বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : এবার সাধারন বিনিয়োগকারীদের ঠকাতে দূর্বল কোম্পানি রহিমা ফুডকে বেছে নিয়েছে গেম্বলাররা। যারা এই কোম্পানি নারিকেল উৎপাদন ও বাজারজাতকরনে অনেক মুনাফা করবে বলে সাধারন বিনিয়োগকারীদেরকে আশান্বিত করার চেষ্টা করছে। অথচ ম্যারিকো বাংলাদেশের প্যারাসুট নারিকেল তেলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই হিমশিম খাচ্ছে দেশীয় অনেক বড় বড় কোম্পানি।
দূর্বল হওয়ার কারনে রহিমা ফুড থেকে বিনিয়োগই ফেরত পাওয়া যাবে না। যে কোম্পানিটিতে বিনিয়োগ মূল্য-আয় (পিই) অনুপাত দিক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় মার্জিন ঋণ অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সেই কোম্পানিতে সাধারন বিনিয়োগকারীদেরকে লোকসানে ফেলতে প্রতারণার ফাঁদ তৈরী করা হয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মূল্য-আয় অনুপাত (পিই রেশিও) বিশ্লেষণ একটি অন্যতম হাতিয়ার। যার মাধ্যমে সহজেই বোঝা যায় বিনিয়োগ ফেরত পেতে কত সময় লাগবে। এই পদ্ধতিতে রহিমা ফুড থেকে বিনিয়োগ ফেরত পাওয়া যাবে না। কারন কোম্পানিটি এখন লোকসানে রয়েছে।
দেখা গেছে, ২৩ আগস্ট লেনদেন শেষে রহিমা ফুডের শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ২৬৪.৫০ টাকা। আর কোম্পানিটির ২০২১-২২ অর্থবছরের ৯ মাসে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ০.০৬ টাকা। যাতে করে ২৬৪.৫০ টাকার বিনিয়োগ ফেরত পাওয়া যাবে না। এমনকি কোম্পানি অবসায়নেও অভিহিত মূল্য ফেরত পাওয়া যাবে না। কারন কোম্পানিটিতে রিটেইন আর্নিংস নেগেটিভ হয়ে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ নেমে এসেছে ৯.১৮ টাকায়।
তবে কোম্পানির ভিত্তি ছাড়াও অনেক সময় দূর্বল কোম্পানির শেয়ার থেকে কারসাজির মাধ্যমে মুনাফা করা যায়। সেক্ষেত্রে একটি পক্ষ লাভবান হলেও অন্য একটি পক্ষকে বড় লোকসান গুণতে হয়। আর সেই দলে থাকে সাধারন বিনিয়োগকারীরা। যারা আবার এজন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে শুরু করে সরকারকে দোষারোপ করে থাকে। অথচ তাকে ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ার কিনতে কেউ বাধ্য করে না।
এমন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও গেম্বলারদের প্রলোভনে রহিমা ফুডে বিনিয়োগকারীদের এখনো আগ্রহে রয়েছে। তবে কোম্পানিটির শেয়ার দর নিয়ে বিনিয়োগকারীদেরকে সচেতন করার জন্য ডিএসই কর্তৃপক্ষ ওয়েবসাইটে তথ্যও প্রকাশ করেছে। কয়েক দফায় ডিএসই জানায়, রহিমা ফুডের অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির পেছনে কোন কারন নেই।
কারসাজিকারদের ইচ্ছাতেই তালিকাচ্যুত রহিমা ফুডকে লেনদেনে ফিরিয়ে আনা হয়। তবে একইসঙ্গে তালিকাচ্যুত আরেক কোম্পানি মডার্ন ডাইংকে না আনায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরী হয়। দুটি কোম্পানির ব্যবসায়িক অবস্থা একইরকম থাকা সত্ত্বেও বিএসইসির একপাক্ষিক সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি তারা।
তালিকাচ্যুতির আগেই রহিমা ফুডের শেয়ার নিয়ে কারসাজি শুরু হয়। স্বল্পমূলধনী কোম্পনিটি বন্ধ থাকলেও নানা সময় বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে শেয়ার দর করা হয় আকাশচুম্বি। কিন্তু ডিএসইর তালিকাচ্যুতির সিদ্ধান্তে কারসাজিকারদের কপালে ভাঁজ পড়ে। যা কেটে যায় নতুন কমিশনের দায়িত্ব গ্রহনের পরে।
বিজনেস আওয়ার/২৩ আগস্ট, ২০২২/আরএ