বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শরণার্থী শিবির থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে শরণার্থী শিবির ছাড়তে শুরু করেন রোহিঙ্গারা।
এর আগে বুধবারও কিছু রোহিঙ্গা ভাসানচরের উদ্দেশ্যে ক্যাম্প ছাড়ে। এসব রোহিঙ্গাকে কুতুপালংয়ের ট্রানজিট ও কলেজ মাঠের পয়েন্টে রাখা হয়। সেখান থেকে রোহিঙ্গাদের আজ বাসে ভাসানচরের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে যেতে উখিয়া কলেজ মাঠে অস্থায়ী ট্রানজিট পয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে। মাঠে একাধিক কাপড়ের প্যান্ডেল ও বুথ তৈরি করা হয়েছে। সেখান থেকে তাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবহন ব্যবস্থা ও খাদ্যসামগ্রী মজুত করা হয়েছে আগেই।
নৌ বাহিনীর জাহাজ দিয়ে রোহিঙ্গাদের দুইমাস খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করা হবে। এরপর তারা নিজেরাই রান্না করে খেতে পারবেন। সুশৃঙ্খলভাবে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরে কর্মরত রয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিবীর সদস্যরা।
এর আগে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর কার্যক্রম ঘিরে বঙ্গোপসাগরের এই দ্বীপ ঘুরে আসে ২২টি এনজিওর প্রতিনিধি দল। ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের জন্য সেখানে মজুত করা হয়েছে ৬৬ টন খাদ্যসামগ্রী। ২২ এনজিওর প্রতিনিধিরা ভাসানচর পরিদর্শন করে সরকারের পরিকল্পিত আয়োজনে সন্তোষ প্রকাশ করেন। রোহিঙ্গাদের ভাসানচর নেওয়ার বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন তারা।
সরকার থেকে দাবি করা হয়েছে, কোনো বলপ্রয়োগ ছাড়াই রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে যাওয়ার ইতিবাচক মনোভাব দেখে তাদের সেখানে পাঠানোর বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটিকে নিরাপদে ভাসানচরে পাঠাতে পারলে আরও অনেক পরিবার সেখানে যেতে আগ্রহী হবে বলে সরকার আশাবাদী।
কক্সবাজারের ৩৪টি ক্যাম্পে থাকা ১১ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে উঠা ভাসানচর দ্বীপে অস্থায়ীভাবে পাঠানোর উদ্যোগ নেয় সরকার। এ কারণে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে আবাসন প্রকল্প নির্মাণও সম্পন্ন হয়েছে। জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাস থেকে এলাকা রক্ষা করতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। নির্মিত হয়েছে সাইক্লোন সেল্টার, শিক্ষা ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা অবকাঠামো।
বিজনেস আওয়ার/০৩ ডিসেম্বর, ২০২০/কমা