বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বিশ্ববাজারে স্বর্ণ ও রুপার দাম বড় পতন হয়েছে। গত সপ্তাহে স্বর্ণের দাম প্রায় সাড়ে ৪ শতাংশ এবং রুপার দাম প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশ কমেছে। গত সেপ্টেম্বরের পর এক সপ্তাহে স্বর্ণ ও রুপার বাজার এত বড় পতনের মধ্যে পড়েনি।
মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে চলতি বছরের শুরু থেকেই বিশ্ববাজারে সোনার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল। দফায় দফায় দাম বেড়ে গত সপ্তাহে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম রেকর্ড দুই হাজার ৭৪ ডলারে উঠে যায়।
বিশ্ববাজারে অস্বাভাবিক দাম বাড়ার প্রেক্ষিতে ৬ আগস্ট দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতিভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম রেকর্ড ৭৭ হাজার ২১৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৭৪ হাজার ৬৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬৫ হাজার ৩১৮ টাকায় ও সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি স্বর্ণ ৫৪ হাজার ৯৯৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
তবে ৭ আগস্ট থেকে পতনের কবলে পড়ে উড়তে থাকা স্বর্ণের দাম। ১১ আগস্ট এসে বড় পতন হয় স্বর্ণের দামে। একদিনে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১১২ ডলার পর্যন্ত কমে যায়। এরপরও চলতে থাকে স্বর্ণের দরপতনের ধারা।
এতে সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম সাড়ে ১৮০০ ডলারের কাছাকাছি চলে আসে। বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম পতনের মধ্যে পড়ায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম কমানো হয়।
সে সময় ২২ ক্যারেটের প্রতিভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয় ৭৪ হাজার আট টাকা। আর ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ভরি ৭০ হাজার ৮৫৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ভরি ৬২ হাজার ১১১ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ৫১ হাজার ৭৮৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমার মধ্যেই ইউরোপজুড়ে শুরু হয় করোনার দ্বিতীয় ধাপ। এতে বিশ্ববাজারে আবার স্বর্ণের দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা দেয়। ১৯০০ ডলারের নিচে নেমে যাওয়া স্বর্ণের দাম আবার ১৯০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়।
বিশ্ববাজারে দাম বাড়ায় ১৫ অক্টোবর থেকে দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। এ দফায় ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম দুই হাজার ৩৩৩ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ৭৬ হাজার ৩৪১ টাকা।
আর ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৭৩ হাজার ১৯২ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬৪ হাজার ৪৪৪ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ৫৪ হাজার ১২১ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এরপর মাঝে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম আরও একটু বাড়ে। তবে দুই সপ্তাহ ধরে পতনের মধ্যে রয়েছে স্বর্ণের দাম। আর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেই বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় পতন হয়।
এতে ২৫ নভেম্বর থেকে দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম কমানো হয়। এ দফায় ২২ ক্যারেটের প্রতিভরি স্বর্ণের দাম দুই হাজার ৫০৮ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় ৭৩ হাজার ৮৩৩ টাকা।
২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৭০ হাজার ৬৮৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬১ হাজার ৯৩৬ টাকায় ও সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি স্বর্ণ ৫১ হাজার ৬১৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
অবশ্য দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর পরও বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমার প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শুক্রবার প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২৩ দশমিক ৯৭ ডলার কমে ১৭৮৬ দশমিক ৬০ ডলারে নেমে গেছে।
এর মাধ্যমে চার মাস বা গত জুলাইয়ের পর প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১৮০০ ডলারের নিচে নেমে গেল। আর সপ্তাহের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম কমলো ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
এদিকে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে রুপার দামেও বড় উত্থান হয়। গত সপ্তাহে রুপার দাম বেড়ে ২০১৩ সালের মার্চে পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে যায়। প্রতি আউন্স রুপার দাম ২৮ দশমিক ২৬ ডলার স্পর্শ করে।
গত এক সপ্তাহ বিশ্ববাজারে রূপার দাম ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স রুপার দাম ২২ দশমিক ৫৮ ডলারে নেমে এসেছে। এতে গত সেপ্টেম্বরের পর এক সপ্তাহে রূপার দামে সর্বোচ্চ পতন হলো।
বিজনেস আওয়ার/২৯ নভেম্বর, ২০২০/এ