আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বের ২১৯টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ছয় কোটি। এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছয় কোটি সাত লাখ ১৯ হাজার ৯৩৬ জন। বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারস এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারিতে এখন পর্যন্ত ১৪ লাখ ২৬ হাজার ৮২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছে চার কোটি ২০ লাখ ৩০ হাজার ২৩৪ জন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে দেশটিতে ৮৩ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও সেখানে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এদিকে আমেরিকার দুই মহাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ায় করোনার সংক্রমণ এখনও দ্রুত বাড়ছে। অন্যদিকে ইউরোপকে লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে করোনা কিছুটা স্তিমিত হলেও সেখানে আবারও নতুন করে রোগটির প্রাদুর্ভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে আশার কথা হচ্ছে, এখন আক্রান্তের পর সুস্থ হওয়ার হার দ্রুত বাড়ছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারস-এর তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৯৬২। মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৬৮ হাজার ২১৯ জনের।
আক্রান্তের হিসাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৭। এর মধ্যে এক লাখ ৩৫ হাজার ২৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তৃতীয় অবস্থানে আছে ব্রাজিল। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৬১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৯৮। এর মধ্যে এক লাখ ৭০ হাজার ৭৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
উৎপত্তিস্থল চীনে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৬ হাজার ৪৯০। এরমধ্যে চার হাজার ৬৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও দেশটির বিরুদ্ধে প্রকৃত পরিস্থিতি গোপন করার অভিযোগ রয়েছে। উহানের একজন স্বেচ্ছাসেবী বলেন, ‘বুদ্ধি-বিবেচনাসম্পন্ন যেকোনও মানুষ এই সংখ্যা (সরকারি পরিসংখ্যান) নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করবেন।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-এর মহাপরিচালক টেড্রোস অ্যাডানম গেব্রিয়াসিস বলেছেন, প্রায় এক বছরের ভোগান্তিতে মানুষ ক্লান্ত হয়ে যেতে পারে, কিন্তু করোনাভাইরাস এখনও ক্লান্ত হয়নি। কার্যকর টিকা আবিষ্কার হওয়ার আগ পর্যন্ত সাবধানতা অবলম্বনে কোনও ফাঁকি দেওয়া যাবে না।
মহামারির শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে আসছিল, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পেছনে চীনের ভূমিকা রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের সেই দাবিকে আরও জোরালো করে চীনের উহানের ল্যাবের এক ভাইরোলজিস্ট লি মেং ইয়ান বলেন, চীনের ল্যাবেই তৈরি করা হয়েছে করোনাভাইরাস। এটি মানুষের তৈরি বলে তার কাছে শতভাগ প্রমাণ রয়েছে।
বিজনেস আওয়ার/২৬ নভেম্বর, ২০২০/এ