ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এডিএন টেলিকমে আইপিও ফান্ডের অপব্যবহার

  • পোস্ট হয়েছে : ০৯:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ জুলাই ২০২০
  • 85

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়াবাজার থেকে সংগৃহিত টাকার অপব্যবহার শুরু করেছে এডিএন টেলিকম। কোম্পানিটি প্রসপেক্টাসে উল্লেখিত খাতে আইপিও অর্থ ব্যবহারের পরিবর্তে ব্যাংক ও লিজিং কোম্পানিতে এফডিআর শুরু করেছে। এক্ষেত্রে গৃহিত ঋণের বিপরীতে ছাড়পত্র চিঠির (সেঙ্কশন লেটার) শর্ত হিসেবে ইস্টার্ন ব্যাংকে এফডিআর করা হয়েছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের লাল বা বিপদজনক চিহ্নিত লিজিং কোম্পানি প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টে এফডিআর করে বিনিয়োগকারীদের অর্থকে ঝুকিঁতে ফেলা হয়েছে। তবে এফডিআর করার জন্য শেয়ারহোল্ডারদের কোন অনুমোদন নেয়নি।

এডিএন টেলিকম শেয়ারবাজার থেকে ৫৭ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে বিএমআরই, ডাটা সেন্টার স্থাপন ও ঋণ পরিশোধের জন্য। এরমধ্যে ৫ মাস সময় পার হয়ে গেলেও বিএমআরই এবং ডাটা সেন্টার স্থাপন করার জন্য কোন অর্থ ব্যবহার করা হয়নি। আর অর্থ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করার কথা প্রসপেক্টাসে উল্লেখ করলেও তা এখনো পুরোপুরি করা হয়নি।

আইপিওতে সংগৃহিত অর্থের মধ্যে ৩২ কোটি ৬৬ লাখ ৬০ হাজার ১৮ টাকা দিয়ে বিএমআরই, ৯ কোটি ৩২ লাখ ৩৬ হাজার ৬০৯ টাকা দিয়ে ডাটা সেন্টার স্থাপন ও ১২ কোটি ৬ লাখ ৩ হাজার ৩৭৩ টাকা ঋণ পরিশোধে ব্যবহারের কথা। এরমধ্যে ঋণ পরিশোধের সময় পার হয়ে গেলেও এখনো ১ কোটি ৩৮ লাখ ৬০ হাজার ৩১ টাকা অপরিশোধিত রয়েছে।

আইপিও অর্থ প্রাপ্তির ১ বছরের মধ্যে বিএমআরই ও ৯ মাসের মধ্যে ডাটা সেন্টার স্থাপনের কাজ করার কথা প্রসপেক্টাসে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ৫ মাসেও তার কোন অগ্রগতি নেই।

এদিকে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ না করলেও নিজেদের স্বার্থে এফডিআর করেছে। তবে শেয়ারহোল্ডারদের কোন অনুমোদন এডিএন কর্তৃপক্ষ নেয়নি। এর আগে রানার অটোমোবাইলস প্রসপেক্টাসের বাহিরে গিয়ে আইপিও ফান্ড এফডিআর করার জন্য ইজিএম করে শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতি নিয়েছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে তার অনুমোদন নিয়েছে।

এডিএন টেলিকম কর্তৃপক্ষ আইপিও ফান্ডের ৭ কোটি টাকা এরইমধ্যে এফডিআর করে ফেলেছে। এরমধ্যে ৫ কোটি টাকা ইস্টার্ন ব্যাংকে এবং ২ কোটি টাকা প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টে এফডিআর করা হয়েছে। ইস্টার্ন ব্যাংকে ৪ কোটি টাকাই এফডিআর করা হয়েছে গৃহিত ঋণের ছাড়পত্র চিঠির (সেঙ্কশন লেটার) শর্ত হিসেবে। এই তথ্য বিএসইসিতে জমা দেওয়ার পরেও দায়িত্বরত বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এডিএন টেলিকমকে কোন প্রশ্ন রাখেননি। এক্ষেত্রে প্রাইম ফাইন্যান্সের সঙ্গে তার সখ্যতা থাকায় প্রশ্ন করা হয়নি বলে অভিযোগ আছে।

অন্যদিকে এডিএন টেলিকম কর্তৃপক্ষ নিজেদের সহযোগি কোম্পানির স্বার্থে ওয়ান ব্যাংক থেকে আইপিও ফান্ড মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে স্থানান্তর করে ফেলেছেন। মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে এখন এডিএন টেলিকমের ৩০ কোটি ৬৭ লাখ টাকার আইপিও ফান্ড রয়েছে।

এফডিআর করার জন্য শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নেওয়া বা না নেওয়ার বিষয়টি জানেন না বলে জানিয়েছেন এডিএন টেলিকমের সচিব মো. মনির হোসেন।

বিজনেস আওয়ার/২৬ জুলাই, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

এডিএন টেলিকমে আইপিও ফান্ডের অপব্যবহার

পোস্ট হয়েছে : ০৯:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ জুলাই ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়াবাজার থেকে সংগৃহিত টাকার অপব্যবহার শুরু করেছে এডিএন টেলিকম। কোম্পানিটি প্রসপেক্টাসে উল্লেখিত খাতে আইপিও অর্থ ব্যবহারের পরিবর্তে ব্যাংক ও লিজিং কোম্পানিতে এফডিআর শুরু করেছে। এক্ষেত্রে গৃহিত ঋণের বিপরীতে ছাড়পত্র চিঠির (সেঙ্কশন লেটার) শর্ত হিসেবে ইস্টার্ন ব্যাংকে এফডিআর করা হয়েছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের লাল বা বিপদজনক চিহ্নিত লিজিং কোম্পানি প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টে এফডিআর করে বিনিয়োগকারীদের অর্থকে ঝুকিঁতে ফেলা হয়েছে। তবে এফডিআর করার জন্য শেয়ারহোল্ডারদের কোন অনুমোদন নেয়নি।

এডিএন টেলিকম শেয়ারবাজার থেকে ৫৭ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে বিএমআরই, ডাটা সেন্টার স্থাপন ও ঋণ পরিশোধের জন্য। এরমধ্যে ৫ মাস সময় পার হয়ে গেলেও বিএমআরই এবং ডাটা সেন্টার স্থাপন করার জন্য কোন অর্থ ব্যবহার করা হয়নি। আর অর্থ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করার কথা প্রসপেক্টাসে উল্লেখ করলেও তা এখনো পুরোপুরি করা হয়নি।

আইপিওতে সংগৃহিত অর্থের মধ্যে ৩২ কোটি ৬৬ লাখ ৬০ হাজার ১৮ টাকা দিয়ে বিএমআরই, ৯ কোটি ৩২ লাখ ৩৬ হাজার ৬০৯ টাকা দিয়ে ডাটা সেন্টার স্থাপন ও ১২ কোটি ৬ লাখ ৩ হাজার ৩৭৩ টাকা ঋণ পরিশোধে ব্যবহারের কথা। এরমধ্যে ঋণ পরিশোধের সময় পার হয়ে গেলেও এখনো ১ কোটি ৩৮ লাখ ৬০ হাজার ৩১ টাকা অপরিশোধিত রয়েছে।

আইপিও অর্থ প্রাপ্তির ১ বছরের মধ্যে বিএমআরই ও ৯ মাসের মধ্যে ডাটা সেন্টার স্থাপনের কাজ করার কথা প্রসপেক্টাসে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ৫ মাসেও তার কোন অগ্রগতি নেই।

এদিকে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ না করলেও নিজেদের স্বার্থে এফডিআর করেছে। তবে শেয়ারহোল্ডারদের কোন অনুমোদন এডিএন কর্তৃপক্ষ নেয়নি। এর আগে রানার অটোমোবাইলস প্রসপেক্টাসের বাহিরে গিয়ে আইপিও ফান্ড এফডিআর করার জন্য ইজিএম করে শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতি নিয়েছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে তার অনুমোদন নিয়েছে।

এডিএন টেলিকম কর্তৃপক্ষ আইপিও ফান্ডের ৭ কোটি টাকা এরইমধ্যে এফডিআর করে ফেলেছে। এরমধ্যে ৫ কোটি টাকা ইস্টার্ন ব্যাংকে এবং ২ কোটি টাকা প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টে এফডিআর করা হয়েছে। ইস্টার্ন ব্যাংকে ৪ কোটি টাকাই এফডিআর করা হয়েছে গৃহিত ঋণের ছাড়পত্র চিঠির (সেঙ্কশন লেটার) শর্ত হিসেবে। এই তথ্য বিএসইসিতে জমা দেওয়ার পরেও দায়িত্বরত বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এডিএন টেলিকমকে কোন প্রশ্ন রাখেননি। এক্ষেত্রে প্রাইম ফাইন্যান্সের সঙ্গে তার সখ্যতা থাকায় প্রশ্ন করা হয়নি বলে অভিযোগ আছে।

অন্যদিকে এডিএন টেলিকম কর্তৃপক্ষ নিজেদের সহযোগি কোম্পানির স্বার্থে ওয়ান ব্যাংক থেকে আইপিও ফান্ড মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে স্থানান্তর করে ফেলেছেন। মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে এখন এডিএন টেলিকমের ৩০ কোটি ৬৭ লাখ টাকার আইপিও ফান্ড রয়েছে।

এফডিআর করার জন্য শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নেওয়া বা না নেওয়ার বিষয়টি জানেন না বলে জানিয়েছেন এডিএন টেলিকমের সচিব মো. মনির হোসেন।

বিজনেস আওয়ার/২৬ জুলাই, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: