বিজনেস আওয়ার ডেস্ক : চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় বহুল আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা মহিবুল্লাহ হত্যা মামলার প্রধান আসামি মো. ইউনুছ মনি ওরফে মইন্যা (৫০)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (৩ মে) সকালে চট্টগ্রামের সহকারী পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন শামীম’র নেতৃত্বে পুলিশের একটি চৌকস দল রাঙ্গুনিয়া উপজেলার শিলক ইউনিয়নের নটুয়ার টিলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুর্গম পাহাড় থেকে তাকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত ইউনুছ মনি রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা সেনবাড়ি এলাকার মৃত নূর হোসেনের পুত্র। তিনি রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। তার বিরুদ্ধে ২০০৭ সাল থেকে শুরু করে চাঁদাবাজি, সরকারি কাজে বাঁধাদান, হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে রাঙ্গুনিয়া থানায় মোট ৫ টি মামলা রয়েছে।
মামলা হওয়ার পর থেকেই ইউনুছ শিলকের দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে আত্মগোপন করেন। শুধু তাই নয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য তিনি দ্রুত স্থান বদলাতেও থাকেন। কয়েকবার কাছাকাছি গিয়েও তাকে গ্রেফতার করা যায়নি বলে অভিযানের সাথে সম্পৃক্ত একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। অবশেষে ধারাবাহিক অভিযানে আজ সকালে ইউনুসের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারে পুলিশ।
পরবর্তীতে অভিযান চালিয়ে রাঙ্গুনিয়ার শিলক নটুয়ার টিলা এলাকা হতে দুর্গম পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যাওয়ার সময় ধাওয়া করে তাকে আটক করা হয়। অভিযানে সার্কেল এএসপি আনোয়ার হোসেন শামীমের নেতৃত্বে রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব মিল্কিসহ একদল পুলিশ সদস্য অংশ নেন।
উল্লেখ্য, নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে একটি রিসোর্টে নারীসহ হেফাজত ইসলামের যুগ্ন মহাসচিব মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে হেফাজতের হামলার প্রথম বলি হয়েছিলেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার আ.লীগ নেতা মো. মহিবুল্লাহ। ৩ এপ্রিল রাত ৮ টার দিকে মামুনুলকে আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে রাঙ্গুনিয়ার কোদালায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন হেফাজত ইসলামসহ স্থানীয় বিএনপি- জামায়াতের নেতা-কর্মীরা।
একপর্যায়ে ৫ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ পাড়া জামে মসজিদের সামনে বিক্ষোভরত হেফাজত কর্মীরা লাটিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। এতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মো. মহিবুল্লাহ, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আবদুল জব্বার ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক দিলদার আজম লিটন আহত হন। গুরুতর আহত মহিবুল্লাহকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে ৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাঙ্গুনিয়া থানায় দাঙ্গা সৃষ্টি ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দুটিতেই বিএনপি-জামায়াতের একাধিক নেতা-কর্মী ও হেফাজত সমর্থকসহ ৬৪ জন এজাহার নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনসহ মোট ২১৪ জনকে আসামি করা হয়। দুই মামলাতেই প্রধান আসামি করা হয় উপজেলা বিএনপি নেতা মো. ইউনুছ মনিকে।
এ প্রসঙ্গে সার্কেল এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, অনেকদিন ধরে নজরদারি চালানোর পর আজ দুপুরে আমরা ইউনুছ মনিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সাথে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। তদন্ত করে এই মামলার ঘটনায় যুক্ত অন্যান্য সকল আসামিকেও অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।
বিজনেস আওয়ার/০৩ মে, ২০২১/এ