ঢাকা , শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষণায় শেয়ারবাজারে বাড়তি প্রাণসঞ্চার

  • পোস্ট হয়েছে : ২১ মিনিট আগে
  • 2

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বিদায়ী সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণায় নতুন গতি লাভ করেছে। এ সময়ে সূচক ও লেনদেন উভয়ই ঊর্ধ্বমুখী ছিল, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশাবাদ তৈরি করেছে।

সপ্তাহজুড়ে লেনদেনের চিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ব্যাংক খাতে ৪৬২ কোটি ৭ লাখ টাকা, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ৪২৯ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং বস্ত্র খাতে ৩৭৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। এই তিনটি খাতে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৬৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংক স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) বা রিভার্স রেপো হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমানোর ঘোষণা দেয়ায় বাজারে বাড়তি প্রাণসঞ্চার ঘটে। এর পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি কমার সংকেত এবং প্রধান নীতিগত হার বা ওভারনাইট রেপো হার কমানোর প্রত্যাশাও বিনিয়োগকারীদের ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখতে সহায়তা করেছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬৪ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৩২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ ২৮ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৩৭ পয়েন্টে এবং শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ১৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১২০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৪টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে ২৯০টির দর বেড়েছে, ৮০টির কমেছে এবং ২৪টির অপরিবর্তিত ছিল। ১৯টির কোনো লেনদেন হয়নি।

আলোচ্য সপ্তাহে সূচক বৃদ্ধিতে ব্র্যাক ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মা, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ এবং খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে।

ডিএসইতে গত সপ্তাহে মোট ৩ হাজার ৪০৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে, যা আগের সপ্তাহের ২ হাজার ৫৪৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকার তুলনায় ৭.১৪ শতাংশ বেশি।

খাতভিত্তিক লেনদেনে ব্যাংক খাতের আধিপত্য ছিল স্পষ্ট, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৩.৫৬ শতাংশ দখল করে শীর্ষে অবস্থান করছে। এরপরে রয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাত (১২.৬০ শতাংশ), বস্ত্র খাত (১১.০৩ শতাংশ), খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত (৯.৫০ শতাংশ) এবং প্রকৌশল খাত (৯.৩৩ শতাংশ)।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে সব খাতের শেয়ারেই ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এর মধ্যে কাগজ ও মুদ্রণ খাত ৬.২৭ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন নিয়ে শীর্ষে ছিল। এরপর আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে ৫.৩৬ শতাংশ, পাট খাতে ৫.১৮ শতাংশ, জীবন বীমা খাতে ৪.৩৫ শতাংশ এবং সাধারণ বীমা খাতে ২.৯৭ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন দেখা গেছে।

দেশের আরেক শেয়ারবাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) ইতিবাচক ধারা বজায় ছিল। সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১.৭৯ শতাংশ বেড়ে ১৪ হাজার ৩৩০ পয়েন্টে এবং সিএসসিএক্স সূচক ১.৭০ শতাংশ বেড়ে ৮ হাজার ৭৪৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তবে গত সপ্তাহে সিএসইতে মোট ৩০ কোটি ৬৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, যা আগের সপ্তাহের ৭৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকার তুলনায় কম। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৪১টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ২৩৭টির দর বেড়েছে, ৭৫টির কমেছে এবং ২৯টির অপরিবর্তিত ছিল।

বিজনেস আওয়ার/ ১৯ জুলাই / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষণায় শেয়ারবাজারে বাড়তি প্রাণসঞ্চার

পোস্ট হয়েছে : ২১ মিনিট আগে

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বিদায়ী সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণায় নতুন গতি লাভ করেছে। এ সময়ে সূচক ও লেনদেন উভয়ই ঊর্ধ্বমুখী ছিল, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশাবাদ তৈরি করেছে।

সপ্তাহজুড়ে লেনদেনের চিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ব্যাংক খাতে ৪৬২ কোটি ৭ লাখ টাকা, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ৪২৯ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং বস্ত্র খাতে ৩৭৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। এই তিনটি খাতে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৬৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংক স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) বা রিভার্স রেপো হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমানোর ঘোষণা দেয়ায় বাজারে বাড়তি প্রাণসঞ্চার ঘটে। এর পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি কমার সংকেত এবং প্রধান নীতিগত হার বা ওভারনাইট রেপো হার কমানোর প্রত্যাশাও বিনিয়োগকারীদের ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখতে সহায়তা করেছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬৪ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৩২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ ২৮ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৩৭ পয়েন্টে এবং শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ১৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১২০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৪টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে ২৯০টির দর বেড়েছে, ৮০টির কমেছে এবং ২৪টির অপরিবর্তিত ছিল। ১৯টির কোনো লেনদেন হয়নি।

আলোচ্য সপ্তাহে সূচক বৃদ্ধিতে ব্র্যাক ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মা, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ এবং খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে।

ডিএসইতে গত সপ্তাহে মোট ৩ হাজার ৪০৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে, যা আগের সপ্তাহের ২ হাজার ৫৪৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকার তুলনায় ৭.১৪ শতাংশ বেশি।

খাতভিত্তিক লেনদেনে ব্যাংক খাতের আধিপত্য ছিল স্পষ্ট, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৩.৫৬ শতাংশ দখল করে শীর্ষে অবস্থান করছে। এরপরে রয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাত (১২.৬০ শতাংশ), বস্ত্র খাত (১১.০৩ শতাংশ), খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত (৯.৫০ শতাংশ) এবং প্রকৌশল খাত (৯.৩৩ শতাংশ)।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে সব খাতের শেয়ারেই ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এর মধ্যে কাগজ ও মুদ্রণ খাত ৬.২৭ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন নিয়ে শীর্ষে ছিল। এরপর আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে ৫.৩৬ শতাংশ, পাট খাতে ৫.১৮ শতাংশ, জীবন বীমা খাতে ৪.৩৫ শতাংশ এবং সাধারণ বীমা খাতে ২.৯৭ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন দেখা গেছে।

দেশের আরেক শেয়ারবাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) ইতিবাচক ধারা বজায় ছিল। সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১.৭৯ শতাংশ বেড়ে ১৪ হাজার ৩৩০ পয়েন্টে এবং সিএসসিএক্স সূচক ১.৭০ শতাংশ বেড়ে ৮ হাজার ৭৪৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তবে গত সপ্তাহে সিএসইতে মোট ৩০ কোটি ৬৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, যা আগের সপ্তাহের ৭৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকার তুলনায় কম। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৪১টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ২৩৭টির দর বেড়েছে, ৭৫টির কমেছে এবং ২৯টির অপরিবর্তিত ছিল।

বিজনেস আওয়ার/ ১৯ জুলাই / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: