ঢাকা , সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একজন আশিক ও ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ

  • পোস্ট হয়েছে : ১২:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ জুলাই ২০২১
  • 4

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এই প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমেই মূলত হয়ে থাকে শেয়ারবাজারের লেনদেন কার্যক্রম। কিন্তু সেই স্টক এক্সচেঞ্জটির পরিচালনা পর্ষদ একজনকে নিয়োগ দিতে গিয়ে গত কয়েক মাসে নাটকীয়তার জন্ম দিয়েছে। এতে কিছুটা হলেও ম্লান হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির সুনাম। যা শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের কাছে ভালো লাগার মতো ঘটনা ছিল না।

বর্তমান বাজারে চাকরীর জন্য মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়লেও একজন প্রার্থীর পেছনে ডিএসইর দৌড়ানোর মতো নজিড়বিহীন ঘটনা ঘটেছে। সেই প্রার্থীর নাম আশিক রহমান। তিনি যখন যে পদে আবেদন করেছেন, তখন সেই পদেই নিয়োগ দিয়েছে ডিএসইর পর্ষদ। সে যদি এক পদে আবেদন করে, পরবর্তীতে তা থেকে সড়ে গিয়ে উপরের আরেক পদে আবেদন করেছেন, তাতেও সাড়া দিয়েছেন ডিএসইর পর্ষদ। এমনকি সেই উচ্চ পদে যোগ্যতার অভাবে ব্যর্থ হয়ে পূণ:রায় আগের পদে ফিরে আসলেও সমস্যা হয়নি ডিএসইর পর্ষদের। তাদের মনে প্রশ্ন জাগেনি প্রার্থীর ব্যক্তিত্ব নিয়ে। যে প্রার্থী উপরের পদে আবেদন করে ব্যর্থ হয়ে নিচে নামতে দ্বিধা করেনি।

অথচ শেষবার নিচের পদে নিয়োগ দেওয়ার পরেও ডিএসইর পর্ষদই গত ১৮ এপ্রিল সেই বহুল কাঙ্খিত প্রার্থীকে বাতিল করে দিয়েছে। যাতে যোগদানের আগেই বাতিল হয়ে গেছে আশিক রহমানের নিয়োগ। হয়তো এরসঙ্গে শেষ হয়েছে একটি নাটকীয়তার।

ডিএসইর এই কর্মকাণ্ডে শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বপালন করা একজন আশিক রহমানের সর্বশেষ নিয়োগ বাতিলের পরে মন্তব্য করেছেন, একের পর এক মজাদার পর্ব (Back to back amusing episode).

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা বিজনেস আওয়ারকে বলেন, ডিএসই খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং একটি সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠান। এমন একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আশিককে নিয়োগ নিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনা কোনভাবেই যায় না। তাকে নিয়োগ নিয়ে পুরো নাটকীয়তা করে ফেলেছে ডিএসইর পর্ষদ। এতে করে নিজেদের সম্মানহানি এবং সবার মাঝে হাসির পাত্রে পরিণত করেছে। অথচ এই প্রতিষ্ঠানটির কাধেঁ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৫০টির বেশি কোম্পানিসহ ব্রোকার হাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব। তাই যেকোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভেবে চিন্তে নেওয়া উচিত।

এই আশিক রহমানের যোগ্যতায় মুগ্ধ হয়ে ৩ দফায় তাকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ। এরমধ্যে ডিএসইর পরিচালক সালমা নাসরিন তার বিকল্প কাউকে দেখেননি। তিনি শুধুমাত্র তাকেই যোগ্য মনে করেছেন। তবে আশিক রহমানের নিয়োগে একজন শেয়ারহোল্ডার পরিচালক প্রতিবারই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বলে গুঞ্জন আছে। কিন্তু ৩ দফায় চেষ্টার পরেও যোগদান করা হচ্ছে না আশিক রহমানের।

এ বিষয়ে শেয়ারবাজার বিশ্লেষক ও বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের শিক্ষক ড. মোহাম্মদ মুসা বিজনেস আওয়ারকে বলেন, যোগদানের আগে কিছু অতিরিক্ত শর্ত দেওয়ায় আশিক রহমানকে নিয়ে সর্বশেষ সমস্যা তৈরী হয়েছে। এক্ষেত্রে নিয়োগের বিষয়টি খুব দূর্বলভাবে পরিচালনা করেছে ডিএসইর পর্ষদ। তাকে নিয়োগের আগেই সবকিছু চূড়ান্ত করা দরকার ছিল। এই নিয়োগ পক্রিয়ার ব্যর্থতার দায়ভার পড়ে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের উপর।

আশিক রহমানকে বারবার নিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, সেতো তাদেরই লোক। তারপরেও এভাবে নিয়োগ দেওয়াটা সমস্যা। এতে ডিএসইর ইমেজ সংকট তৈরী করছে। তারা বিষয়টি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেনি। এক্ষেত্রে তারা অপরিপক্কতার পরিচয় দিয়েছে। কারন নিয়োগ দেওয়ার আগেইতো সবকিছু ঠিকঠাক থাকবে। পরে এতে কেনো এতো কথা উঠবে। এছাড়া সিআরওতো কোন ছোটখাটো পজিশন না, এটা বড় পজিশন।

প্রথম দফায় আশিক রহমানকে প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (সিআরও) পদে নিয়োগ দিয়েছিল ডিএসইর পর্ষদ। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সেই নিয়োগে অনুমোদনের আগেই আশিক রহমান তা থেকে সড়ে দাঁড়ান। সেখান থেকে তিনি কাজী সানাউল হকের শূন্য পদে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হওয়ার জন্য আবেদন করেন। এতেও নিয়োগ দেয় ডিএসইর পর্ষদ।

তবে বিএসইসি আশিককে এমডি পদে যোগ্য বলে মনে করেনি। বিএসইসি জানায়, ডিএসই চালানোর মতো পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই আশিক রহমানের। এছাড়া সে দেশের প্রধান শেয়ারবাজারটি চালাতে অক্ষম। এই কারন দেখিয়ে তার এমডি পদের নিয়োগ বাতিল করে দেয় বিএসইসি

কিন্তু এরপরে আশিক রহমান আবারও নেমে আসেন নিচের সিআরও পদে। এবারও তাকেই নিয়োগ দেয় ডিএসইর পর্ষদ এবং তার নাম সুপারিশ করে বিএসইসিতে পাঠায়। একজন অযোগ্য ব্যক্তিকে সুপারিশ করায় শুরুতে কিছুটা বিস্মিত হয় কমিশন।

তবে এবার ডিএসইর পর্ষদ ছিল আত্মবিশ্বাসী। কারন হিসেবে তারা বিভিন্ন জায়গায় বলত, বিএসইসি চেয়ারম্যান নাকি আশিককে সিআরও পদে নিয়োগ অনুমোদন দেবেন বলে জানিয়েছেন। যে কারনেই তার নাম সুপারিশ করা হয়।

তবে বিষয়টি অস্বীকার করে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম বলেন, আশিককে যখন এমডি পদে সুপারিশ করে, তখন বলেছিলাম, তাকে তো সিআরও পদে নিয়োগ দিয়েছিলেন। সেটাইতো ভালো ছিল। আর এই কথাটাকেই তারা ভিন্নভাবে প্রচার করে।

যাহোক দীর্ঘদিন আশিক রহমানের সিআরও পদে নিয়োগের ফাইলটি ফেলে রাখে বিএসইসি। কিন্তু গত ৭ জুলাই অজানা কারনে এই অযোগ্য লোকটিকেই সিআরও পদে নিয়োগে অনুমোদন দেয় বিএসইসি।

কিন্তু সব সুযোগ সুবিধার বিষয়ে নিয়োগের আগে চূড়ান্ত করা হলেও যোগদানের আগমুহূর্তে বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দেন আশিক রহমান। যিনি নিচের সারির পদ মর্যাদার চাকরী সত্ত্বেও এমডির সমান বেতন দাবি, পদবী পরিবর্তন, ফোর হুইলার কার ইত্যাদির শর্ত দেন। কিন্তু তাতে এবার বাধ সাধেন ডিএসইর পর্ষদ। তাকে নিয়োগে আত্মমর্যাদা বিসর্জন দেওয়া সেই ডিএসইর পর্ষদই এবার তা মেনে নিতে পারেননি। যে কারনে তার নিয়োগ বাতিল করে এবং কমিশন তাতে সম্মতি জানায়।

বিজনেস আওয়ার/২৫ জুলাই, ২০২১/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

একজন আশিক ও ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ

পোস্ট হয়েছে : ১২:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ জুলাই ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এই প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমেই মূলত হয়ে থাকে শেয়ারবাজারের লেনদেন কার্যক্রম। কিন্তু সেই স্টক এক্সচেঞ্জটির পরিচালনা পর্ষদ একজনকে নিয়োগ দিতে গিয়ে গত কয়েক মাসে নাটকীয়তার জন্ম দিয়েছে। এতে কিছুটা হলেও ম্লান হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির সুনাম। যা শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের কাছে ভালো লাগার মতো ঘটনা ছিল না।

বর্তমান বাজারে চাকরীর জন্য মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়লেও একজন প্রার্থীর পেছনে ডিএসইর দৌড়ানোর মতো নজিড়বিহীন ঘটনা ঘটেছে। সেই প্রার্থীর নাম আশিক রহমান। তিনি যখন যে পদে আবেদন করেছেন, তখন সেই পদেই নিয়োগ দিয়েছে ডিএসইর পর্ষদ। সে যদি এক পদে আবেদন করে, পরবর্তীতে তা থেকে সড়ে গিয়ে উপরের আরেক পদে আবেদন করেছেন, তাতেও সাড়া দিয়েছেন ডিএসইর পর্ষদ। এমনকি সেই উচ্চ পদে যোগ্যতার অভাবে ব্যর্থ হয়ে পূণ:রায় আগের পদে ফিরে আসলেও সমস্যা হয়নি ডিএসইর পর্ষদের। তাদের মনে প্রশ্ন জাগেনি প্রার্থীর ব্যক্তিত্ব নিয়ে। যে প্রার্থী উপরের পদে আবেদন করে ব্যর্থ হয়ে নিচে নামতে দ্বিধা করেনি।

অথচ শেষবার নিচের পদে নিয়োগ দেওয়ার পরেও ডিএসইর পর্ষদই গত ১৮ এপ্রিল সেই বহুল কাঙ্খিত প্রার্থীকে বাতিল করে দিয়েছে। যাতে যোগদানের আগেই বাতিল হয়ে গেছে আশিক রহমানের নিয়োগ। হয়তো এরসঙ্গে শেষ হয়েছে একটি নাটকীয়তার।

ডিএসইর এই কর্মকাণ্ডে শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বপালন করা একজন আশিক রহমানের সর্বশেষ নিয়োগ বাতিলের পরে মন্তব্য করেছেন, একের পর এক মজাদার পর্ব (Back to back amusing episode).

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা বিজনেস আওয়ারকে বলেন, ডিএসই খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং একটি সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠান। এমন একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আশিককে নিয়োগ নিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনা কোনভাবেই যায় না। তাকে নিয়োগ নিয়ে পুরো নাটকীয়তা করে ফেলেছে ডিএসইর পর্ষদ। এতে করে নিজেদের সম্মানহানি এবং সবার মাঝে হাসির পাত্রে পরিণত করেছে। অথচ এই প্রতিষ্ঠানটির কাধেঁ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৫০টির বেশি কোম্পানিসহ ব্রোকার হাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব। তাই যেকোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভেবে চিন্তে নেওয়া উচিত।

এই আশিক রহমানের যোগ্যতায় মুগ্ধ হয়ে ৩ দফায় তাকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ। এরমধ্যে ডিএসইর পরিচালক সালমা নাসরিন তার বিকল্প কাউকে দেখেননি। তিনি শুধুমাত্র তাকেই যোগ্য মনে করেছেন। তবে আশিক রহমানের নিয়োগে একজন শেয়ারহোল্ডার পরিচালক প্রতিবারই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বলে গুঞ্জন আছে। কিন্তু ৩ দফায় চেষ্টার পরেও যোগদান করা হচ্ছে না আশিক রহমানের।

এ বিষয়ে শেয়ারবাজার বিশ্লেষক ও বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের শিক্ষক ড. মোহাম্মদ মুসা বিজনেস আওয়ারকে বলেন, যোগদানের আগে কিছু অতিরিক্ত শর্ত দেওয়ায় আশিক রহমানকে নিয়ে সর্বশেষ সমস্যা তৈরী হয়েছে। এক্ষেত্রে নিয়োগের বিষয়টি খুব দূর্বলভাবে পরিচালনা করেছে ডিএসইর পর্ষদ। তাকে নিয়োগের আগেই সবকিছু চূড়ান্ত করা দরকার ছিল। এই নিয়োগ পক্রিয়ার ব্যর্থতার দায়ভার পড়ে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের উপর।

আশিক রহমানকে বারবার নিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, সেতো তাদেরই লোক। তারপরেও এভাবে নিয়োগ দেওয়াটা সমস্যা। এতে ডিএসইর ইমেজ সংকট তৈরী করছে। তারা বিষয়টি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেনি। এক্ষেত্রে তারা অপরিপক্কতার পরিচয় দিয়েছে। কারন নিয়োগ দেওয়ার আগেইতো সবকিছু ঠিকঠাক থাকবে। পরে এতে কেনো এতো কথা উঠবে। এছাড়া সিআরওতো কোন ছোটখাটো পজিশন না, এটা বড় পজিশন।

প্রথম দফায় আশিক রহমানকে প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (সিআরও) পদে নিয়োগ দিয়েছিল ডিএসইর পর্ষদ। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সেই নিয়োগে অনুমোদনের আগেই আশিক রহমান তা থেকে সড়ে দাঁড়ান। সেখান থেকে তিনি কাজী সানাউল হকের শূন্য পদে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হওয়ার জন্য আবেদন করেন। এতেও নিয়োগ দেয় ডিএসইর পর্ষদ।

তবে বিএসইসি আশিককে এমডি পদে যোগ্য বলে মনে করেনি। বিএসইসি জানায়, ডিএসই চালানোর মতো পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই আশিক রহমানের। এছাড়া সে দেশের প্রধান শেয়ারবাজারটি চালাতে অক্ষম। এই কারন দেখিয়ে তার এমডি পদের নিয়োগ বাতিল করে দেয় বিএসইসি

কিন্তু এরপরে আশিক রহমান আবারও নেমে আসেন নিচের সিআরও পদে। এবারও তাকেই নিয়োগ দেয় ডিএসইর পর্ষদ এবং তার নাম সুপারিশ করে বিএসইসিতে পাঠায়। একজন অযোগ্য ব্যক্তিকে সুপারিশ করায় শুরুতে কিছুটা বিস্মিত হয় কমিশন।

তবে এবার ডিএসইর পর্ষদ ছিল আত্মবিশ্বাসী। কারন হিসেবে তারা বিভিন্ন জায়গায় বলত, বিএসইসি চেয়ারম্যান নাকি আশিককে সিআরও পদে নিয়োগ অনুমোদন দেবেন বলে জানিয়েছেন। যে কারনেই তার নাম সুপারিশ করা হয়।

তবে বিষয়টি অস্বীকার করে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম বলেন, আশিককে যখন এমডি পদে সুপারিশ করে, তখন বলেছিলাম, তাকে তো সিআরও পদে নিয়োগ দিয়েছিলেন। সেটাইতো ভালো ছিল। আর এই কথাটাকেই তারা ভিন্নভাবে প্রচার করে।

যাহোক দীর্ঘদিন আশিক রহমানের সিআরও পদে নিয়োগের ফাইলটি ফেলে রাখে বিএসইসি। কিন্তু গত ৭ জুলাই অজানা কারনে এই অযোগ্য লোকটিকেই সিআরও পদে নিয়োগে অনুমোদন দেয় বিএসইসি।

কিন্তু সব সুযোগ সুবিধার বিষয়ে নিয়োগের আগে চূড়ান্ত করা হলেও যোগদানের আগমুহূর্তে বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দেন আশিক রহমান। যিনি নিচের সারির পদ মর্যাদার চাকরী সত্ত্বেও এমডির সমান বেতন দাবি, পদবী পরিবর্তন, ফোর হুইলার কার ইত্যাদির শর্ত দেন। কিন্তু তাতে এবার বাধ সাধেন ডিএসইর পর্ষদ। তাকে নিয়োগে আত্মমর্যাদা বিসর্জন দেওয়া সেই ডিএসইর পর্ষদই এবার তা মেনে নিতে পারেননি। যে কারনে তার নিয়োগ বাতিল করে এবং কমিশন তাতে সম্মতি জানায়।

বিজনেস আওয়ার/২৫ জুলাই, ২০২১/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: