ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দু’দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে: শেখ হাসিনা

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২০
  • 52

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ এবং পারস্পরিক সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) ভার্চুয়াল বৈঠকে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ-ভারত যুগান্তকারী মুহূর্ত অতিক্রম করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান পারস্পরিক নির্ভরতা আমরা আনন্দের সঙ্গে স্বীকৃতি দিই। দুই দেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। পারস্পরিক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে মুক্তিযুদ্ধে সহায়তার জন্য ভারতের সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান পারস্পরিক নির্ভরতা আমরা আনন্দের সঙ্গে স্বীকৃতি দিই। আমি বিশ্বাস করি, উভয় দেশ বিদ্যমান সহযোগিতামূলক ঐকমত্যের সুযোগ নিয়ে আমাদের অর্থনীতিকে আরও সংহত করে বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক ভ্যালু-চেইন আরও সমৃদ্ধ করতে পারে।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৭ ডিসেম্বর তার জন্য বিশেষ দিন। বাংলাদেশ ১৬ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হলেও তিনি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে বন্দি ছিলেন। তার মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বোন শেখ রেহানা, ভাই শেখ রাসেল এবং ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ১৭ ডিসেম্বর সকাল পর্যন্ত বন্দি ছিলেন। সেদিন এক ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা (কর্নেল অশোক) এসে তাদের মুক্ত করায় তাকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।

সরকার প্রধান বলেন, আগামী বছর বাংলাদেশ ৫০ বছরে পা দিতে যাচ্ছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ-ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কও ৫০ বছরে পড়ছে। বাংলাদেশ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী পালন করছে। এদেশে কিছুদিন আগে ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর সার্ধশতবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। সেজন্য একটি বিশেষ ডাকটিকেট অবমুক্ত করা হয়েছে। একইভাবে বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবাষিকী উপলক্ষেও দুই দেশ স্মারক ডাকটিকিট উদ্বোধন করলো।

দুই দেশের সম্পর্ক অকৃত্রিম উল্লেখ করে তিনি বলেন, এদেশের অনেক মানুষ ভারতে বেড়াতে যায়, চিকিৎসা করাতে যায়। আবার ভারতের কিছু মানুষ এদেশে কাজ করে। তারা রেমিট্যান্স পাঠায়। আমি বিশ্বাস করি, উভয় দেশ বিদ্যামান সহযোগিতামূলক ঐক্যমতের সুযোগ নিয়ে আমাদের অর্থনীতি বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিকভাবে আরও সংহত করতে পারে। দুই দেশের চলমান উদ্যোগগুলো এতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে পারে।

বর্তমান বিশ্ব মহাবিপর্যয়ের সম্মুখিন উল্লেখ করে বাংলাদেশের সরকারপ্রধান বলেন, মানবজাতি কীভাবে অজানা শত্রুকে মোকাবিলা করে তার পরীক্ষা নিচ্ছে কোভিড-১৯। এ ভাইরাস মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।’ তিনি কোভিড মোকাবিলায় ভারতের স্বাস্থ্য প্যাকেজের পাশাপাশি ‘আত্মনির্ভর ভারত’ উদ্যোগের বিভিন্ন প্যাকেজের প্রশংসা করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন ভারতের গৃহীত নীতিমালার মাধ্যমে দেশটি বৈশ্বিক অর্থনীতিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। একইসঙ্গে এদেশে কোভিড মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন প্যাকেজ এবং সহায়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যথাসময়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঊর্ধ্বমুখি ধারা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছে। করোনার দ্বিতীয় ধাপ মোকাবিলায়ও যথেষ্ট প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

১৯৭১ সালে এদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অবিচ্ছেদ্য যোগসূত্র স্মরণে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে আগামী বছরজুড়ে যৌথ কর্মসূচি পালনে পালনে বাংলাদেশ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ২০২১ সালের ২৬ মার্চ ঢাকায় আপনার উপস্থিতি আমাদের যৌথ উৎযাপনের গৌরবময় স্মৃতি স্মরণীয় করে রাখবে।

গেল বছর নিজের ভারত সফরের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু। ২০১৯ সালের অক্টোবরে নয়াদিল্লীর গ্র্যান্ড হায়দ্রাবাদ হাউসে আপনার সঙ্গে আমার শেষ বৈঠক এবং আপনার অপূর্ব আতিথেয়তা কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করছি। তারপর অনেক পরিবর্তন ঘটেছে।

বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ডিসেম্বরে বাংলাদেশের মানুষ আনন্দ, মুক্তি এবং উদযাপনের চেতনায় উদ্বেলিত হয়ে ওঠে। গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে; যাঁর গতিশীল নেতৃত্বে আমরা মহান স্বাধীনতা অর্জন করেছি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং নির্যাতনের শিকার দুই লাখ মা-বোনের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী।

বিজনেস আওয়ার/১৭ ডিসেম্বর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

দু’দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে: শেখ হাসিনা

পোস্ট হয়েছে : ০১:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ এবং পারস্পরিক সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) ভার্চুয়াল বৈঠকে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ-ভারত যুগান্তকারী মুহূর্ত অতিক্রম করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান পারস্পরিক নির্ভরতা আমরা আনন্দের সঙ্গে স্বীকৃতি দিই। দুই দেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। পারস্পরিক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে মুক্তিযুদ্ধে সহায়তার জন্য ভারতের সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান পারস্পরিক নির্ভরতা আমরা আনন্দের সঙ্গে স্বীকৃতি দিই। আমি বিশ্বাস করি, উভয় দেশ বিদ্যমান সহযোগিতামূলক ঐকমত্যের সুযোগ নিয়ে আমাদের অর্থনীতিকে আরও সংহত করে বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক ভ্যালু-চেইন আরও সমৃদ্ধ করতে পারে।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৭ ডিসেম্বর তার জন্য বিশেষ দিন। বাংলাদেশ ১৬ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হলেও তিনি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে বন্দি ছিলেন। তার মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বোন শেখ রেহানা, ভাই শেখ রাসেল এবং ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ১৭ ডিসেম্বর সকাল পর্যন্ত বন্দি ছিলেন। সেদিন এক ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা (কর্নেল অশোক) এসে তাদের মুক্ত করায় তাকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।

সরকার প্রধান বলেন, আগামী বছর বাংলাদেশ ৫০ বছরে পা দিতে যাচ্ছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ-ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কও ৫০ বছরে পড়ছে। বাংলাদেশ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী পালন করছে। এদেশে কিছুদিন আগে ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর সার্ধশতবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। সেজন্য একটি বিশেষ ডাকটিকেট অবমুক্ত করা হয়েছে। একইভাবে বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবাষিকী উপলক্ষেও দুই দেশ স্মারক ডাকটিকিট উদ্বোধন করলো।

দুই দেশের সম্পর্ক অকৃত্রিম উল্লেখ করে তিনি বলেন, এদেশের অনেক মানুষ ভারতে বেড়াতে যায়, চিকিৎসা করাতে যায়। আবার ভারতের কিছু মানুষ এদেশে কাজ করে। তারা রেমিট্যান্স পাঠায়। আমি বিশ্বাস করি, উভয় দেশ বিদ্যামান সহযোগিতামূলক ঐক্যমতের সুযোগ নিয়ে আমাদের অর্থনীতি বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিকভাবে আরও সংহত করতে পারে। দুই দেশের চলমান উদ্যোগগুলো এতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে পারে।

বর্তমান বিশ্ব মহাবিপর্যয়ের সম্মুখিন উল্লেখ করে বাংলাদেশের সরকারপ্রধান বলেন, মানবজাতি কীভাবে অজানা শত্রুকে মোকাবিলা করে তার পরীক্ষা নিচ্ছে কোভিড-১৯। এ ভাইরাস মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।’ তিনি কোভিড মোকাবিলায় ভারতের স্বাস্থ্য প্যাকেজের পাশাপাশি ‘আত্মনির্ভর ভারত’ উদ্যোগের বিভিন্ন প্যাকেজের প্রশংসা করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন ভারতের গৃহীত নীতিমালার মাধ্যমে দেশটি বৈশ্বিক অর্থনীতিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। একইসঙ্গে এদেশে কোভিড মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন প্যাকেজ এবং সহায়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যথাসময়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঊর্ধ্বমুখি ধারা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছে। করোনার দ্বিতীয় ধাপ মোকাবিলায়ও যথেষ্ট প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

১৯৭১ সালে এদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অবিচ্ছেদ্য যোগসূত্র স্মরণে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে আগামী বছরজুড়ে যৌথ কর্মসূচি পালনে পালনে বাংলাদেশ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ২০২১ সালের ২৬ মার্চ ঢাকায় আপনার উপস্থিতি আমাদের যৌথ উৎযাপনের গৌরবময় স্মৃতি স্মরণীয় করে রাখবে।

গেল বছর নিজের ভারত সফরের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু। ২০১৯ সালের অক্টোবরে নয়াদিল্লীর গ্র্যান্ড হায়দ্রাবাদ হাউসে আপনার সঙ্গে আমার শেষ বৈঠক এবং আপনার অপূর্ব আতিথেয়তা কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করছি। তারপর অনেক পরিবর্তন ঘটেছে।

বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ডিসেম্বরে বাংলাদেশের মানুষ আনন্দ, মুক্তি এবং উদযাপনের চেতনায় উদ্বেলিত হয়ে ওঠে। গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে; যাঁর গতিশীল নেতৃত্বে আমরা মহান স্বাধীনতা অর্জন করেছি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং নির্যাতনের শিকার দুই লাখ মা-বোনের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী।

বিজনেস আওয়ার/১৭ ডিসেম্বর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: