ঢাকা , বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাজার কোটি টাকার বেশি পাচার হওয়া ১১টি কেইস চিহ্নিত হয়েছে : অর্থ উপদেষ্টা

  • পোস্ট হয়েছে : ২০ মিনিট আগে
  • 2

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, দেশে থেকে বিদেশে পাচার হওয়া ১১টি বৃহৎ এবং ২০০ কোটি টাকার বেশি ট্রানজেকশন যুক্ত ১০১টি কেইস চিহ্নিত হয়েছে। তিনি বলেন, যেহেতু টাকা বাইরে চলে গেছে, সেটি আর ফিরিয়ে আনা সহজ নয়, তবে লিগ্যাল পথে এটি সম্ভব। পাচারকারীরা বিশ্বের শীর্ষ আইনজীবীদের নিয়োগ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করতে আমাদেরও তেমনি শক্তিশালী আইনজীবী প্রয়োজন।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার জন্য কিছু উদ্যোগ নেয়া হলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। এই প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সব কিছু দৃশ্যমান হবে, তবে সেটিতে সময় লাগে। তিনি জানান, ১১টি সেনসিটিভ কেইস চিহ্নিত করা হয়েছে এবং পাচারকারীরা অত্যন্ত বুদ্ধিমানভাবে টাকা লেয়ারিং পদ্ধতিতে পাচার করছে, যা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে না। তবে, কারা এটি করছে এবং কোথায় টাকা গেছে, তা চিহ্নিত করা হয়েছে, যা একটি অগ্রগতি।

তিনি আরও বলেন, বিদেশে টাকা চলে যাওয়ার কারণে সেটি ফিরিয়ে আনা সহজ কাজ নয়। লিগ্যাল প্রক্রিয়ায় টাকা ফেরত আনা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক একা টাকা ফেরত আনতে সক্ষম নয়। এক ফিলিপাইনে টাকা ফেরত আনার ক্ষেত্রে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। এমএলএস (মিউচুয়াল লিগাল অ্যাসিস্ট্যান্স) ব্যবস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশের চেষ্টা চলছে, তবে এতে অনেক ধরনের ফরম পূরণ করতে হয়। তিনি উদাহরণ হিসেবে বলেন, লন্ডনে এক ব্যক্তির বাড়ি জব্দ করা হয়েছে, সিঙ্গাপুরে আইনজীবী দৌড়ঝাঁপ করছেন। বিশ্বের সেরা আইনজীবীদের সঙ্গে টেক্কা দিতে হলে আমাদেরও সেরকম আইনজীবী প্রয়োজন।

অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, টাকা ফেরত আনার চেষ্টা চলছে, তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি সতর্কবার্তা হয়ে থাকবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ এই ধরনের পাচার করতে না পারে। তিনি জানান, পরবর্তী সরকারের কাছে যদি এটি নিয়ে উদ্যোগ নেয়া হয়, তবে এতে আরও ফলপ্রসূ হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, “আইএমএফ থেকে ১.৩ মিলিয়ন ডলার আনার জন্য আমাদের দেশীয় সম্পদ এবং আইনের দুর্বলতা একসাথে কাজ করছে, তবে বিদেশ থেকে টাকা ফিরিয়ে আনার জন্য আইনগত বাধা রয়েছে।”

তিনটি বড় ধরনের জায়গায়, যেমন দুবাই, সিঙ্গাপুর, বারবাডোজ এবং অ্যান্টিগুয়া, বিদেশে পাচার হওয়া টাকা চিহ্নিত হয়েছে। কিন্তু এসব স্থান থেকে টাকা ফেরত আনা আরও কঠিন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “২০০ কোটি টাকার বেশি ট্রানজেকশন হওয়া ১০১টি কেইস চিহ্নিত হয়েছে, এর মধ্যে কিছু কেইসে আপনাদের পরিচিত ব্যক্তি থাকতে পারে। এবং ১১টি বড় কেইসে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে।”

এ সময় অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক এবং ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।

বিজনেস আওয়ার/ ১৩ আগস্ট / কাওছার

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

হাজার কোটি টাকার বেশি পাচার হওয়া ১১টি কেইস চিহ্নিত হয়েছে : অর্থ উপদেষ্টা

পোস্ট হয়েছে : ২০ মিনিট আগে

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, দেশে থেকে বিদেশে পাচার হওয়া ১১টি বৃহৎ এবং ২০০ কোটি টাকার বেশি ট্রানজেকশন যুক্ত ১০১টি কেইস চিহ্নিত হয়েছে। তিনি বলেন, যেহেতু টাকা বাইরে চলে গেছে, সেটি আর ফিরিয়ে আনা সহজ নয়, তবে লিগ্যাল পথে এটি সম্ভব। পাচারকারীরা বিশ্বের শীর্ষ আইনজীবীদের নিয়োগ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করতে আমাদেরও তেমনি শক্তিশালী আইনজীবী প্রয়োজন।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার জন্য কিছু উদ্যোগ নেয়া হলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। এই প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সব কিছু দৃশ্যমান হবে, তবে সেটিতে সময় লাগে। তিনি জানান, ১১টি সেনসিটিভ কেইস চিহ্নিত করা হয়েছে এবং পাচারকারীরা অত্যন্ত বুদ্ধিমানভাবে টাকা লেয়ারিং পদ্ধতিতে পাচার করছে, যা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে না। তবে, কারা এটি করছে এবং কোথায় টাকা গেছে, তা চিহ্নিত করা হয়েছে, যা একটি অগ্রগতি।

তিনি আরও বলেন, বিদেশে টাকা চলে যাওয়ার কারণে সেটি ফিরিয়ে আনা সহজ কাজ নয়। লিগ্যাল প্রক্রিয়ায় টাকা ফেরত আনা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক একা টাকা ফেরত আনতে সক্ষম নয়। এক ফিলিপাইনে টাকা ফেরত আনার ক্ষেত্রে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। এমএলএস (মিউচুয়াল লিগাল অ্যাসিস্ট্যান্স) ব্যবস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশের চেষ্টা চলছে, তবে এতে অনেক ধরনের ফরম পূরণ করতে হয়। তিনি উদাহরণ হিসেবে বলেন, লন্ডনে এক ব্যক্তির বাড়ি জব্দ করা হয়েছে, সিঙ্গাপুরে আইনজীবী দৌড়ঝাঁপ করছেন। বিশ্বের সেরা আইনজীবীদের সঙ্গে টেক্কা দিতে হলে আমাদেরও সেরকম আইনজীবী প্রয়োজন।

অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, টাকা ফেরত আনার চেষ্টা চলছে, তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি সতর্কবার্তা হয়ে থাকবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ এই ধরনের পাচার করতে না পারে। তিনি জানান, পরবর্তী সরকারের কাছে যদি এটি নিয়ে উদ্যোগ নেয়া হয়, তবে এতে আরও ফলপ্রসূ হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, “আইএমএফ থেকে ১.৩ মিলিয়ন ডলার আনার জন্য আমাদের দেশীয় সম্পদ এবং আইনের দুর্বলতা একসাথে কাজ করছে, তবে বিদেশ থেকে টাকা ফিরিয়ে আনার জন্য আইনগত বাধা রয়েছে।”

তিনটি বড় ধরনের জায়গায়, যেমন দুবাই, সিঙ্গাপুর, বারবাডোজ এবং অ্যান্টিগুয়া, বিদেশে পাচার হওয়া টাকা চিহ্নিত হয়েছে। কিন্তু এসব স্থান থেকে টাকা ফেরত আনা আরও কঠিন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “২০০ কোটি টাকার বেশি ট্রানজেকশন হওয়া ১০১টি কেইস চিহ্নিত হয়েছে, এর মধ্যে কিছু কেইসে আপনাদের পরিচিত ব্যক্তি থাকতে পারে। এবং ১১টি বড় কেইসে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে।”

এ সময় অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক এবং ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।

বিজনেস আওয়ার/ ১৩ আগস্ট / কাওছার

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: