ঢাকা , রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নানা সমস্যায় ভেঙ্গে পড়েছে জুট স্পিনার্স

  • পোস্ট হয়েছে : ১১:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২০
  • 44

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : নানা সমস্যায় জর্জরিত শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত জুট স্পিনার্স পুরো ভেঙ্গে পড়েছে। কোম্পানিটির বিদ্যমান সমস্যা কাটিয়ে ব্যবসায় টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যে কোম্পানিটির ভবিষ্যতে ব্যবসায় টিকিয়ে রাখা নিয়ে খুবই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নিরীক্ষক। তারপরেও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাড়িঁয়ে থাকা এ কোম্পানিটির শেয়ার দর অনেক মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির থেকে বেশি। যেখানে দক্ষ ও শিক্ষিত নামের অদক্ষ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগও কম না।

নিরীক্ষক জানিয়েছেন, কোম্পানিটির ২০১৯-২০ অর্থবছরে নিট লোকসান হয়েছে ৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা। যাতে করে পূঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ দাড়িয়েছে ৬১ কোটি ৩ লাখ টাকা। এই কোম্পানিটির চলতি দায় বেড়ে হয়েছে ৬১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, যা মোট সম্পদের থেকেও ৩২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বেশি।

এছাড়া কোম্পানিটিতে শ্রমিক জটিলতা, পাওনাদারদের টাকা পরিশোধে অক্ষমতা, নতুন পণ্য উন্নয়নে অর্থায়নে অক্ষমতা, উৎপাদনে ব্যাঘাত, ঋণের শর্ত পরিপালনের অক্ষমতা, নতুন প্রতিযোগিদের আগমন, মূল ম্যানেজমেন্টের অপর্যাপ্ততা ও ঋণাত্মক পরিচালন নগদ প্রবাহের সমস্যা রয়েছে। এছাড়া জনতা ব্যাংক ও ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানি টাকা আদায়ে আইনগত পদক্ষেপ নিয়েছে। এসব সমস্যায় জর্জরিত থাকা জুট স্পিনার্সের ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে খুবই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নিরীক্ষক।

আন্তর্জাতিক হিসাব মান (আইএএস)-৩৬ অনুযায়ি, প্রতি অর্থবছর শেষে কোম্পানির সম্পদ মূল্যায়ন শেষে ইমপেয়ার করা উচিত (যদি থাকে)। এরকম ইমপেয়ার করার মতো ইন্ডিকেশন জুট স্পিনার্সে রয়েছে। কিন্তু কোম্পানি কর্তৃপক্ষ তাসত্ত্বেও করেনি বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

কোম্পানিটি ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) কাছ থেকে ২ কোটি ৬ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে বোর্ড রেজুলুশন বা চুক্তি হয়নি। এছাড়া পরিচালক মুহাম্মদ শামস-উল-কাদিরের স্ত্রী আয়েশা কবিরের কাছ থেকে নেওয়া ঋণের ৩৫ লাখ টাকা এখনো অপরিশোধিত রয়েছে। তবে ওই অর্থের উপর সুদ চার্জ না করার মাধ্যমে দায় কম দেখানো হচ্ছে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

জুট স্পিনার্স কর্তৃপক্ষ কোম্পানি আইন ও ইনকাম টেক্স অধ্যাদেশ ভঙ্গ করে পরিচালকদের সঙ্গে অধিকাংশ লেনদেন নগদে করে থাকে বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে দাড়িঁয়ে থাকা ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের জুট স্পিনার্সের শেয়ার দর রবিবার (২৭ ডিসেম্বর) লেনদেন শেষে দাড়িঁয়েছে ১৩৩.১০ টাকায়। এমন একটি কোম্পানিতেও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের পরিমাণ ২৩.২০ শতাংশ। অথচ তাদেরকে শিক্ষিত ও বুদ্ধিমান বিনিয়োগকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

তবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ভূমিকা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেন। তাদের মতে, এরাও সাধারন বিনিয়োগকারীদের মতো পচাঁ শেয়ারে লোভের বশবর্তী হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন……
জিল বাংলা সুগারের ব্যবসা চালানোর সক্ষমতা নিয়ে শঙ্কা

বিজনেস আওয়ার/২৮ ডিসেম্বর, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

নানা সমস্যায় ভেঙ্গে পড়েছে জুট স্পিনার্স

পোস্ট হয়েছে : ১১:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : নানা সমস্যায় জর্জরিত শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত জুট স্পিনার্স পুরো ভেঙ্গে পড়েছে। কোম্পানিটির বিদ্যমান সমস্যা কাটিয়ে ব্যবসায় টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যে কোম্পানিটির ভবিষ্যতে ব্যবসায় টিকিয়ে রাখা নিয়ে খুবই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নিরীক্ষক। তারপরেও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাড়িঁয়ে থাকা এ কোম্পানিটির শেয়ার দর অনেক মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির থেকে বেশি। যেখানে দক্ষ ও শিক্ষিত নামের অদক্ষ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগও কম না।

নিরীক্ষক জানিয়েছেন, কোম্পানিটির ২০১৯-২০ অর্থবছরে নিট লোকসান হয়েছে ৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা। যাতে করে পূঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ দাড়িয়েছে ৬১ কোটি ৩ লাখ টাকা। এই কোম্পানিটির চলতি দায় বেড়ে হয়েছে ৬১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, যা মোট সম্পদের থেকেও ৩২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বেশি।

এছাড়া কোম্পানিটিতে শ্রমিক জটিলতা, পাওনাদারদের টাকা পরিশোধে অক্ষমতা, নতুন পণ্য উন্নয়নে অর্থায়নে অক্ষমতা, উৎপাদনে ব্যাঘাত, ঋণের শর্ত পরিপালনের অক্ষমতা, নতুন প্রতিযোগিদের আগমন, মূল ম্যানেজমেন্টের অপর্যাপ্ততা ও ঋণাত্মক পরিচালন নগদ প্রবাহের সমস্যা রয়েছে। এছাড়া জনতা ব্যাংক ও ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানি টাকা আদায়ে আইনগত পদক্ষেপ নিয়েছে। এসব সমস্যায় জর্জরিত থাকা জুট স্পিনার্সের ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে খুবই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নিরীক্ষক।

আন্তর্জাতিক হিসাব মান (আইএএস)-৩৬ অনুযায়ি, প্রতি অর্থবছর শেষে কোম্পানির সম্পদ মূল্যায়ন শেষে ইমপেয়ার করা উচিত (যদি থাকে)। এরকম ইমপেয়ার করার মতো ইন্ডিকেশন জুট স্পিনার্সে রয়েছে। কিন্তু কোম্পানি কর্তৃপক্ষ তাসত্ত্বেও করেনি বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

কোম্পানিটি ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) কাছ থেকে ২ কোটি ৬ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে বোর্ড রেজুলুশন বা চুক্তি হয়নি। এছাড়া পরিচালক মুহাম্মদ শামস-উল-কাদিরের স্ত্রী আয়েশা কবিরের কাছ থেকে নেওয়া ঋণের ৩৫ লাখ টাকা এখনো অপরিশোধিত রয়েছে। তবে ওই অর্থের উপর সুদ চার্জ না করার মাধ্যমে দায় কম দেখানো হচ্ছে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

জুট স্পিনার্স কর্তৃপক্ষ কোম্পানি আইন ও ইনকাম টেক্স অধ্যাদেশ ভঙ্গ করে পরিচালকদের সঙ্গে অধিকাংশ লেনদেন নগদে করে থাকে বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে দাড়িঁয়ে থাকা ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের জুট স্পিনার্সের শেয়ার দর রবিবার (২৭ ডিসেম্বর) লেনদেন শেষে দাড়িঁয়েছে ১৩৩.১০ টাকায়। এমন একটি কোম্পানিতেও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের পরিমাণ ২৩.২০ শতাংশ। অথচ তাদেরকে শিক্ষিত ও বুদ্ধিমান বিনিয়োগকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

তবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ভূমিকা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেন। তাদের মতে, এরাও সাধারন বিনিয়োগকারীদের মতো পচাঁ শেয়ারে লোভের বশবর্তী হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন……
জিল বাংলা সুগারের ব্যবসা চালানোর সক্ষমতা নিয়ে শঙ্কা

বিজনেস আওয়ার/২৮ ডিসেম্বর, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: