ঢাকা , শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আরো ২ লাখ বাই হবে, কোপা সামসু কোপা

  • পোস্ট হয়েছে : ০৯:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ মার্চ ২০২২
  • 5

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: কোনভাবেই থামানো যাচ্ছে না সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রাম, ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ সহ কিছু পুজিবাজার কারসাছি চক্রকে। চক্রটি গ্রুপের পাশাপাশি পার্সোনাল ম্যাসেজ দিয়ে এই কারসাজি করেন বলে জানা গেছে। বিজনেস আওয়ার২৪.কমের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে স্টক এনালাইসেস বিডি নামের একটি টেলিগ্রাম গ্রুপ ;আরো ২ লাখ বাই হবে, কোপা সামসু কোপা” নামের চমকপ্রদ তথ্য দিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করার জন্য গ্রুপ মেম্বারদের শেয়ার কিনতে বলে নিজেদের হাতে থাকা শেয়ারের দাম বাড়িয়ে গ্রুপের মেম্বারদের হাতে ধরিয়ে সবাইকে বিপদে ফেলাই হল তাদের প্রধান কাজ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ষ্টক এনালাইসিস বিডির এডমিন মইন উদ্দিন তানিম নামের একজন ইউটিউবারের নাম নকল করে নিজে টেলিগ্রাম গ্রুপ পরিচালনা করে অন্যদের ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছেন।এসব গ্রুপের অসংখ্য আইডির মাধ্যমে মূল্য সংবেদশীল তথ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে গুজব ছড়িয়ে এসব চক্র পুঁজিবাজার থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। তাদের থামাতে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া না হলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

বিজনেস আওয়ার ২৪.কম স্টক এনালাইসেস বিডি চ্যানেল অনুসন্ধান করে দেখতে পায় চ্যানেলটির এডমিন মইন উদ্দিন তানিম নিজে এশিয়া ইনস্যুরেন্স ৯৮ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে ক্রয় করেন। নিজে ১০৮ টাকায় বিক্রি করে কিন্তু গ্রুপের সবাইকে কেনায় ১০৬ থেকে ১০৮ টাকার মধ্যে। একইভাবে এশিয়া ইনস্যুরেন্স সবাইকে ৭৫ টাকায় স্টপলস করিয়ে তমিজ টেক্সটাইল ২৯০ থেকে ৩০০ টাকার ভেতর কিনিয়েছে। একই ভাবে মীর আখতার, দেশ গার্মেন্টস, কেডিএস সহ অন্যান্য শেয়ার উচ্চ দামে ক্রয় করিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। এদিকে তাকে বিশ্বাস করে এসব গ্রুপের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা অসহায় হয়ে পড়েছে। তিনি নিজেকে শিক্ষক পরিচয় দিয়ে এবং ইসলামের বিভিন্ন বাণী ব্যবহার করে মানুষের ইমোশনকে কাজে লাগিয়ে এই কাজটি করেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ষ্টক এনালাইসিস বিডির এডমিন মইন উদ্দিন তানিম তার গ্রূপের প্রচারের জন্য সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে এডমিন বানান এবং কাজ উদ্ধার হলে তাদেরকে না বলেই এডমিন থেকে রিমুভ করে তাদেরকে অপমানিত করেন।

অনুসন্ধানে দেখা যায় তিনি প্রথমে শেয়ার কিনেন, তারপর সেই শেয়ারের ম্যাচুরিটির দিনে গ্রূপের সবাইকে কিনতে বলেন। সবাই কিনলে যখনি হলট্রেড হয় তখন তার হাতে থাকা শেয়ারগুলো বিক্রি করে দেন। এভাবেই তিনি দিনের পর দিন সবার সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছে।

জানা গেছে,এরকম ফেসবুক এবং টেলিগ্রাম গ্রুপে নিজেরা জাঙ্ক বা লো পেইডআপ কিছু শেয়ার আগে নিজেরা কিনে পরবর্তীতে ‘হট আইটেম’, ‘গ্যারান্টি আইটেম’, ‘সাতদিনে তিনগুণ মুনাফা আইটেম’- এমন চটকদার পোস্ট দিয়ে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা হচ্ছে। এমন চটকদার পোস্টে আকৃষ্ট হয়ে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ চক্রের খপ্পরে পড়ছেন। এতে কোনো কোনো বিনিয়োগকারী লাভের মুখ দেখলেও বেশির ভাগই প্রতারিত হচ্ছেন। কারন এই চক্র আগে নিজেরা বিক্রি করে পরবর্তীতে অন্যদের বিক্রি করতে বলে কিন্তু তারা আর বায়ার পাই না। এর ফলে বিনিয়োগকারিরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এদিকে বিভিন্ন গ্রুপের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, করসাজি চক্র বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের জন্য বিভিন্ন ধরনের আইটেম দেয়ার পাশাপাশি মূল্য সংবেদশীল তথ্যও আগাম দিচ্ছে। এমনকি সূচকের উঠা-নামার পূর্বাভাসও দেয়া হচ্ছে। অনুমান নির্ভর দেয়া এসব তথ্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাস্তবে মিলেও যাচ্ছে। আর আগাম দেয়া কোনো তথ্য বাস্তবে মিলে গেলে পরবর্তীতে সেটা ফলাও করে পোস্ট দেয়া হচ্ছে। এতে অতি মুনাফার লোভে কারসাজি চক্রের ফাঁদে পা দিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। এই ধরনের কিছু চক্র যেমন ( ষ্টক এনালাইসিস বিডি, বিডি স্টক ডিসকাশন, বিডি স্টক মার্কেট ইত্যাদি )।

আমাদের আগের অনুসন্ধানে লিখেছিলাম এসব গ্রুপের সদস্য সংখ্যা বেশি থাকায় সহজেই গুজব ছড়িয়ে কোনো বিশেষ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ানো সম্ভব। এ বিষয়ে উদাহরণ দিয়ে এক বিনিয়োগকারী বলেন, কিছু গ্রুপ আছে যার সদস্য কয়েক হাজার। ধরেন একটি গ্রুপে ৫০০০ সদস্য আছে। ওই গ্রুপ থেকে যদি কোনো একটি কোম্পানির শেয়ার কিনতে বলা হয় ভেবে দেখেন তাহলে ওই কোম্পানির শেয়ারের দাম অবশ্যই বড়বে।

ফাঁদে পা দেয়া বিনিয়োগকারীদের এসব চক্র টাকার বিনিময়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য দেয়ার পাশাপাশি কখন কোন কোম্পানির শেয়ার কিনতে হবে অথবা বিক্রি করতে হবে, সে বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছে। এসব চক্রের সদস্যরা ফেসবুকে নিজেদের বিশ্লেষক হিসেবে দাবি করছে। তবে সিকিউরিটিজ আইনে বিএসইসির সনদ ছাড়া বাজার বিশ্লেষক হওয়ার সুযোগ নেই। কেউ এ ধরনের কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং ন্যূনতম পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে আইনে।

এদিকে গুজব থেকে পুঁজিবাজার রক্ষায় বিএসইসি ২০০১ সালে একটি নির্দেশনা জারি করে। ওই নির্দেশনায় বলা হয়, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বিনিয়োগকারী ও পুঁজিবাজারের সঙ্গে যে কোনো উপায়ে জড়িত ব্যক্তি কোনো গুজব ছড়ানো এবং গুজব ছড়াতে সহায়তা করা থেকে বিরত থাকবেন। যে কোনো উপায়েই অর্থাৎ আচার-আচরণ বা মৌখিকভাবে তথ্য অথবা ঘটনা বিকৃত করা, ভুলভাবে পরিচালিত করা কিংবা কোনো তথ্য গোপন করা, যা পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করতে পারে- এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। গুজবের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে ন্যূনতম এক লাখ টাকা জরিমানাসহ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ফেসবুক ও খুদে বার্তার মাধ্যমে গুজব ছড়ানো বন্ধ করতে ২০১৩ সালের অক্টোবরে একটি নির্দেশনা জারি করে বিএসইসি। ওই নির্দেশনায় বলা হয়, একটি মহল ফেসবুক, বা টেলিগ্রামে খুদে বার্তাসহ বিভিন্নভাবে পুঁজিবাজার নিয়ে গুজব ছড়িয়ে বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করছে। বিষয়টি সিকিউরিটিজ আইনের পরিপন্থী। তাই এসব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হচ্ছে। অন্যথায় সিকিউরিটিজ আইনে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাবু নামের এক বিনিয়োগকারী বলেন, কয়েক মাস ধরে পুঁজিবাজারে মন্দা চলছে। এর মধ্যেও বেশ কয়েকটি কোম্পানি থেকে বিনিয়োগকারীরা মোটা অঙ্কের মুনাফা তুলে নিয়েছে। বাজারে যেমন ভালো কোম্পানি আছে, তেমনি ‘জেড’, ‘বি’ গ্রুপের কোম্পানিও আছে। এসব কোম্পানির বেশির ভাগের শেয়ারের দাম বাড়ার তথ্য আগেই বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে ছড়ানো হয়েছে। বাস্তবেও দেখা যাচ্ছে দাম বাড়ছে।

বিজনেস আওয়ার/এন

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

আরো ২ লাখ বাই হবে, কোপা সামসু কোপা

পোস্ট হয়েছে : ০৯:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ মার্চ ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: কোনভাবেই থামানো যাচ্ছে না সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রাম, ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ সহ কিছু পুজিবাজার কারসাছি চক্রকে। চক্রটি গ্রুপের পাশাপাশি পার্সোনাল ম্যাসেজ দিয়ে এই কারসাজি করেন বলে জানা গেছে। বিজনেস আওয়ার২৪.কমের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে স্টক এনালাইসেস বিডি নামের একটি টেলিগ্রাম গ্রুপ ;আরো ২ লাখ বাই হবে, কোপা সামসু কোপা” নামের চমকপ্রদ তথ্য দিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করার জন্য গ্রুপ মেম্বারদের শেয়ার কিনতে বলে নিজেদের হাতে থাকা শেয়ারের দাম বাড়িয়ে গ্রুপের মেম্বারদের হাতে ধরিয়ে সবাইকে বিপদে ফেলাই হল তাদের প্রধান কাজ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ষ্টক এনালাইসিস বিডির এডমিন মইন উদ্দিন তানিম নামের একজন ইউটিউবারের নাম নকল করে নিজে টেলিগ্রাম গ্রুপ পরিচালনা করে অন্যদের ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছেন।এসব গ্রুপের অসংখ্য আইডির মাধ্যমে মূল্য সংবেদশীল তথ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে গুজব ছড়িয়ে এসব চক্র পুঁজিবাজার থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। তাদের থামাতে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া না হলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

বিজনেস আওয়ার ২৪.কম স্টক এনালাইসেস বিডি চ্যানেল অনুসন্ধান করে দেখতে পায় চ্যানেলটির এডমিন মইন উদ্দিন তানিম নিজে এশিয়া ইনস্যুরেন্স ৯৮ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে ক্রয় করেন। নিজে ১০৮ টাকায় বিক্রি করে কিন্তু গ্রুপের সবাইকে কেনায় ১০৬ থেকে ১০৮ টাকার মধ্যে। একইভাবে এশিয়া ইনস্যুরেন্স সবাইকে ৭৫ টাকায় স্টপলস করিয়ে তমিজ টেক্সটাইল ২৯০ থেকে ৩০০ টাকার ভেতর কিনিয়েছে। একই ভাবে মীর আখতার, দেশ গার্মেন্টস, কেডিএস সহ অন্যান্য শেয়ার উচ্চ দামে ক্রয় করিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। এদিকে তাকে বিশ্বাস করে এসব গ্রুপের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা অসহায় হয়ে পড়েছে। তিনি নিজেকে শিক্ষক পরিচয় দিয়ে এবং ইসলামের বিভিন্ন বাণী ব্যবহার করে মানুষের ইমোশনকে কাজে লাগিয়ে এই কাজটি করেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ষ্টক এনালাইসিস বিডির এডমিন মইন উদ্দিন তানিম তার গ্রূপের প্রচারের জন্য সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে এডমিন বানান এবং কাজ উদ্ধার হলে তাদেরকে না বলেই এডমিন থেকে রিমুভ করে তাদেরকে অপমানিত করেন।

অনুসন্ধানে দেখা যায় তিনি প্রথমে শেয়ার কিনেন, তারপর সেই শেয়ারের ম্যাচুরিটির দিনে গ্রূপের সবাইকে কিনতে বলেন। সবাই কিনলে যখনি হলট্রেড হয় তখন তার হাতে থাকা শেয়ারগুলো বিক্রি করে দেন। এভাবেই তিনি দিনের পর দিন সবার সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছে।

জানা গেছে,এরকম ফেসবুক এবং টেলিগ্রাম গ্রুপে নিজেরা জাঙ্ক বা লো পেইডআপ কিছু শেয়ার আগে নিজেরা কিনে পরবর্তীতে ‘হট আইটেম’, ‘গ্যারান্টি আইটেম’, ‘সাতদিনে তিনগুণ মুনাফা আইটেম’- এমন চটকদার পোস্ট দিয়ে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা হচ্ছে। এমন চটকদার পোস্টে আকৃষ্ট হয়ে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ চক্রের খপ্পরে পড়ছেন। এতে কোনো কোনো বিনিয়োগকারী লাভের মুখ দেখলেও বেশির ভাগই প্রতারিত হচ্ছেন। কারন এই চক্র আগে নিজেরা বিক্রি করে পরবর্তীতে অন্যদের বিক্রি করতে বলে কিন্তু তারা আর বায়ার পাই না। এর ফলে বিনিয়োগকারিরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এদিকে বিভিন্ন গ্রুপের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, করসাজি চক্র বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের জন্য বিভিন্ন ধরনের আইটেম দেয়ার পাশাপাশি মূল্য সংবেদশীল তথ্যও আগাম দিচ্ছে। এমনকি সূচকের উঠা-নামার পূর্বাভাসও দেয়া হচ্ছে। অনুমান নির্ভর দেয়া এসব তথ্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাস্তবে মিলেও যাচ্ছে। আর আগাম দেয়া কোনো তথ্য বাস্তবে মিলে গেলে পরবর্তীতে সেটা ফলাও করে পোস্ট দেয়া হচ্ছে। এতে অতি মুনাফার লোভে কারসাজি চক্রের ফাঁদে পা দিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। এই ধরনের কিছু চক্র যেমন ( ষ্টক এনালাইসিস বিডি, বিডি স্টক ডিসকাশন, বিডি স্টক মার্কেট ইত্যাদি )।

আমাদের আগের অনুসন্ধানে লিখেছিলাম এসব গ্রুপের সদস্য সংখ্যা বেশি থাকায় সহজেই গুজব ছড়িয়ে কোনো বিশেষ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ানো সম্ভব। এ বিষয়ে উদাহরণ দিয়ে এক বিনিয়োগকারী বলেন, কিছু গ্রুপ আছে যার সদস্য কয়েক হাজার। ধরেন একটি গ্রুপে ৫০০০ সদস্য আছে। ওই গ্রুপ থেকে যদি কোনো একটি কোম্পানির শেয়ার কিনতে বলা হয় ভেবে দেখেন তাহলে ওই কোম্পানির শেয়ারের দাম অবশ্যই বড়বে।

ফাঁদে পা দেয়া বিনিয়োগকারীদের এসব চক্র টাকার বিনিময়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য দেয়ার পাশাপাশি কখন কোন কোম্পানির শেয়ার কিনতে হবে অথবা বিক্রি করতে হবে, সে বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছে। এসব চক্রের সদস্যরা ফেসবুকে নিজেদের বিশ্লেষক হিসেবে দাবি করছে। তবে সিকিউরিটিজ আইনে বিএসইসির সনদ ছাড়া বাজার বিশ্লেষক হওয়ার সুযোগ নেই। কেউ এ ধরনের কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং ন্যূনতম পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে আইনে।

এদিকে গুজব থেকে পুঁজিবাজার রক্ষায় বিএসইসি ২০০১ সালে একটি নির্দেশনা জারি করে। ওই নির্দেশনায় বলা হয়, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বিনিয়োগকারী ও পুঁজিবাজারের সঙ্গে যে কোনো উপায়ে জড়িত ব্যক্তি কোনো গুজব ছড়ানো এবং গুজব ছড়াতে সহায়তা করা থেকে বিরত থাকবেন। যে কোনো উপায়েই অর্থাৎ আচার-আচরণ বা মৌখিকভাবে তথ্য অথবা ঘটনা বিকৃত করা, ভুলভাবে পরিচালিত করা কিংবা কোনো তথ্য গোপন করা, যা পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করতে পারে- এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। গুজবের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে ন্যূনতম এক লাখ টাকা জরিমানাসহ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ফেসবুক ও খুদে বার্তার মাধ্যমে গুজব ছড়ানো বন্ধ করতে ২০১৩ সালের অক্টোবরে একটি নির্দেশনা জারি করে বিএসইসি। ওই নির্দেশনায় বলা হয়, একটি মহল ফেসবুক, বা টেলিগ্রামে খুদে বার্তাসহ বিভিন্নভাবে পুঁজিবাজার নিয়ে গুজব ছড়িয়ে বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করছে। বিষয়টি সিকিউরিটিজ আইনের পরিপন্থী। তাই এসব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হচ্ছে। অন্যথায় সিকিউরিটিজ আইনে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাবু নামের এক বিনিয়োগকারী বলেন, কয়েক মাস ধরে পুঁজিবাজারে মন্দা চলছে। এর মধ্যেও বেশ কয়েকটি কোম্পানি থেকে বিনিয়োগকারীরা মোটা অঙ্কের মুনাফা তুলে নিয়েছে। বাজারে যেমন ভালো কোম্পানি আছে, তেমনি ‘জেড’, ‘বি’ গ্রুপের কোম্পানিও আছে। এসব কোম্পানির বেশির ভাগের শেয়ারের দাম বাড়ার তথ্য আগেই বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে ছড়ানো হয়েছে। বাস্তবেও দেখা যাচ্ছে দাম বাড়ছে।

বিজনেস আওয়ার/এন

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: