ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসলামে আত্মহত্যা মহাপাপ ও অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ

  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুন ২০২০
  • 7

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক : ইসলামে আত্মহত্যা করা মহাপাপ ও অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ। সমাজে অনেক লোক আছে, যারা জীবনযাপনের কঠিন দুঃখ-দুর্দশা ও ব্যর্থতার গ্লানি থেকে পরিত্রাণের জন্য আবেগের বশবর্তী হয়ে বেছে নেয় আত্মহননের পথ। তখন তার বিবেক-বুদ্ধি আত্মবোধ, মনুষত্ব বলতে কিছুই থাকে না।

এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা তোমাদের নিজেদের হত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ওপর করুণাময়।’ -সূরা আন নিসা: ২৯-৩০

পারিবারিক বিপর্যয় কিংবা মানসিক অশান্তিসহ নানা সঙ্কটে ইসলাম মানুষকে ধৈর্যধারণের কথা বলেছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদাররা! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন।’ -সূরা বাকারা: ১৫৩

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমি অবশ্যই তোমাদেরকে কিছু না কিছু দিয়ে পরীক্ষায় ফেলবোই, মাঝে-মধ্যে তোমাদেরকে বিপদের আতঙ্ক, ক্ষুধার কষ্ট দিয়ে, সম্পদ, জীবন, পণ্য-ফল-ফসল হারানোর মধ্য দিয়ে। আর যারা কষ্টের মধ্যেও ধৈর্য-নিষ্ঠার সঙ্গে চেষ্টা করে, তাদেরকে সুখবর দাও।’ –সূরা আল বাকারা: ১৫৫

আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করেন, ‘বলো, হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ। তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেন। সন্দেহ নেই, তিনিই ক্ষমাশীল দয়ালু।’ -সূরা যুমার: ৫৩

তাই নিরাশ হওয়া যাবে না, কারণ নিরাশ হওয়া কুফরির নামান্তর। দুনিয়ার কষ্ট লাঘব করার জন্য মানুষ আত্মহত্যা করে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সে কষ্টকে লাঘব করেনি বরং নিজেকে এক সুনিশ্চিত ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে। হাদিসে আত্মহত্যাকারীর ব্যাপারে জঘন্য হুঁশিয়ারী এসেছে।

হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামেও তার সেই যন্ত্রণাকে অব্যাহত রাখা হবে। আর যে ব্যক্তি ধারালো কোনো কিছু দিয়ে আত্মহত্যা করবে, তার সেই যন্ত্রণাকেও জাহান্নামে অব্যাহত রাখা হবে।’ –সহিহ বোখারি

কোরআনে কারিমে এমন কিছু আয়াত রয়েছে, যেগুলো আমাদেরকে জীবনের প্রকৃত অবস্থাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। কিছু আয়াত রয়েছে যা আমাদেরকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় আমরা কীভাবে নিজেরাই নিজেদের জীবনটাকে কষ্টের মধ্যে ফেলে দেই। আর কিছু আয়াত রয়েছে যা আমাদেরকে জীবনের সব দুঃখ, কষ্ট, ভয় হাসিমুখে পার করার শক্তি-সাহস জোগায়।

এ জন্য আমরা নিজেদের এবং সন্তানদের ধর্মীয় শিক্ষা ও ধর্মীয় অনুভূতি জাগিয়ে তুলি তাহলে আমাদের সমাজ ধীরে ধীরে আত্মহত্যার প্রবণতা থেকে বের হয়ে আসতে সক্ষম হবে। আল্লাহতায়ালা আমাদের এ জঘণ্য অপবাদ থেকে বেছে থাকার তওফিক দান করুন। আমিন।

বিজনেস আওয়ার/০৮ জুন, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ইসলামে আত্মহত্যা মহাপাপ ও অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ

পোস্ট হয়েছে : ০৪:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুন ২০২০

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক : ইসলামে আত্মহত্যা করা মহাপাপ ও অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ। সমাজে অনেক লোক আছে, যারা জীবনযাপনের কঠিন দুঃখ-দুর্দশা ও ব্যর্থতার গ্লানি থেকে পরিত্রাণের জন্য আবেগের বশবর্তী হয়ে বেছে নেয় আত্মহননের পথ। তখন তার বিবেক-বুদ্ধি আত্মবোধ, মনুষত্ব বলতে কিছুই থাকে না।

এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা তোমাদের নিজেদের হত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ওপর করুণাময়।’ -সূরা আন নিসা: ২৯-৩০

পারিবারিক বিপর্যয় কিংবা মানসিক অশান্তিসহ নানা সঙ্কটে ইসলাম মানুষকে ধৈর্যধারণের কথা বলেছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদাররা! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন।’ -সূরা বাকারা: ১৫৩

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমি অবশ্যই তোমাদেরকে কিছু না কিছু দিয়ে পরীক্ষায় ফেলবোই, মাঝে-মধ্যে তোমাদেরকে বিপদের আতঙ্ক, ক্ষুধার কষ্ট দিয়ে, সম্পদ, জীবন, পণ্য-ফল-ফসল হারানোর মধ্য দিয়ে। আর যারা কষ্টের মধ্যেও ধৈর্য-নিষ্ঠার সঙ্গে চেষ্টা করে, তাদেরকে সুখবর দাও।’ –সূরা আল বাকারা: ১৫৫

আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করেন, ‘বলো, হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ। তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেন। সন্দেহ নেই, তিনিই ক্ষমাশীল দয়ালু।’ -সূরা যুমার: ৫৩

তাই নিরাশ হওয়া যাবে না, কারণ নিরাশ হওয়া কুফরির নামান্তর। দুনিয়ার কষ্ট লাঘব করার জন্য মানুষ আত্মহত্যা করে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সে কষ্টকে লাঘব করেনি বরং নিজেকে এক সুনিশ্চিত ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে। হাদিসে আত্মহত্যাকারীর ব্যাপারে জঘন্য হুঁশিয়ারী এসেছে।

হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামেও তার সেই যন্ত্রণাকে অব্যাহত রাখা হবে। আর যে ব্যক্তি ধারালো কোনো কিছু দিয়ে আত্মহত্যা করবে, তার সেই যন্ত্রণাকেও জাহান্নামে অব্যাহত রাখা হবে।’ –সহিহ বোখারি

কোরআনে কারিমে এমন কিছু আয়াত রয়েছে, যেগুলো আমাদেরকে জীবনের প্রকৃত অবস্থাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। কিছু আয়াত রয়েছে যা আমাদেরকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় আমরা কীভাবে নিজেরাই নিজেদের জীবনটাকে কষ্টের মধ্যে ফেলে দেই। আর কিছু আয়াত রয়েছে যা আমাদেরকে জীবনের সব দুঃখ, কষ্ট, ভয় হাসিমুখে পার করার শক্তি-সাহস জোগায়।

এ জন্য আমরা নিজেদের এবং সন্তানদের ধর্মীয় শিক্ষা ও ধর্মীয় অনুভূতি জাগিয়ে তুলি তাহলে আমাদের সমাজ ধীরে ধীরে আত্মহত্যার প্রবণতা থেকে বের হয়ে আসতে সক্ষম হবে। আল্লাহতায়ালা আমাদের এ জঘণ্য অপবাদ থেকে বেছে থাকার তওফিক দান করুন। আমিন।

বিজনেস আওয়ার/০৮ জুন, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: