ঢাকা , বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমার নাচের অনুষ্ঠানে ওনাকে আমন্ত্রণ জানাতাম

  • পোস্ট হয়েছে : ০৬:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • 83

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : লতা মঙ্গেশকরের মহাপ্রয়াণে কেঁদে উঠেছে উপমহাদেশের গানের ভুবন। সংগীতের দীর্ঘ ভ্রমণে তিনি মধুবালা, মীনা কুমারী থেকে মাধুরী, কাজলসহ অসংখ্য নায়িকার জন্য গান গেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন বলিউডের নামজাদা অভিনেত্রী হেমা মালিনী। তাঁর ঠোঁটে লতার গাওয়া অসংখ্য গান ‘অমর’ হয়ে আছে। সুরসম্রাজ্ঞীর বিদায়বেলায় শোকাহত ছিলেন হেমা মালিনী। প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধিকে তিনি মেলে ধরলেন অমলিন কিছু স্মৃতি।
লতাজির সঙ্গে কিছু স্মৃতি প্রসঙ্গে, মুঠোফোনের অপর প্রান্ত থেকে হেমা মালিনী ভেজা ভেজা গলায় বলে ওঠেন, ‘আমার সম্পূর্ণ ক্যারিয়ারে লতাজি আর আশাজির গান। আমি অত্যন্ত ভাগ্যবতী যে আমার প্রথম ছবি “সপনো কা সওদাগর”–এ লতাজি গান গেয়েছিলেন। এই ছবির সেই জনপ্রিয় গানটা ছিল “সিখা নহি সবক তুনে প্যায়ার কা”।
আমি আজও এই গানের রেকর্ডিংয়ের কথা ভুলতে পারি না। আমি প্রথমবার কোনো গানের রেকর্ডিং স্বচক্ষে দেখেছিলাম। আশা করি, বুঝতে পারছেন আমার ক্যারিয়ারের সঙ্গে লতাজির কতটা গভীর সম্পর্ক ছিল। তাঁর গাওয়া আমার সবচেয়ে প্রিয় গান দুটি হলো “নাম গুম জায়েগা” আর “রাজিয়া সুলতান” ছবির গান “এ দিল ই নাদান রহা”।’
বলিউডের এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘গত কয়েক বছর আমাদের দেখাসাক্ষাৎ একদম হয়নি। কারণ, ওনার শরীর ভালো থাকত না। আমার নাচের সব অনুষ্ঠানে আমি ওনাকে আমন্ত্রণ জানাতাম। উনি আসতে না পারলেও হোয়াটসঅ্যাপে আমাকে শুভেচ্ছা জানাতেন।
হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আমাদের দারুণ যোগাযোগ ছিল। এমনকি ফোন করে উনি অনেকবার আমাকে গান শুনিয়েছেন। আমি হোয়াটসঅ্যাপে আমার ছবি ওনাকে পাঠাতাম। উনি সেসব ছবি আরও সুন্দর করে আমাকে পাঠাতেন। আধুনিক প্রযুক্তির বিষয়ে ওনার দারুণ জ্ঞান ছিল। আমার ছবিগুলো বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে আরও সুন্দর করে দিতেন।’
একটু থেমে ভারাক্রান্ত গলায় আবার তিনি বলেন, ‘লতাজি আমাকে বারবার বলতেন যে উনি আমাকে খুব পছন্দ করেন। আমাকে উনি খুবই ভালোবাসতেন। কারণে–অকারণে উনি আমাকে প্রচুর উপহার পাঠাতেন। লতাজি আমাকে অনেকবার শাড়ি পাঠিয়েছেন। শাড়ি পাঠানোর পর উনি ফোন করে জানতে চাইতেন যে আমি শাড়িটা দেখেছি কি না। লতাজি বলতেন যে শাড়িটা দেখে মনে হয়েছে, আমাকে পরলে ভালো লাগবে, তাই উনি কিনেছেন। ওনার চলে যাওয়া সংগীত দুনিয়ার জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। লতাজির মতো কেউ ছিল না, আর দ্বিতীয় হবেও না। এমন এক শিল্পী অনেক জন্ম–জন্মান্তরের পর একটা জন্মায়।’

বিজনেস আওয়ার/০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সর্বাধিক পঠিত

আমার নাচের অনুষ্ঠানে ওনাকে আমন্ত্রণ জানাতাম

পোস্ট হয়েছে : ০৬:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : লতা মঙ্গেশকরের মহাপ্রয়াণে কেঁদে উঠেছে উপমহাদেশের গানের ভুবন। সংগীতের দীর্ঘ ভ্রমণে তিনি মধুবালা, মীনা কুমারী থেকে মাধুরী, কাজলসহ অসংখ্য নায়িকার জন্য গান গেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন বলিউডের নামজাদা অভিনেত্রী হেমা মালিনী। তাঁর ঠোঁটে লতার গাওয়া অসংখ্য গান ‘অমর’ হয়ে আছে। সুরসম্রাজ্ঞীর বিদায়বেলায় শোকাহত ছিলেন হেমা মালিনী। প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধিকে তিনি মেলে ধরলেন অমলিন কিছু স্মৃতি।
লতাজির সঙ্গে কিছু স্মৃতি প্রসঙ্গে, মুঠোফোনের অপর প্রান্ত থেকে হেমা মালিনী ভেজা ভেজা গলায় বলে ওঠেন, ‘আমার সম্পূর্ণ ক্যারিয়ারে লতাজি আর আশাজির গান। আমি অত্যন্ত ভাগ্যবতী যে আমার প্রথম ছবি “সপনো কা সওদাগর”–এ লতাজি গান গেয়েছিলেন। এই ছবির সেই জনপ্রিয় গানটা ছিল “সিখা নহি সবক তুনে প্যায়ার কা”।
আমি আজও এই গানের রেকর্ডিংয়ের কথা ভুলতে পারি না। আমি প্রথমবার কোনো গানের রেকর্ডিং স্বচক্ষে দেখেছিলাম। আশা করি, বুঝতে পারছেন আমার ক্যারিয়ারের সঙ্গে লতাজির কতটা গভীর সম্পর্ক ছিল। তাঁর গাওয়া আমার সবচেয়ে প্রিয় গান দুটি হলো “নাম গুম জায়েগা” আর “রাজিয়া সুলতান” ছবির গান “এ দিল ই নাদান রহা”।’
বলিউডের এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘গত কয়েক বছর আমাদের দেখাসাক্ষাৎ একদম হয়নি। কারণ, ওনার শরীর ভালো থাকত না। আমার নাচের সব অনুষ্ঠানে আমি ওনাকে আমন্ত্রণ জানাতাম। উনি আসতে না পারলেও হোয়াটসঅ্যাপে আমাকে শুভেচ্ছা জানাতেন।
হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আমাদের দারুণ যোগাযোগ ছিল। এমনকি ফোন করে উনি অনেকবার আমাকে গান শুনিয়েছেন। আমি হোয়াটসঅ্যাপে আমার ছবি ওনাকে পাঠাতাম। উনি সেসব ছবি আরও সুন্দর করে আমাকে পাঠাতেন। আধুনিক প্রযুক্তির বিষয়ে ওনার দারুণ জ্ঞান ছিল। আমার ছবিগুলো বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে আরও সুন্দর করে দিতেন।’
একটু থেমে ভারাক্রান্ত গলায় আবার তিনি বলেন, ‘লতাজি আমাকে বারবার বলতেন যে উনি আমাকে খুব পছন্দ করেন। আমাকে উনি খুবই ভালোবাসতেন। কারণে–অকারণে উনি আমাকে প্রচুর উপহার পাঠাতেন। লতাজি আমাকে অনেকবার শাড়ি পাঠিয়েছেন। শাড়ি পাঠানোর পর উনি ফোন করে জানতে চাইতেন যে আমি শাড়িটা দেখেছি কি না। লতাজি বলতেন যে শাড়িটা দেখে মনে হয়েছে, আমাকে পরলে ভালো লাগবে, তাই উনি কিনেছেন। ওনার চলে যাওয়া সংগীত দুনিয়ার জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। লতাজির মতো কেউ ছিল না, আর দ্বিতীয় হবেও না। এমন এক শিল্পী অনেক জন্ম–জন্মান্তরের পর একটা জন্মায়।’

বিজনেস আওয়ার/০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: