ঢাকা , রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আল জাজিরার সেই প্রতিবেদন অনলাইন থেকে সরাতে রায় প্রকাশ

  • পোস্ট হয়েছে : ১২:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ মার্চ ২০২১
  • 75

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : কাতারভিত্তিক চ্যানেল আল জাজিরা টেলিভিশনে প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সরানোর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) তাৎক্ষণিকভাবে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলেছেন আদালত।

রায়ে ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম কর্তৃপক্ষ যেন প্রতিবেদনটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অনলাইন থেকে সরিয়ে ফেলে এবং পুনরায় আপলোড না করে সেই বিষয়ে অনুরোধ জানাতে বলা হয়েছে। সোমবার (১৫ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার বেঞ্চ এ রায় প্রকাশ করেন। আদালত বিশেষ ক্ষমতাবলে স্ব-প্রণোদিতভাবে এ রায় দিয়েছেন।

এর আগে ১৭ মার্চ আল জাজিরা টেলিভিশন নেটওয়ার্কে প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটারসহ সব অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে সরানোর নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সেদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রেজা-ই রাকিব। রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমন।

উল্লেখ্য, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে ছয় অ্যামিকাস কিউরির মধ্যে পাঁচজন আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধের বিপক্ষে মত দেন। এ পাঁচজন হলেন- জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, ফিদা এম কামাল, কামাল উল আলম, প্রবীর নিয়োগী ও শাহদীন মালিক। পাঁচ অ্যামিকাস কিউরি এ বিষয়ে করা রিটটি গ্রহণযোগ্য নয় বলেও মতামত তুলে ধরেন। একজন অ্যামিকাস কিউরি দেশে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধের পক্ষে মত দেন। তিনি হলেন সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু।

এ প্রসঙ্গে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামাল উল আলম বলেন, রিট আবেদনকারীর সংক্ষুব্ধ হওয়ার যৌক্তিকতা নেই। রিটটি গ্রহণযোগ্য নয়। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তিকে বিতর্কিত করা হলে রাষ্ট্রকেই বিতর্কিত করা হয়। ঘণ্টাব্যাপী একটি প্রতিবেদন সম্প্রচার হলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম বলা হচ্ছে। অভিযোগ করা হচ্ছে। কিন্তু তার সঙ্গে কোনো যোগসূত্র দেখাতে পারল না।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী আদালতে বলেন, দেশে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ করা উচিত হবে না। এ বিষয়ে করা রিটটি গ্রহণযোগ্য নয়।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি দেশে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধে ও অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ নামক প্রতিবেদনটি সরাতে হাইকোর্ট কোনো আদেশ দিতে পারে কি না ও রিটের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে মতামত জানতে ছয় জন অ্যামিক্যাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) নিয়োগ দেন হাইকোর্ট।

এর আগের দিন ৮ ফেব্রুয়ারি আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে সংবাদমাধ্যমটিতে প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ প্রতিবেদনটি ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটারসহ সব অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে অপসারণ করার নির্দেশনা চাওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এনামুল কবীর ইমন এ রিট দায়ের করেন।

রিটে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্যপ্রযুক্তি সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

উল্লেখ্য, আল জাজিরায় গত ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সম্প্রচারিত হয়, যা ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। প্রতিবেদনে উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। সরকারিভাবে প্রতিবেদনটির তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও এ প্রতিবেদনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/১৫ মার্চ, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

আল জাজিরার সেই প্রতিবেদন অনলাইন থেকে সরাতে রায় প্রকাশ

পোস্ট হয়েছে : ১২:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ মার্চ ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : কাতারভিত্তিক চ্যানেল আল জাজিরা টেলিভিশনে প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সরানোর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) তাৎক্ষণিকভাবে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলেছেন আদালত।

রায়ে ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম কর্তৃপক্ষ যেন প্রতিবেদনটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অনলাইন থেকে সরিয়ে ফেলে এবং পুনরায় আপলোড না করে সেই বিষয়ে অনুরোধ জানাতে বলা হয়েছে। সোমবার (১৫ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার বেঞ্চ এ রায় প্রকাশ করেন। আদালত বিশেষ ক্ষমতাবলে স্ব-প্রণোদিতভাবে এ রায় দিয়েছেন।

এর আগে ১৭ মার্চ আল জাজিরা টেলিভিশন নেটওয়ার্কে প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটারসহ সব অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে সরানোর নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সেদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রেজা-ই রাকিব। রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমন।

উল্লেখ্য, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে ছয় অ্যামিকাস কিউরির মধ্যে পাঁচজন আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধের বিপক্ষে মত দেন। এ পাঁচজন হলেন- জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, ফিদা এম কামাল, কামাল উল আলম, প্রবীর নিয়োগী ও শাহদীন মালিক। পাঁচ অ্যামিকাস কিউরি এ বিষয়ে করা রিটটি গ্রহণযোগ্য নয় বলেও মতামত তুলে ধরেন। একজন অ্যামিকাস কিউরি দেশে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধের পক্ষে মত দেন। তিনি হলেন সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু।

এ প্রসঙ্গে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামাল উল আলম বলেন, রিট আবেদনকারীর সংক্ষুব্ধ হওয়ার যৌক্তিকতা নেই। রিটটি গ্রহণযোগ্য নয়। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তিকে বিতর্কিত করা হলে রাষ্ট্রকেই বিতর্কিত করা হয়। ঘণ্টাব্যাপী একটি প্রতিবেদন সম্প্রচার হলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম বলা হচ্ছে। অভিযোগ করা হচ্ছে। কিন্তু তার সঙ্গে কোনো যোগসূত্র দেখাতে পারল না।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী আদালতে বলেন, দেশে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ করা উচিত হবে না। এ বিষয়ে করা রিটটি গ্রহণযোগ্য নয়।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি দেশে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধে ও অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ নামক প্রতিবেদনটি সরাতে হাইকোর্ট কোনো আদেশ দিতে পারে কি না ও রিটের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে মতামত জানতে ছয় জন অ্যামিক্যাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) নিয়োগ দেন হাইকোর্ট।

এর আগের দিন ৮ ফেব্রুয়ারি আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে সংবাদমাধ্যমটিতে প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ প্রতিবেদনটি ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটারসহ সব অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে অপসারণ করার নির্দেশনা চাওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এনামুল কবীর ইমন এ রিট দায়ের করেন।

রিটে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্যপ্রযুক্তি সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

উল্লেখ্য, আল জাজিরায় গত ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সম্প্রচারিত হয়, যা ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। প্রতিবেদনে উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। সরকারিভাবে প্রতিবেদনটির তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও এ প্রতিবেদনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/১৫ মার্চ, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: