ঢাকা , শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নামী দামী লবণেও প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা

  • পোস্ট হয়েছে : ০৯:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • 83

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বাংলাদেশে লবণে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা বা মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে যা বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় উদ্বেগজনক। আমাদের বাজারের অত্যন্ত সুপরিচিত ব্র্যান্ডও খোলা বাজার থেকে সংগৃহীত এসব নমুনায় দেখা গেছে প্রতি এক কেজি লবণে আড়াই হাজারেরও বেশি প্লাস্টিকের কণা।

এই হিসেবে দেশের একজন মানুষ প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৩ হাজার মাইক্রোপ্লাস্টিক গ্রহণ করে থাকে। বাজারে যেসব লবণ পাওয়া যায় তার বেশিরভাগই আসে বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় জমি থেকে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সেসব এলাকায় বড় ধরনের প্লাস্টিকের দূষণের কারণে মাইক্রোপ্লাস্টিক এখন লবণের সাথেও মিশে গেছে।

এই গবেষণা দলের একজন সদস্য এবং পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফাহমিদা পারভীন বলেন, সমুদ্র সৈকতে যত্রতত্র প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলা হচ্ছে এবং নানা কারণে সেসব ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে চলে যাচ্ছে পানিতে।

জেনে নিন কতো লবণে কতো প্লাস্টিক
গবেষণার জন্য বিভিন্ন সুপারমার্কেট ও দোকান থেকে এসব লবণ সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে দেশের নামী দামী ১০টি ব্র্যান্ডের লবণ। এছাড়াও খোলা বাজার থেকে আরো তিনটি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সামুদ্রিক লবণের মোট ১৩টি নমুনার ওপর এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়।

পরে পরীক্ষাগারে গবেষণা চালিয়ে দেখা যায় যে সংগৃহীত এসব লবণের প্রতি কেজিতে গড়ে ২,৬৭৬টি আণুবীক্ষণিক প্লাস্টিক রয়েছে।

দেখা গেছে বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেট লবণের চেয়ে খোলা বাজারের লবণে এর উপস্থিতি বেশি।পেটে কতো প্লাস্টিকের কণাফাহমিদা পারভীন বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ হচ্ছে একজন মানুষ প্রতিদিন পাঁচ গ্রাম লবণ গ্রহণ করবে। কিন্তু বাংলাদেশে এক সমীক্ষায় দেখা গেছে একজন মানুষ প্রতিদিন খালি লবণ হিসেবে কিম্বা তরকারির সঙ্গে গড়ে ১৩.৪ গ্রাম লবণ খেয়ে থাকে।

রান্নার সময় ব্যবহৃত লবণ প্রচণ্ড তাপে গলে যায় কি না, অথবা শেষ পর্যন্ত তার আকৃতি কী হয় সেটা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, সেসব যদি গলেও যায়, উদ্বায়ী না হওয়ার কারণে এসব প্লাস্টিক পাত্রের ভেতরে খাবারের সঙ্গেই মিশে থাকে। প্লাস্টিকের এসব কণা খালি চোখে দেখা যায় না। তবে মাইক্রোস্কোপের নিচে এসবের আকৃতি স্পষ্ট বোঝা যায়।

লবণে প্লাস্টিকের উৎস

সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও প্লাস্টিকের দূষণ বেড়েছে। এই দূষণে বেড়েছে সমুদ্রেও। মানুষ যেখানেই প্লাস্টিক ব্যবহার করুক না কেন, শেষ পর্যন্ত এসব প্লাস্টিক সাগরে গিয়ে পৌঁছায়।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, দক্ষিণাঞ্চলীয় কক্সবাজারের প্রচুর জমিতে লবণ উৎপাদিত হয়। ওই এলাকাটি প্রধানতম পর্যটন এলাকা। একারণে সেখানে প্লাস্টিকের বিভিন্ন প্যাকেজিং, বোতল, ওষুধ, কাপড় ইত্যাদির বর্জ্য তৈরি হচ্ছে।

বিজনেসে আওয়ার/১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২/ জে ভি

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

নামী দামী লবণেও প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা

পোস্ট হয়েছে : ০৯:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বাংলাদেশে লবণে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা বা মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে যা বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় উদ্বেগজনক। আমাদের বাজারের অত্যন্ত সুপরিচিত ব্র্যান্ডও খোলা বাজার থেকে সংগৃহীত এসব নমুনায় দেখা গেছে প্রতি এক কেজি লবণে আড়াই হাজারেরও বেশি প্লাস্টিকের কণা।

এই হিসেবে দেশের একজন মানুষ প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৩ হাজার মাইক্রোপ্লাস্টিক গ্রহণ করে থাকে। বাজারে যেসব লবণ পাওয়া যায় তার বেশিরভাগই আসে বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় জমি থেকে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সেসব এলাকায় বড় ধরনের প্লাস্টিকের দূষণের কারণে মাইক্রোপ্লাস্টিক এখন লবণের সাথেও মিশে গেছে।

এই গবেষণা দলের একজন সদস্য এবং পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফাহমিদা পারভীন বলেন, সমুদ্র সৈকতে যত্রতত্র প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলা হচ্ছে এবং নানা কারণে সেসব ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে চলে যাচ্ছে পানিতে।

জেনে নিন কতো লবণে কতো প্লাস্টিক
গবেষণার জন্য বিভিন্ন সুপারমার্কেট ও দোকান থেকে এসব লবণ সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে দেশের নামী দামী ১০টি ব্র্যান্ডের লবণ। এছাড়াও খোলা বাজার থেকে আরো তিনটি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সামুদ্রিক লবণের মোট ১৩টি নমুনার ওপর এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়।

পরে পরীক্ষাগারে গবেষণা চালিয়ে দেখা যায় যে সংগৃহীত এসব লবণের প্রতি কেজিতে গড়ে ২,৬৭৬টি আণুবীক্ষণিক প্লাস্টিক রয়েছে।

দেখা গেছে বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেট লবণের চেয়ে খোলা বাজারের লবণে এর উপস্থিতি বেশি।পেটে কতো প্লাস্টিকের কণাফাহমিদা পারভীন বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ হচ্ছে একজন মানুষ প্রতিদিন পাঁচ গ্রাম লবণ গ্রহণ করবে। কিন্তু বাংলাদেশে এক সমীক্ষায় দেখা গেছে একজন মানুষ প্রতিদিন খালি লবণ হিসেবে কিম্বা তরকারির সঙ্গে গড়ে ১৩.৪ গ্রাম লবণ খেয়ে থাকে।

রান্নার সময় ব্যবহৃত লবণ প্রচণ্ড তাপে গলে যায় কি না, অথবা শেষ পর্যন্ত তার আকৃতি কী হয় সেটা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, সেসব যদি গলেও যায়, উদ্বায়ী না হওয়ার কারণে এসব প্লাস্টিক পাত্রের ভেতরে খাবারের সঙ্গেই মিশে থাকে। প্লাস্টিকের এসব কণা খালি চোখে দেখা যায় না। তবে মাইক্রোস্কোপের নিচে এসবের আকৃতি স্পষ্ট বোঝা যায়।

লবণে প্লাস্টিকের উৎস

সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও প্লাস্টিকের দূষণ বেড়েছে। এই দূষণে বেড়েছে সমুদ্রেও। মানুষ যেখানেই প্লাস্টিক ব্যবহার করুক না কেন, শেষ পর্যন্ত এসব প্লাস্টিক সাগরে গিয়ে পৌঁছায়।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, দক্ষিণাঞ্চলীয় কক্সবাজারের প্রচুর জমিতে লবণ উৎপাদিত হয়। ওই এলাকাটি প্রধানতম পর্যটন এলাকা। একারণে সেখানে প্লাস্টিকের বিভিন্ন প্যাকেজিং, বোতল, ওষুধ, কাপড় ইত্যাদির বর্জ্য তৈরি হচ্ছে।

বিজনেসে আওয়ার/১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২/ জে ভি

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: