বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম বলেছেন, পিএসসির নতুন ‘সার্কুলার সিস্টেম’ ব্যবহার করে প্রতি এক বছরে একটি বিসিএস পরীক্ষা সম্পন্ন করা সম্ভব। তবে এই লক্ষ্য অর্জনে কমিশনের প্রশাসনিক এবং আর্থিক স্বাধীনতার অভাবই মূল প্রতিবন্ধকতা বলে তিনি মনে করেন।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের রূপান্তর: অর্জন, চ্যালেঞ্জ ও সামনে এগোনোর পথ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
পিএসসি চেয়ারম্যান তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, কমিশনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এক বছরের মধ্যে বিসিএস সম্পন্ন করা। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তারা একটি নতুন পদ্ধতি, যার নাম ‘সার্কুলার সিস্টেম অব ইভালুয়েশন’, ব্যবহার করছেন। এর মাধ্যমে পরীক্ষার ফলাফল দ্রুত প্রকাশ করা সম্ভব হবে। তিনি জানান, তারা পরীক্ষামূলকভাবে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে সফল হয়েছেন এবং এখন পুরোদমে এটি চালু করা হয়েছে।
জটিলতার কথা উল্লেখ করে পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, এই পদ্ধতির জন্য একটি বিধি পরিবর্তনের প্রয়োজন ছিল। সেই বিধি পিএসসি থেকে প্রস্তাব আকারে অর্থ বিভাগে পাঠানো হয়। চার মাস হয়েছে, কিন্তু এখনো অনুমোদিত বিধিটি আসেনি। কমিশন অনেক গতিশীলভাবে কাজ করতে পারত যদি বিধি করার স্বাধীনতা থাকত।
এক বছরে বিসিএস শেষ করার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট পথনকশাও তুলে ধরেন পিএসসি চেয়ারম্যান। তিনি জানান, প্রতি বছর ১লা নভেম্বর বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে এবং এর ঠিক এক বছর পর অর্থাৎ ৩০শে অক্টোবরের মধ্যে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে।
অনুষ্ঠানে পিএসসির সদস্য চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস তাদের কর্মপরিকল্পনা এবং চ্যালেঞ্জগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এসময় তিনি বলেন, পরিচালনগত স্বায়ত্তশাসন অত্যন্ত জরুরি। তবে আর্থিক স্বায়ত্তশাসনের জন্য কতগুলো বিধি ও নিয়মকানুন মানতে হবে। আর্থিক স্বায়ত্তশাসন দিতে গেলে বহু চিন্তাভাবনা করতে হবে। তবে পিএসসিকে শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল পিএসসির সংস্কারকে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বলেন, এখানে যেন যোগ্য মানুষেরা নিয়োগ পায়। আর একটি বিসিএস এক বছরের মধ্যে অবশ্যই শেষ হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।
পিএসসির মাধ্যমে নিজেদের সময়কার নিয়োগ ও কর্মজীবনের প্রসঙ্গ টেনে সাবেক আমলা ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, এখন এসে সরকারি কর্মচারীদের যে মান দেখি, অত্যন্ত দুঃখবোধ হয়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান, পিএসসি সদস্য এম সোহেল রহমান ও সচিব মো. সানোয়ার জাহান ভুঁইয়া, সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের উপ-মিশন প্রধান ডিপেক এলমার, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিজনেস আওয়ার/ ১০ সেপ্টেম্বর / কাওছার