বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক (টাঙ্গাইল) : নামের মিলে কারাভোগ করছেন এক চাঁন মিয়ার স্থলে অন্য চাঁন মিয়া। ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের মধুপুরে। নামের মিলে হাজতবাসী চাঁন মিয়া লেপ তোষকের ব্যবসায়ী ও উপজেলার কুড়াগাছা ইউনিয়নের কুড়াগাছা গ্রামের বাসিন্দা। বাবারা নাম জরু শেখ। স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে সুখের সংসার তার।
অথচ স্ত্রীর করা যৌতুক মামলার আসামী হয়ে লেপ তোষকের ব্যবসায়ী সহজ সরল চাঁন মিয়া গত বৃহস্পতিবার পুলিশের হাতে আটক হয়ে এখন কারাগারে। যার ফলে দূর্ভোগে পড়েছেন কারাভোগী চাঁনমিয়ার পরিবার।
জানা যায়, সি.আর ১৭০/১৯ নং যৌতুকের ৩ ধারায় মামলার বাদী জমিলা বেগম। তিনি ১২ বছরের এক মেয়ে সন্তান নিয়ে থাকেন ঢাকায়। যৌতুকের দাবি করায় গত এক বছর আগে তিনি তার স্বামী চাঁন মিয়ার নামে মামলা করে ঢাকায় গিয়ে গার্মেন্টেসে চাকরি নেন। তার শ্বশুরের নাম জহুর আলী। তবে বাড়ি উপজেলার মির্জাবাড়ী ইউনিয়নের ব্রাহ্মণবাড়ী গ্রামে। পেশা গাছ কাটা।
অথচ আটক হয়ে জেলে যাওয়া চাঁন মিয়ার বাড়ি কুড়াগাছা ইউনিয়নের কুড়াগাছা গ্রামে। তবে কারাভোগী চাঁন মিয়া বাদী জমিলা বেগমের প্রতিবেশী। মামলার আসামী চাঁন মিয়ার বাবার নাম জহুর আলী হলেও শুধু নামের মিলে কারাভোগ করছেন জরু শেখের ছেলে চাঁন মিয়া।
এরপরও গত বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) পুলিশের অভিযানে আটক হন লেপ তোষকের ব্যবসায়ী চাঁন মিয়া। তাকে ওইদিনই জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মধুপুর আমলী আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আটক চাঁন মিয়ার পরিবারের অভিযোগ, এসময় স্বজনসহ স্থানীয়রা পরোয়ানার কাগজ বা কারণ জানতে চাইলেও পুলিশ কথা শুনেনি। অযথা নীরিহ চাঁন মিয়াকে এ মামলার আসামী হিসেবে আদালতে হাজির করে।
কারাভোগী চাঁন মিয়ার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম জানান, তার স্বামীর নামে এ পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। তিনি দ্বিতীয় স্ত্রী হলেও প্রথম স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়েছে অন্তত ২০ বছর আগে। ওই ঘরের এক ছেলে বাবার সাথে থেকেই ব্যবসা করছে।
মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিক কামাল জানান, নামের মিল থাকায় কারাগারে পাঠানো চাঁন মিয়া মামলার প্রকৃত আসামী কিনা প্রমাণিত নয়। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত চাঁন মিয়া ওই মামলার আসামী না এমন দাবি করেননিও তিনি। আসামীর নাম, বাবার নাম আর ঠিকানা এক থাকায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ সময় মামলার আসামী উপজেলার মির্জাবাড়ি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণবাড়ী গ্রামে হলেও গ্রেফতার করা আসামীর বাড়ি উপজেলার কুড়াগাছা ইউনিয়নে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামীর বাড়ি আগে মির্জাবাড়ি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণবাড়ী গ্রামে ছিল বলে জানান তিনি। তবে এ ঘটনায় বাদীর সাথে কথা হয়েছে আগামীকাল আদালতে নিশ্চিত হবে কে আসামী।
এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. শাহিনুল ইসলাম বলেন, সি.আর মামলা কোর্টে হওয়ায় ও নামের মিল থাকায় অনেক সময় এমন ভুল হয়ে যায়। তবে বিষয়টি তার জানা নেই। আদালতে জামিন আবেদন করলে বিনাদোষে কারাভোগকারী জামিন পাবেন।
বিজনেস আওয়ার/২৯ নভেম্বর, ২০২০/টিএ/এ