ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সব মানুষকে বীমার আওতায় আনতে হবে: ড. এম. মোশারফ হোসেন

  • পোস্ট হয়েছে : ০৩:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২১
  • 64

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : দেশের সব শ্রেণীর মানুষকে বীমা খাতের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. এম. মোশারফ হোসেন।

রবিবার (২৪ জানুয়ারি) বাণিজ্য প্রতিদিনের আয়োজিত ‘বীমা খাতের প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, এখন কাউকে যদি প্রশ্ন করা হয়- আপনি কোথায় চাকরি করতে চান। তাহেল উত্তর আসবে- ব্যাংক অথবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। তবে একটা সময় আসবে যখন চাকরির বাজারে বীমা হবে এক নম্বর। আমরা এ লক্ষ্যে বীমা খাতের সিরিজ রিফর্ম করছি।

তিনি বলেন, বীমা খাতের আমরা সুপারভিশন জোরদার করেছি। এই সুপারভিশনের কারণে সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোর প্রফিট অ্যাবিলিটি বেড়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট ছায়েদুর রহমান বলেন, বীমা কোম্পানিগুলোকে নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। ৩০-৪০ কোটি টাকার মূলধন দিয়ে হবে না। এটা আরও অনেক বাড়াতে হবে। তাদের নিজেদরই যদি সক্ষমতা না থাকে, তাহলে অন্যের ঝুঁকি কিভাবে গ্রহণ করবে।

এসময় তিনি বলেন, বীমা কোম্পানিগুলো যদি নিজেদের সক্ষমতা না বাড়ায়, তাহলে আল্লাহ আল্লাহ করা ছাড়া উপায় থাকবে না। কারন তাদের বীমার দাবি পূরনের সক্ষমতায় ঘাটতি রয়েছে। যে কারনে বীমা করার পরে যাতে দূর্ঘটনা না ঘটে বা বীমা দাবি পরিশোধ করতে না হয়, সেকারনে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হয়। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

মূল প্রবন্ধে প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্তকর্তা (সিইও) মো. জালালুল আজিম বলেন, বীমা কোম্পানিগুলো গ্রাহকদের সঠিক সময়ে এবং ঠিকমত দাবির টাকা পরিশোধ করে না। এ কারণে এ খাত ইমেজ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এই ইমেজ সংকট দুর করতে আইডিআরএকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

জালালুল আজিম বলেন, উন্নত দেশে বীমা বাধ্যতামূলক। বীমা ছাড়া ছেলে-মেয়ে স্কুলে ভর্তি করা যায় না। হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া যায় না। কিন্তু আমাদের এখানে বীমার প্রয়োজন হয় না। বীমা খাতের উন্নয়নে আমাদের সামনে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এ জন্য এ খাতের ইমেজ সংকট দুর করতে হবে।

অনুষ্ঠানের আর এক প্রবন্ধ উপস্থাপক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, বৈশ্বিক বীমা শিল্পের তুলনায় বাংলাদেশের বীমা শিল্প খুবই নগণ্য। এখানে মাথাপিছু বীমা ব্যয় মাত্র ৯ ডলার। জিডিপির অনুপাতে বীমা প্রিমিয়ামের পরিমাণ প্রায় দশমিক ৫ শতাংশ। অথচ আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে জিডিপির তুলনায় বীমা প্রিমিয়াম প্রায় ৪ শতাংশ। এছাড়া শ্রীলঙ্কায় ১.২৫ শতাংশ, ভিয়েতনামে ২.২৫ শতাংশ ইন্দোনেশিয়ায় ২ শতাংশ, এবং ফিলিপিনে ১ দশমিক ৭২ শতাংশ।

তিনি বলেন, বীমা খাতের বড় সমস্যা আস্থার সংকট। এই আস্থার সংকট দুর করতে দ্রুততার সঙ্গে সঠিক নিয়মে গ্রাহকদের বীমা দাবি পরিশোধ করতে হবে। সেই সঙ্গে ব্যাংক-ইন্স্যুরেন্স (ব্যাংক ও বীমা কোম্পানির অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বীমা পণ্য বিক্রি) চালু করতে হবে।

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান আধ্যাপক মিজানুর রহমান, ন্যাশনাল লাইফের এমডি কাজিম উদ্দিন ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমির প্রধান ইবরাহীম হোসেন।

বিজনেস আওয়ার/২৪ ডিসেম্বর, ২০২১/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সব মানুষকে বীমার আওতায় আনতে হবে: ড. এম. মোশারফ হোসেন

পোস্ট হয়েছে : ০৩:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : দেশের সব শ্রেণীর মানুষকে বীমা খাতের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. এম. মোশারফ হোসেন।

রবিবার (২৪ জানুয়ারি) বাণিজ্য প্রতিদিনের আয়োজিত ‘বীমা খাতের প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, এখন কাউকে যদি প্রশ্ন করা হয়- আপনি কোথায় চাকরি করতে চান। তাহেল উত্তর আসবে- ব্যাংক অথবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। তবে একটা সময় আসবে যখন চাকরির বাজারে বীমা হবে এক নম্বর। আমরা এ লক্ষ্যে বীমা খাতের সিরিজ রিফর্ম করছি।

তিনি বলেন, বীমা খাতের আমরা সুপারভিশন জোরদার করেছি। এই সুপারভিশনের কারণে সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোর প্রফিট অ্যাবিলিটি বেড়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট ছায়েদুর রহমান বলেন, বীমা কোম্পানিগুলোকে নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। ৩০-৪০ কোটি টাকার মূলধন দিয়ে হবে না। এটা আরও অনেক বাড়াতে হবে। তাদের নিজেদরই যদি সক্ষমতা না থাকে, তাহলে অন্যের ঝুঁকি কিভাবে গ্রহণ করবে।

এসময় তিনি বলেন, বীমা কোম্পানিগুলো যদি নিজেদের সক্ষমতা না বাড়ায়, তাহলে আল্লাহ আল্লাহ করা ছাড়া উপায় থাকবে না। কারন তাদের বীমার দাবি পূরনের সক্ষমতায় ঘাটতি রয়েছে। যে কারনে বীমা করার পরে যাতে দূর্ঘটনা না ঘটে বা বীমা দাবি পরিশোধ করতে না হয়, সেকারনে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হয়। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

মূল প্রবন্ধে প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্তকর্তা (সিইও) মো. জালালুল আজিম বলেন, বীমা কোম্পানিগুলো গ্রাহকদের সঠিক সময়ে এবং ঠিকমত দাবির টাকা পরিশোধ করে না। এ কারণে এ খাত ইমেজ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এই ইমেজ সংকট দুর করতে আইডিআরএকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

জালালুল আজিম বলেন, উন্নত দেশে বীমা বাধ্যতামূলক। বীমা ছাড়া ছেলে-মেয়ে স্কুলে ভর্তি করা যায় না। হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া যায় না। কিন্তু আমাদের এখানে বীমার প্রয়োজন হয় না। বীমা খাতের উন্নয়নে আমাদের সামনে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এ জন্য এ খাতের ইমেজ সংকট দুর করতে হবে।

অনুষ্ঠানের আর এক প্রবন্ধ উপস্থাপক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, বৈশ্বিক বীমা শিল্পের তুলনায় বাংলাদেশের বীমা শিল্প খুবই নগণ্য। এখানে মাথাপিছু বীমা ব্যয় মাত্র ৯ ডলার। জিডিপির অনুপাতে বীমা প্রিমিয়ামের পরিমাণ প্রায় দশমিক ৫ শতাংশ। অথচ আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে জিডিপির তুলনায় বীমা প্রিমিয়াম প্রায় ৪ শতাংশ। এছাড়া শ্রীলঙ্কায় ১.২৫ শতাংশ, ভিয়েতনামে ২.২৫ শতাংশ ইন্দোনেশিয়ায় ২ শতাংশ, এবং ফিলিপিনে ১ দশমিক ৭২ শতাংশ।

তিনি বলেন, বীমা খাতের বড় সমস্যা আস্থার সংকট। এই আস্থার সংকট দুর করতে দ্রুততার সঙ্গে সঠিক নিয়মে গ্রাহকদের বীমা দাবি পরিশোধ করতে হবে। সেই সঙ্গে ব্যাংক-ইন্স্যুরেন্স (ব্যাংক ও বীমা কোম্পানির অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বীমা পণ্য বিক্রি) চালু করতে হবে।

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান আধ্যাপক মিজানুর রহমান, ন্যাশনাল লাইফের এমডি কাজিম উদ্দিন ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমির প্রধান ইবরাহীম হোসেন।

বিজনেস আওয়ার/২৪ ডিসেম্বর, ২০২১/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: