ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্মাণ ব্যয় বেশি দেখিয়ে নর্দার্ণ জুটের অর্থ আত্মসাৎ

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২০
  • 50

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নর্দার্ণ জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ডরমিটোরিজ (বড় কক্ষ) নির্মাণ ব্যয় বেশি দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছে। কোম্পানিটির ২০১৯-২০ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় নিরীক্ষকের প্রতিবেদনে এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

নিরীক্ষক জানিয়েছেন, কোম্পানিটি ১৬ হাজার স্কয়ার ফিটের ৪টি ডরমিটোরিজ তৈরী করেছে। যা তৈরী করতে প্রতি স্কয়ার ফিটে ৫ হাজার ৫৪৯ টাকা করে মোট ৮ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার ৫৯৪ টাকা ব্যয় দেখিয়েছে। কিন্তু ডরমিটোরিজের প্রকৃতি বা কাঠামো ও এলাকা বিবেচনায় এতো ব্যয় সঠিক বা যৌক্তিক না।

এছাড়া ওই সম্পদের উপরে কোন অবচয় চার্জ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক। এর মাধ্যমে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৯১৯ টাকার কম অবচয় চার্জ করে একই পরিমাণ মুনাফা বেশি দেখানো হয়েছে।

নর্দার্ণ জুটের ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে ওয়ার্ক-ইন-প্রগ্রেস (সম্পত্তি ব্যবহারযোগ্য করার প্রক্রিয়াধীন) হিসাবে ৩ কোটি ৮২ লাখ ৯১ হাজার ৩৬৭ টাকা দেখিয়েছে। যা মোট সম্পত্তির ৪ শতাংশ। কিন্তু সরেজমিনে এই সম্পত্তির ধরন ও প্রকৃতির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি নিরীক্ষক।

বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ি, ওয়ার্কার্স প্রফিট অ্যান্ড পার্টিসিপেশন ফান্ডের (ডব্লিউপিপিএফ) টাকা বছর শেষ হওয়ার ৯ মাসের মধ্যে বিতরন করতে হয়। কিন্তু নর্দার্ণ জুট কর্তৃপক্ষ এই বিধান অনুযায়ি ফান্ডের সদস্যদের মধ্যে টাকা বিতরন করেনি বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

নিরীক্ষক জানিয়েছে, হিসাব অনুযায়ি ডেফার্ড ট্যাক্স দায় (লায়াবিলিটি) হবে ৬৫ লাখ ২৩ হাজার ৯২৫ টাকা। এ হিসাবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ১২ লাখ ৯ হাজার ৭৩৩ টাকার ডেফার্ড ট্যাক্স দায় ও ডেফার্ড ট্যাক্স ব্যয় কম দেখিয়েছে। অর্থাৎ একই পরিমাণ মুনাফা বেশি দেখিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৯-২০ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ১১.৩৩ টাকা মুনাফা দেখানো নর্দার্ণ জুটের পর্ষদ ৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। সেটাও আবার শুধুমাত্র সাধারন শেয়ারহোল্ডারদের জন্য। এক্ষেত্রে অবশ্য পরিচালকেরা লভ্যাংশ নেবে না বলে নিজেদেরকে মহৎ জাহির করার চেষ্টা করলেও, তারা ঠিকই নির্মাণ ব্যয় বেশি দেখিয়ে অনৈতিকভাবে তার চেয় বেশি আদায় করে নিয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/০৬ ডিসেম্বর, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

2 thoughts on “নির্মাণ ব্যয় বেশি দেখিয়ে নর্দার্ণ জুটের অর্থ আত্মসাৎ

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

নির্মাণ ব্যয় বেশি দেখিয়ে নর্দার্ণ জুটের অর্থ আত্মসাৎ

পোস্ট হয়েছে : ১০:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নর্দার্ণ জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ডরমিটোরিজ (বড় কক্ষ) নির্মাণ ব্যয় বেশি দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছে। কোম্পানিটির ২০১৯-২০ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় নিরীক্ষকের প্রতিবেদনে এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

নিরীক্ষক জানিয়েছেন, কোম্পানিটি ১৬ হাজার স্কয়ার ফিটের ৪টি ডরমিটোরিজ তৈরী করেছে। যা তৈরী করতে প্রতি স্কয়ার ফিটে ৫ হাজার ৫৪৯ টাকা করে মোট ৮ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার ৫৯৪ টাকা ব্যয় দেখিয়েছে। কিন্তু ডরমিটোরিজের প্রকৃতি বা কাঠামো ও এলাকা বিবেচনায় এতো ব্যয় সঠিক বা যৌক্তিক না।

এছাড়া ওই সম্পদের উপরে কোন অবচয় চার্জ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক। এর মাধ্যমে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৯১৯ টাকার কম অবচয় চার্জ করে একই পরিমাণ মুনাফা বেশি দেখানো হয়েছে।

নর্দার্ণ জুটের ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে ওয়ার্ক-ইন-প্রগ্রেস (সম্পত্তি ব্যবহারযোগ্য করার প্রক্রিয়াধীন) হিসাবে ৩ কোটি ৮২ লাখ ৯১ হাজার ৩৬৭ টাকা দেখিয়েছে। যা মোট সম্পত্তির ৪ শতাংশ। কিন্তু সরেজমিনে এই সম্পত্তির ধরন ও প্রকৃতির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি নিরীক্ষক।

বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ি, ওয়ার্কার্স প্রফিট অ্যান্ড পার্টিসিপেশন ফান্ডের (ডব্লিউপিপিএফ) টাকা বছর শেষ হওয়ার ৯ মাসের মধ্যে বিতরন করতে হয়। কিন্তু নর্দার্ণ জুট কর্তৃপক্ষ এই বিধান অনুযায়ি ফান্ডের সদস্যদের মধ্যে টাকা বিতরন করেনি বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

নিরীক্ষক জানিয়েছে, হিসাব অনুযায়ি ডেফার্ড ট্যাক্স দায় (লায়াবিলিটি) হবে ৬৫ লাখ ২৩ হাজার ৯২৫ টাকা। এ হিসাবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ১২ লাখ ৯ হাজার ৭৩৩ টাকার ডেফার্ড ট্যাক্স দায় ও ডেফার্ড ট্যাক্স ব্যয় কম দেখিয়েছে। অর্থাৎ একই পরিমাণ মুনাফা বেশি দেখিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৯-২০ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ১১.৩৩ টাকা মুনাফা দেখানো নর্দার্ণ জুটের পর্ষদ ৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। সেটাও আবার শুধুমাত্র সাধারন শেয়ারহোল্ডারদের জন্য। এক্ষেত্রে অবশ্য পরিচালকেরা লভ্যাংশ নেবে না বলে নিজেদেরকে মহৎ জাহির করার চেষ্টা করলেও, তারা ঠিকই নির্মাণ ব্যয় বেশি দেখিয়ে অনৈতিকভাবে তার চেয় বেশি আদায় করে নিয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/০৬ ডিসেম্বর, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: