রেজোয়ান আহমেদ : সারাবিশ্বে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) বিষয়টি স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সম্পন্ন হলেও বাংলাদেশে তার ব্যতিক্রম বলে জানিয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক সভাপতি ও নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু। বিষয়টি সমাধানে স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে প্রস্তাবনা করার আহ্বান করেছেন। এক্ষেত্রে যত দ্রুত প্রস্তাব করা হবে, তত দ্রুত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
টিটু বলেন, ম্যানেজম্যান্টকে শক্তিশালী করার জন্য স্টক এক্সচেঞ্জে মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা (ডিমিউচ্যুয়ালাইজড) আলাদা করা হয়েছে। এর আগে স্বার্থের সংঘাতের (কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট) কারনে কিছু দায়িত্ব পালন করা যাচ্ছিল না। তারমধ্যে অন্যতম ছিল আইপিও’র কাজ করা। কিন্তু এটি স্টক এক্সচেঞ্জের দায়িত্ব হওয়া উচিত। সারাবিশ্বে এটাই স্ট্যান্ডার্ড। এই স্ট্যান্ডার্ড বাস্তবায়নে ডিএসই কর্তৃপক্ষ যত দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রস্তাব দেবেন, তত দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে পারব। বিষয়টি অনেক সদস্য আমাকে জানিয়েছেন। ডিএসইর ৫৭তম বার্ষিক সাধারন সভায় (এজিএম) তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএসইসি রেগুলেটর হিসাবে দায়িত্ব পালন করবে। কিন্তু আমরা আশা করব, তারা আমাদের ডে টু ডে অ্যাফেয়ার বা কার্যক্রমে যত কম হস্তক্ষেপ করবে, ততই মঙ্গল হবে। ডিএসইর সদস্যরা এই বিষয়ে আমার কাছে কনসার্ন প্রকাশ করেছেন।
নবনির্বাচিত এই সংসদ সদস্য মনে করেন, বিএসইসি ডিএসইর অ্যাফেয়ার্সের সঙ্গে যত কম সংযুক্ত থাকে, তত ভালো। তারা একটা প্লাটফর্ম দেবে, রুলস অ্যান্ড রেগুলেশন দেবে। আর সেই রুলস অ্যান্ড রেগুলেশন অনুযায়ি ডিএসই কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এটাই হওয়া উচিত। আমাদের সিআরও আছে এবং অধিকাংশ স্বতন্ত্র পরিচালক আছেন। যারা রুলস অ্যান্ড রেগুলেশন সঠিকভাবে পালনের জন্য যথেষ্ট।
টিটু বলেন, অর্থমন্ত্রী শেয়ারবাজারের উন্নয়নে ডিএসই’র কাছে ইতিবাচক প্রস্তাবনা চেয়েছেন। এবং সেটি দ্রুত সময়ের মধ্যে দেওয়ার জন্য বলেছেন। যিনি শেয়ারবাজার বুঝেন, এই বাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং আছেন।
অর্থমন্ত্রী সরকারি কোম্পানিগুলোকে ধারাবাহিকভাবে শেয়ারবাজারে আনার কথা জানিয়েছেন বলে যোগ করেন আহসানুল ইসলাম টিটু। তবে তা নেওয়ার আগে শেয়ারবাজারের সক্ষমতা তৈরী করতে বলেছেন। যাতে তাড়াহুড়ো করে আনতে গিয়ে বিপরীত কিছু না ঘটে। তাই এই বিষয়ে একটি পরিকল্পনা নিয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে যেতে হবে।
তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী মাসিক ভিত্তিক প্রতিটি নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। এরমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), ইন্স্যুরেন্স ডেভোলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অথরিটি (আইডিআরএ) ইত্যাদির সঙ্গে মাসিক সমন্বয় বৈঠকের মতো করবেন। সেখানে আমাদের দাবি দাওয়া তুলে ধরতে পারলে, দ্রুততার সাথে কাজ করতে পারব।
তিনি আরও বলেন, ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের সময় বর্তমান অর্থমন্ত্রী খোজখবর রাখতেন। তিনি ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের বিষয়ে জানেন। রেগুলেটর যাতে ইন্টারফেয়ার করতে না পারে, সেটা তিনি নিজে উদ্যোগি হয়ে বলেছেন। একইসঙ্গে বলেছেন বিএসইসির ইন্টারফেয়ার করার দরকার নেই। এখনই আমরা বিষয়টি গেজেটে দিয়ে দেব। সুতরাং উনার মনোভাব আপনারা জানেন।
শেয়ারবাজারের উন্নয়নে অর্থমন্ত্রীর পাশাপাশি বাণিজ্যমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রীর সঙ্গে ডিএসইর সাক্ষাত করা দরকার বলে জানান টিটু। এই মন্ত্রণালয়গুলো ডিএসইর সঙ্গে সম্পৃক্ত।
বিজনেস আওয়ার/০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯/আরএ