জুয়েল রানা : কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর হওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন জটিলতা সমাধানের পর থেকে টানা উত্থানে রয়েছে এসএমই মার্কেটের কোম্পানিগুলোর শেয়ার। যা সহজ হয়েছে এই বাজারের কোম্পানিগুলোর লেনদেনযোগ্য শেয়ার সংখ্যা কম হওয়ার জন্য। এছাড়া কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর অবমূল্যায়িত পর্যায়ে থাকার কারনেও এক শ্রেণীর বিনিয়োগকারীর মধ্যে চাহিদা বেড়েছে।
গত ২৮ মার্চ বিকালে ডিএসইর ঘোষণা দেওয়ার আগ পর্যন্ত শেয়ারবাজারে এসএমইতে লেনদেন করার যোগ্য হওয়ার জন্য কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর হতে ডিএসইর ইএসএস ওয়েবসাইটে প্রদত্ত অনলাইন ফর্ম পূরণ করে, তা ডিএসইতে মেইল করতে হতো। এরপরে ডিএসই তা যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দিত। এরপরে একজন বিনিয়োগকারী ওই বাজারে লেনদেন করতে পারতেন। তবে এখন থেকে বিনিয়োগকারীদেরকে রেজিস্ট্রশন করা লাগবে না। পোর্টফোলিওতে ২০ লাখ টাকার বিনিয়োগ (ক্রয় মূল্য বা বাজার দরের সর্বোচ্চটা বিবেচ্য) থাকলেই ডিএসই স্বয়ংক্রিয়ভাবে রেজিস্ট্রেশন করে দেবে।
এই ঘোষণার পর থেকেই এসএমই মার্কেটের শেয়ার দরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিশেষ আগ্রহ তৈরী হয়েছে। যাতে করে শেয়ারগুলোর এখন দর বাড়ছে। যে শেয়ারগুলো এর আগে অভিহিত মূল্যের নিচে বা অবমূল্যায়িত পর্যায়ে ছিল। তবে গত কয়েকদিনের দর বৃদ্ধির পরেও দুটি কোম্পানি ছাড়া বাকি ৮টির অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির মতো কোন ঘটনা ডিএসইর নজরে আসেনি।
এই মার্কেটে হঠাৎ করে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের অন্যতম কারন হিসাবে রয়েছে তুলনামূলক কম শেয়ার দর। এছাড়া লেনদেনযোগ্য শেয়ার সংখ্যা কম। এছাড়া মূল মার্কেটে একটি নতুন কোম্পানির কয়েক গুণ দর বৃদ্ধি স্বাভাবিক হলেও এখানে সেটা হয়নি।
এসএমই মার্কেটে ওটিসি থেকে ৪টি আনা হলেও বাকি ৬টি নতুন কোম্পানি। আইপিওর ন্যায় অর্থ সংগ্রহ করে লেনদেন শুরু হয়েছে। সেসব শেয়ারও অভিহিত মূল্যের নিচে ছিল। তবে মূল মার্কেটে এমন নতুন শেয়ারে শুরুতে টানা দর বৃদ্ধির মাধ্যমে কয়েকগুণ হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক ঘটনা।
গত কয়েকদিনের এসএমই মার্কেটের শেয়ার দর বৃদ্ধিতে অনুসন্ধান করেছে ডিএসই। এতে নিয়ালকো অ্যালয়েজ ও এপেক্স ওয়েভিংয়ের শেয়ার দর অস্বাভাবিক বেড়েছে বলে জানিয়েছে ডিএসই কর্তৃপক্ষ। ওই দুটি কোম্পানির মধ্যে নিয়ালকোর শেয়ার দর ৪৩.৪০ টাকায় রয়েছে। আর ওটিসি মার্কেট থেকে এসএমইতে আনা এপেক্স ওয়েভিংয়ের দর রয়েছে ২৫.৬০ টাকায়।
এসএমই মার্কেটে লেনদেন হওয়া নতুন কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেনযোগ্য শেয়ার সংখ্যা কোম্পানি কৃষিবিদ ফিড। এ কোম্পানিটি ২২ কোটি টাকা সংগ্রহে ২ কোটি ২০ লাখ শেয়ার ইস্যু করে, শুধুমাত্র সেগুলো লেনদেনযোগ্য। এছাড়া মোস্তফা মেটালের ১ কোটি ১০ লাখ ও ওরিজা অ্যাগ্রো, মাস্টার ফিড ও মামুন অ্যাগ্রোর ১ কোটি করে শেয়ার লেনদেনযোগ্য। আর নিয়ালকো অ্যালয়েজের ৭৫ লাখ শেয়ার লেনদেনযোগ্য।
কোম্পানির নাম | অর্থ উত্তোলন | শেয়ার ইস্যু |
কৃষিবিদ ফিড | ২২ কোটি | ২ কোটি ২০ লাখ |
মোস্তফা মেটাল | ১১ কোটি | ১ কোটি ১০ লাখ |
ওরিজা অ্যাগ্রো | ১০ কোটি | ১ কোটি |
মাস্টার ফিড | ১০ কোটি | ১ কোটি |
মামুন অ্যাগ্রো | ১০ কোটি | ১ কোটি |
নিয়ালকো অ্যালয়েজ | ৭ কোটি ৫০ লাখ | ৭৫ লাখ |
এদিকে ওটিসি থেকে আনা কোম্পানিগুলোরও সাধারন বিনিয়োগকারীদের হাতে থাকা লেনদেনযোগ্য শেয়ার সংখ্যা বেশি না। সবচেয়ে কম লেনদেনযোগ্য হিমাদ্রির শেয়ার। যে কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগকারীর আগ্রহ থাকলেও কোন বিক্রেতা নেই। এই কোম্পানিটির মাত্র ১১ হাজার ৭৭৫টি শেয়ার লেনদেনযোগ্য।
কোম্পানির নাম | মোট শেয়ার | উদ্যোক্তা/পরিচালকদের শেয়ার | বিনিয়োগকারীদের শেয়ার |
এপেক্স ওয়েভিং | ৩ কোটি ৮৯ লাখ | ১ কোটি ১৭ লাখ | ২ কোটি ৭২ লাখ |
বেঙ্গল বিস্কুট | ৭৯ লাখ | ২৪ লাখ | ৫৫ লাখ |
ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েজ | ১ কোটি | ৪৭ লাখ | ৫৩ লাখ |
হিমাদ্রি লিমিটেড | ৭৫০০০০টি | ৭৩৮২২৫টি | ১১৭৭৫টি |
উল্লেখ্য, এসএমইতে আসা নতুন কোম্পানিগুলোর কিআইও বা শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের পূর্বে থাকা শেয়ারে ১ বছরের লক-ইন থাকে।
বিজনেস আওয়ার/০৬ এপ্রিল, ২০২২/জেআর