বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : পাবনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে অক্সিজেন সংকটে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (০৪ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে সোমবার (০৫ জুলাই) দুপুর ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। এ সময়ে করোনায় আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালটিতে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে দায়িত্বে থাকা একজন সিনিয়র চিকিৎসক বলেন, রোববার সকাল থেকে এখন পর্যন্ত চারজন করোনা রোগী অক্সিজেন সংকটে মারা গেছেন। হাসপাতালে অক্সিজেনের ঘাটতি আছে। ঠিকমতো অক্সিজেন সরবরাহ করতে না পারায় তারা মারা যান।
এ প্রসঙ্গে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক ডা. সালেহ মোহাম্মদ আলী বলেন, অনেক রোগী করোনা আক্রান্ত হয়ে শেষ সময়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। তিনি যদি আক্রান্ত হওয়ার শুরুতে আসেন তাহলে তাকে ভালোভাবে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। যারা মারা গেছেন তাদের বেশিরভাগই করোনা আক্রান্ত হয়ে শেষ সময়ে হাসপাতালে এসেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, জেনারেল হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন চালু না থাকায় অক্সিজেনের ব্যাপক সংকট দেখা দিচ্ছে। হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলাও অকেজো হয়ে পড়ে আছে।
পাবনার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. কেএম আবু জাফর জানান, করোনা সংক্রমণ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ায় এবং বিভিন্ন এলাকায় মানুষের নির্বিঘ্নে চলাচলের ফলে পাবনাতেও করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেছে। প্রতিদিন অনেক রোগী করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাচ্ছে। সবাইকে সচেতন হতে হবে। জনগণ সচেতন না হলে স্বাস্থ্য বিভাগের কিছু করার থাকবে না।
মৃত রাশিদা বেগমের বড় ছেলে মো. আলমগীর হোসাইন বলেন, আমার আম্মাকে রোববার দুপুরে ঠান্ডা জ্বর শ্বাসকষ্ট নিয়ে সদরের করোনা ইউনিটে ভর্তি করেছিলাম। শুরু থেকেই অক্সিজেন সংকট ছিল। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ১০ বার বলার পরও তারা আমার মায়ের জন্য একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার দেয়নি। অক্সিজেন সংকট নিয়েই মায়ের মৃত্যু হলো।
তিনি বলেন, এ সময় হাসপাতালের প্রতিটি রোগী প্রচণ্ড কষ্ট পাচ্ছিলেন। অক্সিজেনের অভাবে তার সামনে তিনজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। অনেক আশা নিয়ে মাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলাম। ভেতরে ঢুকেই দেখি, সেখানে কোনো চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। নার্সরা ঠিকমতো ডিউটিতে আসছেন না।
করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এক রোগীর ভাই জানান, এই হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। অনেক ভালো রোগীকে করোনা ইউনিটে ভর্তি করে রেখেছে। আমার বোনকে ১২ দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। পরের দিন করোনা পরীক্ষার নমুনা দিই। আজ ১১ দিন পার হলেও কোনো ফলাফল পাচ্ছি না।
বিজনেস আওয়ার/০৫ জুলাই, ২০২১/এ