ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লাগামহীন নিত্যপন্যের বাজার এখনও চড়া!

  • পোস্ট হয়েছে : ০৫:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ এপ্রিল ২০২১
  • 77

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : একদিকে করোনা মহামারির কারণে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ ও অন্যদিকে রোজা। এমন পরিস্থিতিতে নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন হতে থাকে। দুদফা বিধিনিষেধ এবং ১৪টি রোজা পেরিয়ে গেলেও বাজার এখনও চড়া। বেশিরভাগ পণ্যই এখনও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। সংসারের আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। সব চেয়ে বেশি কষ্টে আছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ।

বুধবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর সুত্রে জানা যায়, শাক-সবজি, গরুর মাংস, মাছসহ বেশিরভাগ পণ্যের দাম চড়া। সেই সাথে এখন নতুন করে আদা রসুন ও পেঁয়াজের দামও বাড়তে শুরু করেছে। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কম রয়েছে।

নিত্যপণ্যের লাগামহীন দামে নাকাল রাজধানীর নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ বলছেন, আয় সীমিত, কিন্তু ব্যয় বেড়েই চলছে। লকডাউনের কারণে অনেকের আয় আগের তুলনায় কমেছে। অন্যদিকে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় খরচ বেড়েছে। এতে করে সংসারের আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলানো অনেকের কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সবজিবিক্রেতা বলেন, রোজার শুরুতে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছিল। এর পর কয়েকটির দাম কিছুটা কমলেও বেশিরভাগ সবজি আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। রোজার শুরুতে বেগুনের দাম অনেক বেড়েছিল। গত সপ্তাহ থেকে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। শসার দাম কমে এখন কেজিতে ৪০ টাকা। গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছিল।

এছাড়া আগের বাড়তি দামেই বাজারে প্রতি কেজি ঝিঙে ও চিচিঙ্গা, ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। কচুর লতি ও বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। কাকরোল ৮০ টাকা। পটল ও করলা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁপে ও ঢেঁড়স। টমেটো ৩০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, আলু ২০ থেকে ২২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাউ ও চালকুমড়া আকারভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা।

লেবু হালিপ্রতি আকারভেদে ১৫ থেকে ৩০ টাকা, কাঁচামরিচ কেজি ৬০ টাকা, ধনে পাতা ও পুদিনা পাতা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকায়। পুঁইশাক, লাউশাক, কলমিশাক, ডাঁটাশাক, লালশাক ও পাটশাক আঁটিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়।

সবজি ক্রেতা জানান, শুধু আলুর দামই একটু কম আছে। বাকি সব সবজির দামই বেশি। বরবটি চাচ্ছে ৭০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা। কী কিনব? প্রতিদিন দুইশ টাকা সবজি কিনতেই চলে যায়। আয় করি কয় টাকা? ফুটপাতে ব্যবসা করতাম এখন লকডাউনে পুলিশ বসতে দেয় না। আয় বন্ধ। নিত্যপণ্যের দামে যে অবস্থা, আমাদের মত নিম্ন আয়ের মানুষের সংসারের ব্যয় মেটানো খুবই কষ্টকর।

বাজারে ছোট দানার মসুর ডাল ১০০ টাকা এবং মোটা দানা ৭০ টাকা, মুগ ডাল ১২০ টাকা, মটর ডাল ১০০ টাকা, ছোলা ৭০ টাকা আর খেসারি ৮০ টাকা, ডাবলি ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া অ্যাংকর ডালের বেসন ৬০ টাকা, বুটের ডালের বেসন ১০০ টাকায় বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।

খুচরা বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। বোতলজাত সয়াবিন তেল কোম্পানিভেদে বিক্রি হচ্ছে এক লিটার ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা এবং পাঁচ লিটার ৬৪০ থেকে ৬৬০ টাকায়। প্রতি কেজি খুচরা (খোলা) সয়াবিন তেল কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩২ থেকে ১৩৫ টাকা আর পাম ওয়েল ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়।

রাস্তায় ভ্যানে এক আদা রসুন ও পেঁয়াজ বিক্রেতা জানান, পেঁয়াজের দাম একটু বেড়েছে। এখন কেজি ৪০ টাকা। আগের সপ্তাহে ৩৫ টাকা ছিল। দেশি আদা ১০০ ও রসুন ৯০ টাকা এবং চায়না রসুন ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আদা-রসুনও কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়েছে। কেন বেড়েছে তার কোনো সঠিক তথ্য দিতে পারেননি এ বিক্রেতা।

এদিকে বাজারে গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। মুরগি ব্যবসায়ী কালাম বলেন, এখন কেজিতে ব্রয়লার বিক্রি করছি ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায়। সোনালিকা (কক) আগের সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ২০ টাকার মতো বেড়েছে। আজকে কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। আর লেয়ার (লাল) বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায়।

গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকা কেজিতে, আর খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকায়। ২৮ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি হালি ডিম। এদিকে আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ।

বিজনেস আওয়ার/২৮ এপ্রিল, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

লাগামহীন নিত্যপন্যের বাজার এখনও চড়া!

পোস্ট হয়েছে : ০৫:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ এপ্রিল ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : একদিকে করোনা মহামারির কারণে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ ও অন্যদিকে রোজা। এমন পরিস্থিতিতে নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন হতে থাকে। দুদফা বিধিনিষেধ এবং ১৪টি রোজা পেরিয়ে গেলেও বাজার এখনও চড়া। বেশিরভাগ পণ্যই এখনও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। সংসারের আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। সব চেয়ে বেশি কষ্টে আছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ।

বুধবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর সুত্রে জানা যায়, শাক-সবজি, গরুর মাংস, মাছসহ বেশিরভাগ পণ্যের দাম চড়া। সেই সাথে এখন নতুন করে আদা রসুন ও পেঁয়াজের দামও বাড়তে শুরু করেছে। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কম রয়েছে।

নিত্যপণ্যের লাগামহীন দামে নাকাল রাজধানীর নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ বলছেন, আয় সীমিত, কিন্তু ব্যয় বেড়েই চলছে। লকডাউনের কারণে অনেকের আয় আগের তুলনায় কমেছে। অন্যদিকে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় খরচ বেড়েছে। এতে করে সংসারের আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলানো অনেকের কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সবজিবিক্রেতা বলেন, রোজার শুরুতে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছিল। এর পর কয়েকটির দাম কিছুটা কমলেও বেশিরভাগ সবজি আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। রোজার শুরুতে বেগুনের দাম অনেক বেড়েছিল। গত সপ্তাহ থেকে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। শসার দাম কমে এখন কেজিতে ৪০ টাকা। গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছিল।

এছাড়া আগের বাড়তি দামেই বাজারে প্রতি কেজি ঝিঙে ও চিচিঙ্গা, ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। কচুর লতি ও বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। কাকরোল ৮০ টাকা। পটল ও করলা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁপে ও ঢেঁড়স। টমেটো ৩০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, আলু ২০ থেকে ২২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাউ ও চালকুমড়া আকারভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা।

লেবু হালিপ্রতি আকারভেদে ১৫ থেকে ৩০ টাকা, কাঁচামরিচ কেজি ৬০ টাকা, ধনে পাতা ও পুদিনা পাতা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকায়। পুঁইশাক, লাউশাক, কলমিশাক, ডাঁটাশাক, লালশাক ও পাটশাক আঁটিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়।

সবজি ক্রেতা জানান, শুধু আলুর দামই একটু কম আছে। বাকি সব সবজির দামই বেশি। বরবটি চাচ্ছে ৭০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা। কী কিনব? প্রতিদিন দুইশ টাকা সবজি কিনতেই চলে যায়। আয় করি কয় টাকা? ফুটপাতে ব্যবসা করতাম এখন লকডাউনে পুলিশ বসতে দেয় না। আয় বন্ধ। নিত্যপণ্যের দামে যে অবস্থা, আমাদের মত নিম্ন আয়ের মানুষের সংসারের ব্যয় মেটানো খুবই কষ্টকর।

বাজারে ছোট দানার মসুর ডাল ১০০ টাকা এবং মোটা দানা ৭০ টাকা, মুগ ডাল ১২০ টাকা, মটর ডাল ১০০ টাকা, ছোলা ৭০ টাকা আর খেসারি ৮০ টাকা, ডাবলি ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া অ্যাংকর ডালের বেসন ৬০ টাকা, বুটের ডালের বেসন ১০০ টাকায় বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।

খুচরা বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। বোতলজাত সয়াবিন তেল কোম্পানিভেদে বিক্রি হচ্ছে এক লিটার ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা এবং পাঁচ লিটার ৬৪০ থেকে ৬৬০ টাকায়। প্রতি কেজি খুচরা (খোলা) সয়াবিন তেল কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩২ থেকে ১৩৫ টাকা আর পাম ওয়েল ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়।

রাস্তায় ভ্যানে এক আদা রসুন ও পেঁয়াজ বিক্রেতা জানান, পেঁয়াজের দাম একটু বেড়েছে। এখন কেজি ৪০ টাকা। আগের সপ্তাহে ৩৫ টাকা ছিল। দেশি আদা ১০০ ও রসুন ৯০ টাকা এবং চায়না রসুন ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আদা-রসুনও কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়েছে। কেন বেড়েছে তার কোনো সঠিক তথ্য দিতে পারেননি এ বিক্রেতা।

এদিকে বাজারে গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। মুরগি ব্যবসায়ী কালাম বলেন, এখন কেজিতে ব্রয়লার বিক্রি করছি ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায়। সোনালিকা (কক) আগের সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ২০ টাকার মতো বেড়েছে। আজকে কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। আর লেয়ার (লাল) বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায়।

গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকা কেজিতে, আর খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকায়। ২৮ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি হালি ডিম। এদিকে আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ।

বিজনেস আওয়ার/২৮ এপ্রিল, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: