেলি মিশিয়ে নিন। এতে জুতার রং দীর্ঘস্থায়ী হবে।
দুর্গন্ধ কমাতে
পা বন্ধ জুতায় প্রায়ই বাজে গন্ধ হয়। দুর্গন্ধ কমাতে ব্যবহারের পর জুতার ভেতর খানিকটা খাবার সোডা ছিটিয়ে খোলা জায়গায় রাখুন। পরদিন ব্যবহারের সময় ঝেড়ে নিন। দুর্গন্ধ থাকবে না। এছাড়া দুর্গন্ধ দূর করতে ভিনেগার বা এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। ছোট সুতি কাপড় অল্প ভিনেগারে ভিজিয়ে জুতার ভেতরটা ভালো করে মুছে নিন। কাগজের বল বানিয়ে জুতা শুকালেও সেই কাগজের বলে দু-তিন ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল যোগ করলে আপনার জুতাজোড়া অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্গন্ধ থেকে বেচে যাবে।
জুতার দাগ দূর করতে
চামড়ার জুতায় দাগ লাগলে সামান্য ঠান্ডা পানি ও ভিনেগার মিশিয়ে নিন। পাতলা কাপড় সেই পানিতে ভিজিয়ে দাগের ওপর ঘষুন। দাগ চলে যাবে।
জুতার লম্বা ভাঁজ দূর করতে
অনেকদিন ব্যবহার করলে জুতার ওপর লম্বা লম্বা ভাঁজ পড়ে যায়। এক্ষেত্রে ভাঁজের ওপর জুতার রঙের নেইল পলিশ লাগিয়ে দিন। ভাঁজ আর বোঝা যাবে না।
হিল জুতার যত্ন
হিল জুতা কেনার পর পরই মুচির দোকান থেকে হিলের নিচে অতিরিক্ত একটা রাবার সোল লাগিয়ে নিলে অনেকদিন ভালো থাকবে। প্রতিবার ব্যবহারের পর একটি নরম কাপড় বা ব্রাশ দিয়ে জুতার উপরিভাগ এবং হিল পরিষ্কার করুন। যদি ময়লা বেশি থাকে, তাহলে হালকা গরম পানি এবং মাইল্ড সাবান ব্যবহার করতে পারেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে যে, জুতা যেন খুব বেশি ভিজে না যায়। এছাড়া দাওয়াত বা অনুষ্ঠানে পরার জন্য তুলে রাখা জুতার ভেতরে খবরের কাগজ গুঁজে রাখুন। জুতার আকৃতি ভালো থাকবে।
বিজনেস আওয়ার/ ১৯ জুলাই / হাসান