বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: এবার এনআরসি(জাতীয় নাগরিক পঞ্জি) আতঙ্কে কলকাতায় আত্মহত্যা করেছেন এক ব্যক্তি। এনআরসি(জাতীয় নাগরিক পঞ্জি) আতঙ্কে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম আত্মহত্যার ঘটনা এটি। স্থানীয় সময় রোববার (৩ আগষ্ট) দক্ষিণ কলকাতার আনন্দপল্লীর বাসিন্দা ৫৮ বছর বয়সী দিলীপ সাহার ঝুলন্ত মরদেহ তার নিজ বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়।
তার পরিবারের সদস্যদের দাবি, সম্প্রতি বিজেপি শাসিত রাজ্য দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান, গুজরাট এবং আসামে এনআরসি(জাতীয় নাগরিক পঞ্জি) নিয়ে হুলিয়া জারি করার পর আতঙ্কে ভুগছিলেন দিলীপ সাহা। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ভয় পেয়েছিল যে তাকে হয়তো বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কলকাতার বাসা থেকে বেরোনোও একপ্রকার বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। শুধু টেলিভিশনে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নিয়ে ক্রমাগত খবর দেখতেন। আর সেই আতঙ্ক থেকেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন দিলীপ সাহা।
তার এক স্বজন জানান, দিলীপ একসময় বাংলাদেশের নবাবগঞ্জের বাসিন্দা ছিলেন। ১৯৭২ সালে ওপার বাংলা থেকে কলকাতায় চলে আসেন। কলকাতায় আসার পর প্রথমে তিনি রিজেন্ট পার্ক এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। পরে আনন্দপল্লীতে নিজের জমি কিনে বাড়ি বানিয়ে সেখানে চলে আসেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকালে দিলীপ সাহার স্ত্রী আরতি সাহা ঘরের দরজা বন্ধ থাকায় বার বার ডাকাডাকি করলেও কোনো সাড়া মেলেনি। এরপর প্রতিবেশীরা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দিলীপ সাহার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। থানায় খবর দেওয়ার পর পরই ঘটনাস্থলে পৌঁছে দিলীপ সাহার নিথর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
আরতি সাহা জানান,এনআরসি (জাতীয় নাগরিক পঞ্জি) নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে আতঙ্কে ছিলেন দিলীপ সাহা। সে আতঙ্গে ছিল যে, তাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রাখা হবে।
দিলীপ সাহার স্বজন তাপস কর বলেন, সারাদেশে বিজেপি এনআরসির একটা আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। তাদের কারণেই এই ঘটনাটি ঘটেছে। তার মাথায় সব সময় একই কথা ঘুরতো হয়তো তার কাগজপত্র ঠিক নেই। তাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দেবে, পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে। এ বিষয় নিয়েও আমাদের সঙ্গে অনেকবার কথা বলেছে। সে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। এসব নিয়ে সবসময় আতঙ্কে থাকতেন।
এরই মধ্যে পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। বিষয়টি আদৌ এনআরসির সঙ্গে সম্পৃক্ত কি না তাও খতিয়ে দেখছে কলকাতা পুলিশ। কিছুদিন আগে উত্তরবঙ্গে কোচবিহারের তিনজন এবং আলিপুরদুয়ারের একজনের কাছে এনআরসি (জাতীয় নাগরিক পঞ্জি) নোটিশ আসে। আসামের ট্রাইব্যুনাল কোর্টের কাছে তাদের ভারতীয় নথি জমা দিতে বলা হয়েছে।
আওয়ার/ ০৪ আগস্ট / হাসান