ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাল কিনতে ভোক্তার নাভিশ্বাস বাড়ছেই

  • পোস্ট হয়েছে : ১১:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২০
  • 56

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : করোনার মধ্যেও গত কয়েক মাস ধরেই চালের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সরু থেকে শুরু করে মাঝারি ও মোটা চালের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। বাজার পরিস্থিতি এমন হয়েছে মিল পর্যায়েই প্রতি বস্তা চাল (৫০ কেজি) ৩ মাসের ব্যবধানে ৭শ’ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর এ বাড়তি দরে চাল কিনতে ভোক্তার নাভিশ্বাস বাড়ছেই।

জানা গেছে, মিলপর্যায়ে প্রতি বস্তা মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকা। যা ৩ মাস আগে ছিল ২ হাজার ৩শ’ টাকা। মাঝারি মানের চালের মধ্যে বিআর-২৮ জাত প্রতি বস্তা বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৬শ’ টাকা। যা ৩ মাস আগে ছিল ২ হাজার টাকা। আর মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১৫০ থেকে ২ হাজার ২শ’ টাকা। যা ৩ মাস আগে ছিল ২ হাজার টাকা।

জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী চালের দাম বাড়িয়েছে। তাই সরকারের উচিত, সরকারি গুদামে মজুদ বাড়িয়ে ও বাজার তদারকি করে চালের দাম কমিয়ে আনা। এতে ভোক্তার স্বস্তি ফিরবে।

রাজধানীর পাইকারি বাজারে মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৫০ থেকে ৩ হাজার ১০০ টাকা। যা ৩ মাস আগে ছিল ২ হাজার ৬শ’ টাকা। বিআর-২৮ চাল বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৭শ’ টাকা। যা ৩ মাস আগে ছিল ২ হাজার ৪শ’ টাকা। আর স্বর্ণা জাতের চাল প্রতি বস্তা বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ২শ’ টাকা। যা ৩ মাস আগে ছিল ২ হাজার ১৫০ টাকা।যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে।

শনিবার প্রতি কেজি মিনিকেট ও নাজিরশাল বিক্রি হয়েছে ৬২ থেকে সর্বোচ্চ ৬৭ টাকা। যা ৩ মাস আগে ছিল ৫৫-৫৭ টাকা। বিআর ২৮ চাল বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৬০ টাকা, ৩ মাস আগে ছিল ৪৮-৫০ টাকা। মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৫০-৫২ টাকা, যা ৩ মাস আগে ছিল ৪৫ টাকা।

এ প্রসঙ্গে কারওয়ান বাজারের পাইকারি চাল বিক্রেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এ বছর করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকে (মার্চের শেষে) মিলাররা নানা অজুহাতে চালের দাম বাড়িয়েছে। কখনও সরবরাহ সংকট, কখনও শ্রমিক নাই মিল বন্ধ আবার কখনও ধানের দাম বেশি- এ করেই চালের দাম বাড়াচ্ছে মিলাররা। তারা বছরের শেষ সময় এসেও চালের দাম বাড়িয়েই যাচ্ছে।

এদিকে বেসরকারিভাবে চাল আমদানি করে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য ২৫ শতাংশ শুল্কে বেসরকারিভাবে বৈধ ব্যবসায়ীদের চাল আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্রমজুমদার। রোববার (২৭ ডিসেম্বর) চালের বাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে অনলাইনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ২৫ শতাংশ শুল্কে চাল আমদানি করতে পারবেন বেসরকারি ব্যবসায়ীরা। যারা বৈধ লাইসেন্সধারী আছেন তারা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করবেন ১০ জানুয়ারির মধ্যে। মন্ত্রণালয় কাকে কতটুকু ছাড়পত্র দেবে সেটার এলসি হবে। সেটা আমরা মনিটরিং করব। বেসরকারিভাবে এই চাল আমদানি করে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

তিনি বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ করতেই আমরা বেসরকারিভাবে আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগে ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্ক ছিলো, এখন ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। বেসরকারিভাবে যখন যতটুকু আমদানি করা প্রয়োজন তা করব। বোরো আসার আগে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার সেটাও করব। বোরো মৌসুমে এ অবস্থা থাকলে আবার আমদানি করব।

তিনি আরও বলেন, আমরা কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা ওপেন করেছি। কিন্তু সরকার নির্ধারিত মূল্য মণ প্রতি ১০৪০ টাকা, কিন্তু বাইরে কৃষকরা ধান বিক্রি করে বেনিফিট হলে সরকারের কাছে বিক্রি করে না। কারণ আজকেও বাইরে ১২০০ টাকা মণ দাম আছে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

বিজনেস আওয়ার/২৮ ডিসেম্বর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

চাল কিনতে ভোক্তার নাভিশ্বাস বাড়ছেই

পোস্ট হয়েছে : ১১:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : করোনার মধ্যেও গত কয়েক মাস ধরেই চালের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সরু থেকে শুরু করে মাঝারি ও মোটা চালের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। বাজার পরিস্থিতি এমন হয়েছে মিল পর্যায়েই প্রতি বস্তা চাল (৫০ কেজি) ৩ মাসের ব্যবধানে ৭শ’ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর এ বাড়তি দরে চাল কিনতে ভোক্তার নাভিশ্বাস বাড়ছেই।

জানা গেছে, মিলপর্যায়ে প্রতি বস্তা মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকা। যা ৩ মাস আগে ছিল ২ হাজার ৩শ’ টাকা। মাঝারি মানের চালের মধ্যে বিআর-২৮ জাত প্রতি বস্তা বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৬শ’ টাকা। যা ৩ মাস আগে ছিল ২ হাজার টাকা। আর মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১৫০ থেকে ২ হাজার ২শ’ টাকা। যা ৩ মাস আগে ছিল ২ হাজার টাকা।

জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী চালের দাম বাড়িয়েছে। তাই সরকারের উচিত, সরকারি গুদামে মজুদ বাড়িয়ে ও বাজার তদারকি করে চালের দাম কমিয়ে আনা। এতে ভোক্তার স্বস্তি ফিরবে।

রাজধানীর পাইকারি বাজারে মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৫০ থেকে ৩ হাজার ১০০ টাকা। যা ৩ মাস আগে ছিল ২ হাজার ৬শ’ টাকা। বিআর-২৮ চাল বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৭শ’ টাকা। যা ৩ মাস আগে ছিল ২ হাজার ৪শ’ টাকা। আর স্বর্ণা জাতের চাল প্রতি বস্তা বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ২শ’ টাকা। যা ৩ মাস আগে ছিল ২ হাজার ১৫০ টাকা।যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে।

শনিবার প্রতি কেজি মিনিকেট ও নাজিরশাল বিক্রি হয়েছে ৬২ থেকে সর্বোচ্চ ৬৭ টাকা। যা ৩ মাস আগে ছিল ৫৫-৫৭ টাকা। বিআর ২৮ চাল বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৬০ টাকা, ৩ মাস আগে ছিল ৪৮-৫০ টাকা। মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৫০-৫২ টাকা, যা ৩ মাস আগে ছিল ৪৫ টাকা।

এ প্রসঙ্গে কারওয়ান বাজারের পাইকারি চাল বিক্রেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এ বছর করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকে (মার্চের শেষে) মিলাররা নানা অজুহাতে চালের দাম বাড়িয়েছে। কখনও সরবরাহ সংকট, কখনও শ্রমিক নাই মিল বন্ধ আবার কখনও ধানের দাম বেশি- এ করেই চালের দাম বাড়াচ্ছে মিলাররা। তারা বছরের শেষ সময় এসেও চালের দাম বাড়িয়েই যাচ্ছে।

এদিকে বেসরকারিভাবে চাল আমদানি করে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য ২৫ শতাংশ শুল্কে বেসরকারিভাবে বৈধ ব্যবসায়ীদের চাল আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্রমজুমদার। রোববার (২৭ ডিসেম্বর) চালের বাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে অনলাইনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ২৫ শতাংশ শুল্কে চাল আমদানি করতে পারবেন বেসরকারি ব্যবসায়ীরা। যারা বৈধ লাইসেন্সধারী আছেন তারা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করবেন ১০ জানুয়ারির মধ্যে। মন্ত্রণালয় কাকে কতটুকু ছাড়পত্র দেবে সেটার এলসি হবে। সেটা আমরা মনিটরিং করব। বেসরকারিভাবে এই চাল আমদানি করে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

তিনি বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ করতেই আমরা বেসরকারিভাবে আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগে ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্ক ছিলো, এখন ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। বেসরকারিভাবে যখন যতটুকু আমদানি করা প্রয়োজন তা করব। বোরো আসার আগে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার সেটাও করব। বোরো মৌসুমে এ অবস্থা থাকলে আবার আমদানি করব।

তিনি আরও বলেন, আমরা কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা ওপেন করেছি। কিন্তু সরকার নির্ধারিত মূল্য মণ প্রতি ১০৪০ টাকা, কিন্তু বাইরে কৃষকরা ধান বিক্রি করে বেনিফিট হলে সরকারের কাছে বিক্রি করে না। কারণ আজকেও বাইরে ১২০০ টাকা মণ দাম আছে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

বিজনেস আওয়ার/২৮ ডিসেম্বর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: