ঢাকা , রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নর্দার্ণ জুটের শেয়ার কারসাজিতে মুনাফা ১৭.৭৭ কোটি টাকা, জরিমানা ৪.৬৬ কোটি

বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে কারসাজি করে কখনো শাস্তির কবলে পড়তে হলেও সেটা ওই অবৈধ উপায়ের আয়ের তুলনায় জরিমানা অনেক কম হয়ে থাকে। এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। যেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি অধ্যাপক শিবলী ‍রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশনও। অথচ শেয়ারবাজারে কারসাজিরোধে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে আয়ের তুলনায় কম শাস্তিকে দায়ী বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পরে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানকে শাস্তির আওতায় আনে। এরমধ্যে গত ২০ জানুয়ারি নর্দার্ণ জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির শেয়ার কারসাজিতে ১৫ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এই শাস্তির বিষয়ে গত ৭ মার্চ অভিযুক্তদেরকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেয় কমিশন।

কিন্তু ওই ১৫ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান কারসাজিতে মুনাফা করে ১৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। যা কোম্পানিটির ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত শেয়ার কারসাজি তদন্তে গঠিত কমিটির রিপোর্টে প্রকাশ করা হয় এবং অভিযুক্তদেরকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

এই শাস্তি প্রদানের আগে সবাইকে শুনানিতে নিজেদের পক্ষে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয় বিএসইসি। কিন্তু তাদের কারও বক্তব্য কমিশনের কাছে বিবেচনাযোগ্য হয়নি বলে অভিযুক্তদেরকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করে কমিশন।  

তারপরেও কারসাজির তুলনায় শাস্তি কম দিয়েছে কমিশন। এসব কারনে শেয়ারবাজার থেকে অনিয়ম দূর করা সম্ভব হচ্ছে না বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, যদি অবৈধ আয়ের তুলনায় শাস্তি কম দেওয়া হয়, তাহলে এর মাধ্যমে অনেকটা কারসাজিকে উৎসাহিত করা হয়।

এ বিষয়ে শেয়ারবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বিজনেস আওয়ারকে বলেন, কারসাজির আয়ের তুলনায় কম শাস্তি দিয়ে কখনো সমস্যা কাটিয়ে উঠা সম্ভব না। অন্তত্বপক্ষে সমপরিমাণ শাস্তি দেওয়া দরকার। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে নর্দার্ণ জুটের ক্ষেত্রে কম দেওয়া হলেও অনেক সময় সেটাও হয় না। আর কম শাস্তি দেওয়ার পরেও আদায় কি পরিমাণ হয়, সেখানেও ভাবনার বিষয় আছে।

২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ি, কারসাজিকাররা নর্দার্ণ জুটে কৃত্রিম দর বৃদ্ধির মাধ্যমে ১৭ কোটি ৭৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকার মুনাফা করে। এরমধ্যে রিয়েলাইজড গেইন ২ কোটি ৩১ লাখ ১২ হাজার টাকা ও আনরিয়েলাইজড গেইন ১৫ কোটি ৪৫ লাখ ৫২ হাজার টাকা ছিল।

এ বিষয়ে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বিজনেস আওয়ারকে বলেন, যেহেতু মামলার বিষয়, তাই বিস্তারিত না জেনে কিছু বলা ঠিক হবে না।  

নর্দার্ণ জুটের এই কারসাজিতে ৪টি দল সক্রিয় ভূমিকা রাখে। যারা ওইসময় সিরিজ লেনদেনের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য শেয়ার কিনে বাজারে কৃত্রিম চাহিদা তৈরী করে এবং দর বাড়ায়। এই ৪টি দলের নেতৃত্বে ছিলেন আমানত উল্লাহ, সালেক আহমেদ সিদ্দিকি, পরিমল চন্দ্র পাল ও শিউলী পাল।

আমানত উল্লাহর নেতৃত্বে ৮টি বিও হিসাব থেকে নর্দার্ণ জুটের শেয়ার কারসাজিতে ভূমিকা রাখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। ওই সময়কালীন মোট লেনদেনের মধ্যে ৪ অক্টোবর ২০.৪৮%, ৮ অক্টোবর ১৬.৯৭%, ৯ অক্টোবর ২৮.৪৩%, ১০ অক্টোবর ৩২.০৮%, ১৭ অক্টোবর ১১.৮৪%, ২১ অক্টোবর ১০.০৪%, ২৪ অক্টোবর ২১.৭৫%, ১ নভেম্বর ১৮.৫৫%, ৫ নভেম্বর ১১.২২% ও ৭ নভেম্বর ২৮.০৬% শতাংশ শেয়ার কেনা হয়।

­

আমানত উল্লাহ, তার সেলফোন নাম্বার ও ইমেইল অ্যাড্রেসের সন্দীপ কর্পোরেশন ও হাল ইন্টারন্যাশনাল, আমানত উল্লাহর কন্যা সেতারা বেগম, হাল ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যানের ভাই প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার) কারসাজির মাধ্যমে ১ কোটি ১৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ১০ কোটি ৮০ লাখ ৬৬ হাজার টাকার আনরিয়েলাইজড গেইন করে।

এরমধ্যে আমানত উল্লাহ ২টি বিও থেকে ৩৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ৩ কোটি ৩৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার আনরিয়েলাইজড, সন্দীপ কর্পোরেশন ৩টি বিও থেকে ৩৩ লাখ ৬ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকার আনরিয়েলাইজড, সেতারা বেগম ৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ৪ লাখ ১২ হাজার টাকার আনরিয়েলাইডজ, হাল ইন্টারন্যাশনাল ১৫ লাখ ৮৭ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ১ কোটি ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকার আনরিয়েলা্ইজড এবং প্রশান্ত কুমার হালদার ২৫ লাখ ৬৯ হাজার টাকার রিয়েলাইজড গেইন করে।

কিন্তু তাদেরকে জরিমানা করা হয়েছে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এরমধ্যে আমানত উল্লাহকে ১ কোটি টাকা, সন্দীপ কর্পোরেশনকে ৬০ লাখ টাকা, হাল ইন্টারন্যাশনালকে ৮৫ লাখ টাকা, সেতারা বেগমকে ৫ লাখ টাকা ও প্রশান্ত কুমার হালদারকে ২৫ লাখ টাকা।

সালেক আহমেদ ও সহযোগি মনির হোসেন মিলে নর্দার্ণ জুটে কারসাজি করে ৬৬ লাখ ৬৩ হাজার টাকা গেইন করে। এরমধ্যে রিয়েলাইজড গেইন ৩৭ লাখ ৯০ হাজার এবং আনরিয়েলাজেইড ২৮ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। কিন্তু এর বিপরীতে সালেক আহমেদ সিদ্দিকীকে জরিমানা করা হয়েছে মাত্র ৭ লাখ টাকা।

অথচ সালেক আহমেদ ও তার সহযোগি মিলে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত বড় সংখ্যক শেয়ার লেনদেন করে। এরমধ্যে ২ অক্টোবর তারা মোট লেনদেনের ৪৩.৮৫ শতাংশ শেয়ার কেনে। এছাড়া ৩ অক্টোবর ১৩.৯১ শতাংশ ও ৪ নভেম্বর ৩১.৫৮ শতাংশ ক্রয় করে। এই বিশাল পরিমাণ ক্রয়ের মাধ্যমে বাজারে চাহিদা তৈরী করে। যা শেয়ারটির অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধিতে প্রভাব বিস্তার করে।

এই ৬জন মিলে একই বছরের ৯ অক্টোবর মোট লেনদেনের ১৬.২৭% শেয়ার কিনে। এরপরে ১০ অক্টোবর ১২.৩১%, ১৫ অক্টোবর ১১.৫২%, ১৬ অক্টোবর ১৯.৯৫%, ১৮ অক্টোবর ১৭.৫৩%, ২১ অক্টোবর ১১.৫০%, ২৪ অক্টোবর ১৭.৫৬%, ২৮ অক্টোবর ৩৭.৭৬%, ৩১ অক্টোবর ২৯.৮৭%, ১ নভেম্বর ২৪.৩৯%, ৫ নভেম্বর ১৩.৯১%, ৬ নভেম্বর ১৮.৯৯%, ৭ নভেম্বর ৪১.৬৭%, ৮ নভেম্বর ৫০.১৮% এবং ১১ নভেম্বর ৫৮.৬২% শতাংশ কিনে।

এই অস্বাভাবিক ক্রয়ের মাধ্যমে কৃত্রিম দর বাড়িয়ে অমল কৃষ্ণ দাস, বিধান মিস্ত্রী, মো. তোফাজ্জল হোসাইন, মল্লিক আবু বকর, রিপন শেখ ও পরিমল চন্দ্র পাল রিয়েলাইজড ৬৩ হাজার টাকার ও আনরিয়েলাইজড ২ কোটি ২ লাখ ১৩ হাজার টাকা গেইন করে। এরমধ্যে অমল কৃষ্ণ দাস ৩৪ লাখ ৪০ হাজার টাকার, বিধান মিস্ত্রী ২৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকার, মল্লিক আবু বকর ১৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকার, রিপন শেখ ৩৮ লাখ ৩৩ হাজার টাকার ও পরিমল চন্দ্র পাল ২৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকার আনরিয়েলাইজড গেইন করে। আর মো. তোফাজ্জল হোসাইন ৬৩ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ৬২ লাখ ৪২ হাজার টাকার আনরিয়েলাইজড গেইন করে।   

কিন্তু তাদেরকে কমিশন জরিমানা করেছে মাত্র ১ কোটি ২ লাখ টাকা। এরমধ্যে অমল কৃষ্ণ দাসকে ৭ লাখ টাকা, বিধান মিস্ত্রীকে ৫ লাখ টাকা, মল্লিক আবু বকরকে ১০ লাখ টাকা, রিপন শেখকে ২০ লাখ টাকা ও পরিমল চন্দ্র পাল ২০ লাখ টাকা ও মো. তোফাজ্জল হোসাইনকে ৪০ লাখ টাকা জরিামানা করে।

এই ৪ বিও হিসাব থেকেও ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত অস্বাভাবিক লেনদেন করা হয়। এরা সম্মিলিতভাবে ১ অক্টোবর মোট লেনদেনের ১১.০১%, ২ অক্টোবর ১০.৭৪% ও ৪ অক্টোবর ১৩.৪২% শেয়ার কিনে নেয়।

এর মাধ্যমে শিউলি পাল, স্বামী সমীর রঞ্জন পাল ও পিতা চিত্ত হারান দত্ত ৭৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকার আনরিয়েলাইজড গেইন করে। এরমধ্যে শিউলী পাল নিজের ২ বিও থেকে ২৬ লাখ ২২ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ১ কোটি ১৭ লাখ ৫৯ হাজার টাকার আনরিয়েলাইজড, সমীর রঞ্জন পাল ৩৪ লাখ ৯০ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ৪৯ লাখ ৯৩ হাজার টাকার আনরিয়েলাইজড এবং চিত্ত হারান দত্ত ১৪ লাখ ৮৩ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ৬৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার আনরিয়েলাইজড গেইন করে।

কিন্তু তাদের ৩ জনকে কমিশন জরিমানা করেছে মাত্র ৮২ লাখ টাকা। এরমধ্যে শিউলী পালকে ৫০ লাখ টাকা, সমীর রঞ্জন পালকে ২০ লাখ টাকা ও চিত্ত হারান দত্তকে ১২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে।

অন্যদিকে জেমস মার্টিন দাস ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক এর শেয়ার কারসাজি করে ১৯ লাখ ১০ হাজার টাকার আনরিয়েলাইজড গেইন করে। কিন্তু কমিশন তাকে একইদিনে মাত্র ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে।

যে ২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারে সক্রিয় লেনদেন করে। এর মাধ্যমে তিনি শেয়ারটির দর বাড়ান এবং চাহিদা সৃষ্টি করেন। এরমধ্যে ওই বছরের ৩ অক্টোবর মোট লেনদেনের ১৬.২৫ শতাংশ ও ৮ অক্টোবর ৩৪.৭০ শতাংশ শেয়ার কিনে নেন।

তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ি, কারসাজিতে সবচেয়ে বেশি আয় করা সন্দীপ কর্পোরেশনের পক্ষে শুনানিতে লিখিত বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানটির মালিক স্বপন কুমার মিস্ত্রী। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, সাধারন ব্যবসার অংশ হিসেবে ৩টি বিও থেকে নর্দার্ণ জুটের শেয়ার লেনদেন শুরু করি। এক্ষেত্রে সাথারন বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষুন্ন করার মতো কোন ইচ্ছা আমার ছিল না। আমি কারসাজির সঙ্গে জড়িত না থাকলেও বিএসইসি ভুলবশত আমাকে কারসাজিকারদের তালিকায় চিহ্নিত করেছে।

তিনি বলেন, নিজস্ব ব্যবসার কারনে লেনদেনকালীন সময় শেয়ারবাজারে মনোযোগ দেওয়া আমার জন্য কঠিন। এছাড়া প্রতিদিন লেনদেনের ক্ষেত্রে আমার যথেষ্ট সময় নেই। এক্ষেত্রে সাইফুল ইসলাম রাসেল ডাটা রক্ষণাবেক্ষন করত। তার তথ্য দিয়ে আমি আপডেট থাকতাম। কিন্তু একই ফোন নাম্বার ও ইমেইল আইডির কারনে কারনে কমিশন ভুলবশত শুনানির জন্য চিঠি ইস্যু করে। আমার অন্য হিসাবধারীদের সঙ্গে কোন সংযোগ নেই। 

তবে নর্দার্ণ জুটের পরিচালনা পর্ষদে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কোম্পানিটির শেয়ার কেনা শুরু করেছিলেন বলে বিএসইসির শুনানিতে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন। এই অবস্থায় কমিশনের কাছে কারসাজির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চান তিনি।

কিন্তু কমিশন তার এই বক্তব্যকে গ্রহণযোগ্য মনে করেনি।

শাস্তির কমের বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বিজনেস আওয়ারকে বলেন, যেকোন বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য প্রথমে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরপরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে শুনানিতে ডাকা হয়। এতে অভিযুক্তদের লিখিত ও মৌখিক জবাব শোনার পরে সবসময় তদন্ত কমিটির সব অভিযোগ প্রমাণিত হয় না। তখন হেয়ারিং কমিটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত অনিয়মগুলো আমলে নেয়। ফলে তদন্ত কমিটির অভিযোগের পুরোটা আয় অবৈধ থাকে না। যাতে অবৈধ আয় এবং শাস্তির মধ্যে পার্থক্য হয়ে থাকে।

বিজনেস আওয়ার/২০ এপ্রিল, ২০২১/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

2 thoughts on “নর্দার্ণ জুটের শেয়ার কারসাজিতে মুনাফা ১৭.৭৭ কোটি টাকা, জরিমানা ৪.৬৬ কোটি

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

নর্দার্ণ জুটের শেয়ার কারসাজিতে মুনাফা ১৭.৭৭ কোটি টাকা, জরিমানা ৪.৬৬ কোটি

পোস্ট হয়েছে : ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ এপ্রিল ২০২১

বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে কারসাজি করে কখনো শাস্তির কবলে পড়তে হলেও সেটা ওই অবৈধ উপায়ের আয়ের তুলনায় জরিমানা অনেক কম হয়ে থাকে। এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। যেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি অধ্যাপক শিবলী ‍রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশনও। অথচ শেয়ারবাজারে কারসাজিরোধে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে আয়ের তুলনায় কম শাস্তিকে দায়ী বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পরে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানকে শাস্তির আওতায় আনে। এরমধ্যে গত ২০ জানুয়ারি নর্দার্ণ জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির শেয়ার কারসাজিতে ১৫ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এই শাস্তির বিষয়ে গত ৭ মার্চ অভিযুক্তদেরকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেয় কমিশন।

কিন্তু ওই ১৫ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান কারসাজিতে মুনাফা করে ১৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। যা কোম্পানিটির ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত শেয়ার কারসাজি তদন্তে গঠিত কমিটির রিপোর্টে প্রকাশ করা হয় এবং অভিযুক্তদেরকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

এই শাস্তি প্রদানের আগে সবাইকে শুনানিতে নিজেদের পক্ষে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয় বিএসইসি। কিন্তু তাদের কারও বক্তব্য কমিশনের কাছে বিবেচনাযোগ্য হয়নি বলে অভিযুক্তদেরকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করে কমিশন।  

তারপরেও কারসাজির তুলনায় শাস্তি কম দিয়েছে কমিশন। এসব কারনে শেয়ারবাজার থেকে অনিয়ম দূর করা সম্ভব হচ্ছে না বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, যদি অবৈধ আয়ের তুলনায় শাস্তি কম দেওয়া হয়, তাহলে এর মাধ্যমে অনেকটা কারসাজিকে উৎসাহিত করা হয়।

এ বিষয়ে শেয়ারবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বিজনেস আওয়ারকে বলেন, কারসাজির আয়ের তুলনায় কম শাস্তি দিয়ে কখনো সমস্যা কাটিয়ে উঠা সম্ভব না। অন্তত্বপক্ষে সমপরিমাণ শাস্তি দেওয়া দরকার। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে নর্দার্ণ জুটের ক্ষেত্রে কম দেওয়া হলেও অনেক সময় সেটাও হয় না। আর কম শাস্তি দেওয়ার পরেও আদায় কি পরিমাণ হয়, সেখানেও ভাবনার বিষয় আছে।

২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ি, কারসাজিকাররা নর্দার্ণ জুটে কৃত্রিম দর বৃদ্ধির মাধ্যমে ১৭ কোটি ৭৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকার মুনাফা করে। এরমধ্যে রিয়েলাইজড গেইন ২ কোটি ৩১ লাখ ১২ হাজার টাকা ও আনরিয়েলাইজড গেইন ১৫ কোটি ৪৫ লাখ ৫২ হাজার টাকা ছিল।

এ বিষয়ে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বিজনেস আওয়ারকে বলেন, যেহেতু মামলার বিষয়, তাই বিস্তারিত না জেনে কিছু বলা ঠিক হবে না।  

নর্দার্ণ জুটের এই কারসাজিতে ৪টি দল সক্রিয় ভূমিকা রাখে। যারা ওইসময় সিরিজ লেনদেনের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য শেয়ার কিনে বাজারে কৃত্রিম চাহিদা তৈরী করে এবং দর বাড়ায়। এই ৪টি দলের নেতৃত্বে ছিলেন আমানত উল্লাহ, সালেক আহমেদ সিদ্দিকি, পরিমল চন্দ্র পাল ও শিউলী পাল।

আমানত উল্লাহর নেতৃত্বে ৮টি বিও হিসাব থেকে নর্দার্ণ জুটের শেয়ার কারসাজিতে ভূমিকা রাখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। ওই সময়কালীন মোট লেনদেনের মধ্যে ৪ অক্টোবর ২০.৪৮%, ৮ অক্টোবর ১৬.৯৭%, ৯ অক্টোবর ২৮.৪৩%, ১০ অক্টোবর ৩২.০৮%, ১৭ অক্টোবর ১১.৮৪%, ২১ অক্টোবর ১০.০৪%, ২৪ অক্টোবর ২১.৭৫%, ১ নভেম্বর ১৮.৫৫%, ৫ নভেম্বর ১১.২২% ও ৭ নভেম্বর ২৮.০৬% শতাংশ শেয়ার কেনা হয়।

­

আমানত উল্লাহ, তার সেলফোন নাম্বার ও ইমেইল অ্যাড্রেসের সন্দীপ কর্পোরেশন ও হাল ইন্টারন্যাশনাল, আমানত উল্লাহর কন্যা সেতারা বেগম, হাল ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যানের ভাই প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার) কারসাজির মাধ্যমে ১ কোটি ১৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ১০ কোটি ৮০ লাখ ৬৬ হাজার টাকার আনরিয়েলাইজড গেইন করে।

এরমধ্যে আমানত উল্লাহ ২টি বিও থেকে ৩৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ৩ কোটি ৩৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার আনরিয়েলাইজড, সন্দীপ কর্পোরেশন ৩টি বিও থেকে ৩৩ লাখ ৬ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকার আনরিয়েলাইজড, সেতারা বেগম ৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ৪ লাখ ১২ হাজার টাকার আনরিয়েলাইডজ, হাল ইন্টারন্যাশনাল ১৫ লাখ ৮৭ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ১ কোটি ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকার আনরিয়েলা্ইজড এবং প্রশান্ত কুমার হালদার ২৫ লাখ ৬৯ হাজার টাকার রিয়েলাইজড গেইন করে।

কিন্তু তাদেরকে জরিমানা করা হয়েছে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এরমধ্যে আমানত উল্লাহকে ১ কোটি টাকা, সন্দীপ কর্পোরেশনকে ৬০ লাখ টাকা, হাল ইন্টারন্যাশনালকে ৮৫ লাখ টাকা, সেতারা বেগমকে ৫ লাখ টাকা ও প্রশান্ত কুমার হালদারকে ২৫ লাখ টাকা।

সালেক আহমেদ ও সহযোগি মনির হোসেন মিলে নর্দার্ণ জুটে কারসাজি করে ৬৬ লাখ ৬৩ হাজার টাকা গেইন করে। এরমধ্যে রিয়েলাইজড গেইন ৩৭ লাখ ৯০ হাজার এবং আনরিয়েলাজেইড ২৮ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। কিন্তু এর বিপরীতে সালেক আহমেদ সিদ্দিকীকে জরিমানা করা হয়েছে মাত্র ৭ লাখ টাকা।

অথচ সালেক আহমেদ ও তার সহযোগি মিলে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত বড় সংখ্যক শেয়ার লেনদেন করে। এরমধ্যে ২ অক্টোবর তারা মোট লেনদেনের ৪৩.৮৫ শতাংশ শেয়ার কেনে। এছাড়া ৩ অক্টোবর ১৩.৯১ শতাংশ ও ৪ নভেম্বর ৩১.৫৮ শতাংশ ক্রয় করে। এই বিশাল পরিমাণ ক্রয়ের মাধ্যমে বাজারে চাহিদা তৈরী করে। যা শেয়ারটির অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধিতে প্রভাব বিস্তার করে।

এই ৬জন মিলে একই বছরের ৯ অক্টোবর মোট লেনদেনের ১৬.২৭% শেয়ার কিনে। এরপরে ১০ অক্টোবর ১২.৩১%, ১৫ অক্টোবর ১১.৫২%, ১৬ অক্টোবর ১৯.৯৫%, ১৮ অক্টোবর ১৭.৫৩%, ২১ অক্টোবর ১১.৫০%, ২৪ অক্টোবর ১৭.৫৬%, ২৮ অক্টোবর ৩৭.৭৬%, ৩১ অক্টোবর ২৯.৮৭%, ১ নভেম্বর ২৪.৩৯%, ৫ নভেম্বর ১৩.৯১%, ৬ নভেম্বর ১৮.৯৯%, ৭ নভেম্বর ৪১.৬৭%, ৮ নভেম্বর ৫০.১৮% এবং ১১ নভেম্বর ৫৮.৬২% শতাংশ কিনে।

এই অস্বাভাবিক ক্রয়ের মাধ্যমে কৃত্রিম দর বাড়িয়ে অমল কৃষ্ণ দাস, বিধান মিস্ত্রী, মো. তোফাজ্জল হোসাইন, মল্লিক আবু বকর, রিপন শেখ ও পরিমল চন্দ্র পাল রিয়েলাইজড ৬৩ হাজার টাকার ও আনরিয়েলাইজড ২ কোটি ২ লাখ ১৩ হাজার টাকা গেইন করে। এরমধ্যে অমল কৃষ্ণ দাস ৩৪ লাখ ৪০ হাজার টাকার, বিধান মিস্ত্রী ২৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকার, মল্লিক আবু বকর ১৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকার, রিপন শেখ ৩৮ লাখ ৩৩ হাজার টাকার ও পরিমল চন্দ্র পাল ২৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকার আনরিয়েলাইজড গেইন করে। আর মো. তোফাজ্জল হোসাইন ৬৩ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ৬২ লাখ ৪২ হাজার টাকার আনরিয়েলাইজড গেইন করে।   

কিন্তু তাদেরকে কমিশন জরিমানা করেছে মাত্র ১ কোটি ২ লাখ টাকা। এরমধ্যে অমল কৃষ্ণ দাসকে ৭ লাখ টাকা, বিধান মিস্ত্রীকে ৫ লাখ টাকা, মল্লিক আবু বকরকে ১০ লাখ টাকা, রিপন শেখকে ২০ লাখ টাকা ও পরিমল চন্দ্র পাল ২০ লাখ টাকা ও মো. তোফাজ্জল হোসাইনকে ৪০ লাখ টাকা জরিামানা করে।

এই ৪ বিও হিসাব থেকেও ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত অস্বাভাবিক লেনদেন করা হয়। এরা সম্মিলিতভাবে ১ অক্টোবর মোট লেনদেনের ১১.০১%, ২ অক্টোবর ১০.৭৪% ও ৪ অক্টোবর ১৩.৪২% শেয়ার কিনে নেয়।

এর মাধ্যমে শিউলি পাল, স্বামী সমীর রঞ্জন পাল ও পিতা চিত্ত হারান দত্ত ৭৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকার আনরিয়েলাইজড গেইন করে। এরমধ্যে শিউলী পাল নিজের ২ বিও থেকে ২৬ লাখ ২২ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ১ কোটি ১৭ লাখ ৫৯ হাজার টাকার আনরিয়েলাইজড, সমীর রঞ্জন পাল ৩৪ লাখ ৯০ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ৪৯ লাখ ৯৩ হাজার টাকার আনরিয়েলাইজড এবং চিত্ত হারান দত্ত ১৪ লাখ ৮৩ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ৬৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার আনরিয়েলাইজড গেইন করে।

কিন্তু তাদের ৩ জনকে কমিশন জরিমানা করেছে মাত্র ৮২ লাখ টাকা। এরমধ্যে শিউলী পালকে ৫০ লাখ টাকা, সমীর রঞ্জন পালকে ২০ লাখ টাকা ও চিত্ত হারান দত্তকে ১২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে।

অন্যদিকে জেমস মার্টিন দাস ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক এর শেয়ার কারসাজি করে ১৯ লাখ ১০ হাজার টাকার আনরিয়েলাইজড গেইন করে। কিন্তু কমিশন তাকে একইদিনে মাত্র ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে।

যে ২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারে সক্রিয় লেনদেন করে। এর মাধ্যমে তিনি শেয়ারটির দর বাড়ান এবং চাহিদা সৃষ্টি করেন। এরমধ্যে ওই বছরের ৩ অক্টোবর মোট লেনদেনের ১৬.২৫ শতাংশ ও ৮ অক্টোবর ৩৪.৭০ শতাংশ শেয়ার কিনে নেন।

তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ি, কারসাজিতে সবচেয়ে বেশি আয় করা সন্দীপ কর্পোরেশনের পক্ষে শুনানিতে লিখিত বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানটির মালিক স্বপন কুমার মিস্ত্রী। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, সাধারন ব্যবসার অংশ হিসেবে ৩টি বিও থেকে নর্দার্ণ জুটের শেয়ার লেনদেন শুরু করি। এক্ষেত্রে সাথারন বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষুন্ন করার মতো কোন ইচ্ছা আমার ছিল না। আমি কারসাজির সঙ্গে জড়িত না থাকলেও বিএসইসি ভুলবশত আমাকে কারসাজিকারদের তালিকায় চিহ্নিত করেছে।

তিনি বলেন, নিজস্ব ব্যবসার কারনে লেনদেনকালীন সময় শেয়ারবাজারে মনোযোগ দেওয়া আমার জন্য কঠিন। এছাড়া প্রতিদিন লেনদেনের ক্ষেত্রে আমার যথেষ্ট সময় নেই। এক্ষেত্রে সাইফুল ইসলাম রাসেল ডাটা রক্ষণাবেক্ষন করত। তার তথ্য দিয়ে আমি আপডেট থাকতাম। কিন্তু একই ফোন নাম্বার ও ইমেইল আইডির কারনে কারনে কমিশন ভুলবশত শুনানির জন্য চিঠি ইস্যু করে। আমার অন্য হিসাবধারীদের সঙ্গে কোন সংযোগ নেই। 

তবে নর্দার্ণ জুটের পরিচালনা পর্ষদে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কোম্পানিটির শেয়ার কেনা শুরু করেছিলেন বলে বিএসইসির শুনানিতে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন। এই অবস্থায় কমিশনের কাছে কারসাজির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চান তিনি।

কিন্তু কমিশন তার এই বক্তব্যকে গ্রহণযোগ্য মনে করেনি।

শাস্তির কমের বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বিজনেস আওয়ারকে বলেন, যেকোন বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য প্রথমে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরপরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে শুনানিতে ডাকা হয়। এতে অভিযুক্তদের লিখিত ও মৌখিক জবাব শোনার পরে সবসময় তদন্ত কমিটির সব অভিযোগ প্রমাণিত হয় না। তখন হেয়ারিং কমিটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত অনিয়মগুলো আমলে নেয়। ফলে তদন্ত কমিটির অভিযোগের পুরোটা আয় অবৈধ থাকে না। যাতে অবৈধ আয় এবং শাস্তির মধ্যে পার্থক্য হয়ে থাকে।

বিজনেস আওয়ার/২০ এপ্রিল, ২০২১/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: