ঢাকা , মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫, ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘দেশের স্বার্থে চট্টগ্রাম বন্দরকে স্মোথলি অপারেশনে রাখতে হবে’

  • পোস্ট হয়েছে : ০৬:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ মে ২০২১
  • 86

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : সরকার পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল বানিয়েছে। বর্তমানে বে টার্মিনালের কাজ চলছে। এ টার্মিনালের মাস্টারপ্ল্যান হচ্ছে। এটি অনেক বড় কাজ। বন্দরের নিজস্ব একটি টার্মিনাল থাকবে সেখানে। ফার্স্ট ট্রেকে নিতে হবে। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে চট্টগ্রাম বন্দরকে স্মোথলি অপারেশনে রাখতে হবে। বললেন দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র ও সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মো. রুহুল আমিন।

সোমবার (৩১ মে) আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর তিনি এ কথা জানান।

তরফদার মো. রুহুল আমিন বলেন, বন্দরের ভেতর প্রতিদিন ৪ হাজার কনটেইনার ডেলিভারি হয়। এক কনটেইনারে ৩টি ট্রাক ধরলে ১২ হাজার ট্রাক চলাচল করছে। আশপাশে কনটেইনার ডিপো আছে। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল বন্দর থেকে কনটেইনার ডেলিভারি বাইরে নিয়ে যাওয়া হোক। তারই অংশ হিসেবে বে টার্মিনাল এলাকায় ডেলিভারি ইয়ার্ড ও ট্রাক টার্মিনাল তৈরি করা হচ্ছে। তিন বছর আগে এ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি বলেন, এডিবি ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এ প্রকল্পে অর্থায়নের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। উক্ত প্রকল্পে বন্দরের নিজস্ব একটি টার্মিনাল থাকবে। বে-টার্মিনালকে ফাস্টট্র্যাক প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়ন করতে হবে। ভবিষ্যতে বন্দরে জেটি নির্মাণের ক্ষেত্রে জলবায়ুজনিত কারণে সাগরের উচ্চতা বৃদ্ধির বিষয় বিবেচনা করতে হবে যাতে জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেলেও জেটি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে ব্যবসায়ীরাই মূলতঃ অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখে। বর্তমান বিশ্ব মহামারীর কারণে প্রান্তিক পর্যায় থেকে শুরু করে বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত সব ধরণের ব্যবসায়ীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হয়েছেন। যদিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে।

তিনি বলেন, বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতির দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র করোনা সংক্রান্ত ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে গত বছর তিন ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে এবং এ বছর প্রায় ছয় ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বর্তমানে করোনার ভারতীয় ভেরিয়েন্ট এর কারণে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে লকডাউন চলছে। তাই কলকারখানা চালু রেখে পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব হলেও বিক্রয় করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানকে কর্মী ছাঁটাই করতে হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে গতবারের ন্যায় বা তার চেয়েও বেশী পরিমাণে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আহবান জানায়।

সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ট্যাক্স, ভ্যাট ইত্যাদিতে কোন ছাড় না থাকলেও ঋণের সুদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে নিয়মিত কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ ব্যাংক ঋণ গ্রহীতাদের ক্লাসিফাইড না করার সময়সীমা আগামী ডিসেম্বর-২০২১ পর্যন্ত বর্ধিত করার জন্য সরকারের নিকট অনুরোধ জানাচ্ছি।

লীজিং কোম্পানীর ক্ষেত্রেও একই ধরণের বিধান প্রযোজ্য। কোন উদ্যোক্তার পাঁচটি শিল্প কারখানার মধ্যে একটি শিল্প কারখানা রুগ্ন হলে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ঋণ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নির্দেশনা বাতিল করে কেবলমাত্র নির্দিষ্ট রুগ্ন শিল্প ব্যতিরেকে একই গ্রুপের অন্যান্য শিল্পে ঋণ প্রবাহ অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, দুইশ’ বিলিয়ন ডলারের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য বিবেচনায় দেশীয় ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা দিতে হবে। বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল আমদানিতে অগ্রিম কর আদায় করা হলেও পরবর্তীতে তা যথা সময়ে সমন্বয় করা হয় না। ফলে এসব শিল্প প্রতিষ্ঠানের শত শত কোটি টাকা এনবিআরের তহবিলে জমা থেকে যায়। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানে চলতি মূলধনের ঘাটতি দেখা দেয়। তাই অগ্রিম কর যথাসময়ে সমন্বয় করা এবং অতিরিক্ত আদায়কৃত কর শিল্প প্রতিষ্ঠানকে যথা শীঘ্রই সম্ভব ফেরত প্রদানের জন্য এনবিআরের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, যদি অগ্রিম কর ও আগাম ভ্যাট হ্রাস করা হয় তাহলে প্রতিষ্ঠানগুলোতে নগদ মূলধনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে যা ব্যবসায়িক কর্মকান্ড পরিচালনায় সহায়ক হবে। লাভ-লোকসান নির্বিশেষে টার্ণওভারের ভিত্তিতে ন্যূনতম কর আদায় করার বিধান রহিত করা উচিত বলে তিনি মনে করেন। যেমনঃ ৩ কোটি টাকার বেশী লেনদেন হলে ০.৫% কর দেয়ার বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার করতে হবে। জীবনযাত্রার মান ও ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সাথে বাজেটের আকার বৃদ্ধি করতে হবে। কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে বাজেট প্রণয়ন করতে হবে।

বিদেশে বাংলাদেশীদের বিনিয়োগ সম্পর্কে তিনি বলেন, বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করার জন্য বৈধ পথে দেশ থেকে কোন মূলধন নিতে পারেন না। অথচ ঐসব দেশে তাদের ব্যবসায়ী হিসেবে আরো অনেক ভালো করার সুযোগ রয়েছে। যদি বৈধভাবে দেশ থেকে মূলধন নিয়ে সেই দেশে বিনিয়োগ করা যায় তাহলে দুই তিন বছর পরে বৈধ পথেই আবার ঐসব ব্যবসার লভ্যাংশ দেশে ফেরত আনা সম্ভব হবে। তাই বিদেশে ব্যবসা করার জন্য দেশ থেকে বৈধ পথে মূলধন নেয়ার অনুমতি প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে ৪২ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ থেকে কিছু অংশ বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়ার বিষয় বিবেচনা করা যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রামে চলমান মেগা প্রকল্পগুলো যথাসময়ে সম্পন্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে আসন্ন বাজেটে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশী রাজস্ব চট্টগ্রাম কাস্টমস’র মাধ্যমে আদায় করা হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু চট্টগ্রামকে সরকারিভাবে বাণিজ্যিক রাজধানী ঘোষণা করার দাবী জানান। বাজেট এর আকার বৃদ্ধি পেলেও তা পূর্ণাঙ্গরূপে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই বাজেট যথাযথ বাস্তবায়নের উপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।

ব্যাংকঋণ খেলাপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের সুস্পষ্ট দাবি থাকবে একটি শিল্পগ্রুপের একটি কারখানা খেলাপি হলে বাকি কারখানা বা প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতির মুখে পড়ছে। একদিন দেখা যাবে ওই উদ্যোক্তা দেউলিয়া হয়ে গেছে। বিজনেসম্যানদের সুরক্ষা দিতে হবে। কোনো শিল্পগ্রুপের একটি কারখানা ব্যাংকঋণে খেলাপি হলে যদি অন্য কারখানাগুলো সচল থাকে তাহলে রুগণ কারখানাটিকে সাপোর্ট দিতে পারবে।

বিজনেস আওয়ার/৩১ মে, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

‘দেশের স্বার্থে চট্টগ্রাম বন্দরকে স্মোথলি অপারেশনে রাখতে হবে’

পোস্ট হয়েছে : ০৬:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ মে ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : সরকার পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল বানিয়েছে। বর্তমানে বে টার্মিনালের কাজ চলছে। এ টার্মিনালের মাস্টারপ্ল্যান হচ্ছে। এটি অনেক বড় কাজ। বন্দরের নিজস্ব একটি টার্মিনাল থাকবে সেখানে। ফার্স্ট ট্রেকে নিতে হবে। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে চট্টগ্রাম বন্দরকে স্মোথলি অপারেশনে রাখতে হবে। বললেন দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র ও সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মো. রুহুল আমিন।

সোমবার (৩১ মে) আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর তিনি এ কথা জানান।

তরফদার মো. রুহুল আমিন বলেন, বন্দরের ভেতর প্রতিদিন ৪ হাজার কনটেইনার ডেলিভারি হয়। এক কনটেইনারে ৩টি ট্রাক ধরলে ১২ হাজার ট্রাক চলাচল করছে। আশপাশে কনটেইনার ডিপো আছে। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল বন্দর থেকে কনটেইনার ডেলিভারি বাইরে নিয়ে যাওয়া হোক। তারই অংশ হিসেবে বে টার্মিনাল এলাকায় ডেলিভারি ইয়ার্ড ও ট্রাক টার্মিনাল তৈরি করা হচ্ছে। তিন বছর আগে এ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি বলেন, এডিবি ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এ প্রকল্পে অর্থায়নের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। উক্ত প্রকল্পে বন্দরের নিজস্ব একটি টার্মিনাল থাকবে। বে-টার্মিনালকে ফাস্টট্র্যাক প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়ন করতে হবে। ভবিষ্যতে বন্দরে জেটি নির্মাণের ক্ষেত্রে জলবায়ুজনিত কারণে সাগরের উচ্চতা বৃদ্ধির বিষয় বিবেচনা করতে হবে যাতে জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেলেও জেটি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে ব্যবসায়ীরাই মূলতঃ অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখে। বর্তমান বিশ্ব মহামারীর কারণে প্রান্তিক পর্যায় থেকে শুরু করে বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত সব ধরণের ব্যবসায়ীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হয়েছেন। যদিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে।

তিনি বলেন, বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতির দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র করোনা সংক্রান্ত ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে গত বছর তিন ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে এবং এ বছর প্রায় ছয় ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বর্তমানে করোনার ভারতীয় ভেরিয়েন্ট এর কারণে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে লকডাউন চলছে। তাই কলকারখানা চালু রেখে পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব হলেও বিক্রয় করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানকে কর্মী ছাঁটাই করতে হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে গতবারের ন্যায় বা তার চেয়েও বেশী পরিমাণে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আহবান জানায়।

সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ট্যাক্স, ভ্যাট ইত্যাদিতে কোন ছাড় না থাকলেও ঋণের সুদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে নিয়মিত কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ ব্যাংক ঋণ গ্রহীতাদের ক্লাসিফাইড না করার সময়সীমা আগামী ডিসেম্বর-২০২১ পর্যন্ত বর্ধিত করার জন্য সরকারের নিকট অনুরোধ জানাচ্ছি।

লীজিং কোম্পানীর ক্ষেত্রেও একই ধরণের বিধান প্রযোজ্য। কোন উদ্যোক্তার পাঁচটি শিল্প কারখানার মধ্যে একটি শিল্প কারখানা রুগ্ন হলে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ঋণ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নির্দেশনা বাতিল করে কেবলমাত্র নির্দিষ্ট রুগ্ন শিল্প ব্যতিরেকে একই গ্রুপের অন্যান্য শিল্পে ঋণ প্রবাহ অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, দুইশ’ বিলিয়ন ডলারের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য বিবেচনায় দেশীয় ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা দিতে হবে। বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল আমদানিতে অগ্রিম কর আদায় করা হলেও পরবর্তীতে তা যথা সময়ে সমন্বয় করা হয় না। ফলে এসব শিল্প প্রতিষ্ঠানের শত শত কোটি টাকা এনবিআরের তহবিলে জমা থেকে যায়। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানে চলতি মূলধনের ঘাটতি দেখা দেয়। তাই অগ্রিম কর যথাসময়ে সমন্বয় করা এবং অতিরিক্ত আদায়কৃত কর শিল্প প্রতিষ্ঠানকে যথা শীঘ্রই সম্ভব ফেরত প্রদানের জন্য এনবিআরের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, যদি অগ্রিম কর ও আগাম ভ্যাট হ্রাস করা হয় তাহলে প্রতিষ্ঠানগুলোতে নগদ মূলধনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে যা ব্যবসায়িক কর্মকান্ড পরিচালনায় সহায়ক হবে। লাভ-লোকসান নির্বিশেষে টার্ণওভারের ভিত্তিতে ন্যূনতম কর আদায় করার বিধান রহিত করা উচিত বলে তিনি মনে করেন। যেমনঃ ৩ কোটি টাকার বেশী লেনদেন হলে ০.৫% কর দেয়ার বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার করতে হবে। জীবনযাত্রার মান ও ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সাথে বাজেটের আকার বৃদ্ধি করতে হবে। কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে বাজেট প্রণয়ন করতে হবে।

বিদেশে বাংলাদেশীদের বিনিয়োগ সম্পর্কে তিনি বলেন, বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করার জন্য বৈধ পথে দেশ থেকে কোন মূলধন নিতে পারেন না। অথচ ঐসব দেশে তাদের ব্যবসায়ী হিসেবে আরো অনেক ভালো করার সুযোগ রয়েছে। যদি বৈধভাবে দেশ থেকে মূলধন নিয়ে সেই দেশে বিনিয়োগ করা যায় তাহলে দুই তিন বছর পরে বৈধ পথেই আবার ঐসব ব্যবসার লভ্যাংশ দেশে ফেরত আনা সম্ভব হবে। তাই বিদেশে ব্যবসা করার জন্য দেশ থেকে বৈধ পথে মূলধন নেয়ার অনুমতি প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে ৪২ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ থেকে কিছু অংশ বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়ার বিষয় বিবেচনা করা যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রামে চলমান মেগা প্রকল্পগুলো যথাসময়ে সম্পন্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে আসন্ন বাজেটে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশী রাজস্ব চট্টগ্রাম কাস্টমস’র মাধ্যমে আদায় করা হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু চট্টগ্রামকে সরকারিভাবে বাণিজ্যিক রাজধানী ঘোষণা করার দাবী জানান। বাজেট এর আকার বৃদ্ধি পেলেও তা পূর্ণাঙ্গরূপে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই বাজেট যথাযথ বাস্তবায়নের উপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।

ব্যাংকঋণ খেলাপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের সুস্পষ্ট দাবি থাকবে একটি শিল্পগ্রুপের একটি কারখানা খেলাপি হলে বাকি কারখানা বা প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতির মুখে পড়ছে। একদিন দেখা যাবে ওই উদ্যোক্তা দেউলিয়া হয়ে গেছে। বিজনেসম্যানদের সুরক্ষা দিতে হবে। কোনো শিল্পগ্রুপের একটি কারখানা ব্যাংকঋণে খেলাপি হলে যদি অন্য কারখানাগুলো সচল থাকে তাহলে রুগণ কারখানাটিকে সাপোর্ট দিতে পারবে।

বিজনেস আওয়ার/৩১ মে, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: