বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: গাজা সিটিতে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার কারণে হুমকির মুখে পড়েছে জিম্মিদের জীবন। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, গাজা সিটির সাবরা ও তাল আল-হাওয়া এলাকায় ইসরায়েলি সেনাদের ‘নৃশংস সামরিক অভিযান ও তীব্র হামলার’ পর তাদের যোদ্ধাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
এসব যোদ্ধারা ওমরি মিরান ও মাতান আংগ্রেস্ট নামে দুই ইসরায়েলি জিম্মির দায়িত্বে ছিল। হামাসের সামরিক শাখা কাসেম ব্রিগেড বলছে, বন্দিদের জীবন এখন গুরুতর ঝুঁকিতে এবং ইসরায়েলকে অবিলম্বে রোড-৮ এর দক্ষিণে সরে গিয়ে ২৪ ঘণ্টার জন্য সব ধরনের বিমান হামলা বন্ধ করতে হবে যেন বন্দিদের উদ্ধার করা যায়।
হামাস চলতি মাসে গাজায় আটক বন্দিদের ‘শেষ ছবি’ প্রকাশ করে ইসরায়েলি সেনাদের হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিল। ইসরায়েল জানিয়েছে, গাজায় এখনো ৪৮ জন বন্দি রয়েছে। এর মধ্যে ২০ জন জীবিত। তবে আন্তর্জাতিক মহলের গণহত্যার অভিযোগ ও দেশটির নাগরিকদের বিক্ষোভ সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ডানপন্থী সরকার যুদ্ধ থামাতে রাজি হয়নি।
হামাসের রাজনৈতিক শাখা জানিয়েছে, কাতার ও মিশরের পক্ষ থেকে কোনো নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তারা পায়নি, যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কয়েক সপ্তাহ ধরে একাধিকবার যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। হামাস আরও দাবি করেছে, ইসরায়েল গত ৯ সেপ্টেম্বর দোহায় হামাস নেতাদের হত্যাচেষ্টার পর আলোচনা স্থগিত হয়ে গেছে। তবে তারা বলছে, জাতীয় অধিকার সংরক্ষিত থাকে এমন যে কোনো প্রস্তাব ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করতে প্রস্তুত।
ইসরায়েলের কট্টরপন্থি মন্ত্রীরা ট্রাম্পের দেওয়া ২১ দফা শান্তি পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী হামাসের চূড়ান্ত পরাজয় ছাড়া যুদ্ধ শেষ করার কোনো অধিকার আপনার নেই। অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ ঘোষণা করেছেন যে, তিনি কখনোই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র মেনে নেবেন না।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। রোববারও বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে বহু মানুষ নিহত হন। এর মধ্যে সাবরা এলাকায় এক শিশু রয়েছে। খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে অপুষ্টি ও চিকিৎসার অভাবে এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।
ইসরায়েলি ট্যাংক এখন গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। হাসপাতালটি একসময় গাজার সবচেয়ে বড় চিকিৎসাকেন্দ্র ছিল কিন্তু একাধিক অবরোধ ও হামলায় তা প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক মুহাম্মদ আবু সালমিয়া জানিয়েছেন, রোগী ও আশ্রয়প্রার্থীরা সেখানে আশ্রয় নেওয়ায় তারা যতদিন সম্ভব চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাবেন।
বিজনেস আওয়ার/ ২৯ সেপ্টেম্বর / হাসান