বিজিনেস আওয়ার ডেস্ক: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দেহের কোনও নির্দিষ্ট অঙ্গ নয়, এটি দেহকে সুস্থ ও ফিট রাখার চাবিকাঠি। ইমিউনিটি বৃদ্ধি করতে আমরা অনেকেই অনেকরকম পন্থা অবলম্বন করি। কিছু ভালো অভ্যাস তৈরি করেই আমরা আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারি।
শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে চান তাহলে আপনাকে নিয়ম করে মানতে হবে অন্তত ১০টি বিষয়:
১. সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে প্রায় তিন গ্লাস পানি পান করুন। তারপর শবাসনে অর্থাৎ বালিশ ছাড়া চিৎ হয়ে হাত-পা ছড়িয়ে ১০ মিনিট শুয়ে থাকুন। এরপর ৩৫ মিনিট কোনো পানাহার করবেন না। খাওয়ার আধ ঘন্টা আগে ২ গ্লাস ও ১ ঘন্টা পরে ২ গ্লাস করে পানি পান করা ভালো।
২. শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম বা যোগব্যায়ামে যাকে বলে প্রাণায়াম, তা যখনই সময় পাবেন করবেন। এতে করে ফুসফুসসহ সারা শ্বাসতন্ত্র শক্তিশালী থাকবে। সেইসঙ্গে আপনার বয়স ও শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী যোগব্যায়ামের কিছু আসন প্রতিদিন খালিপেটে চর্চা করতে ভুলবেন না।
৩. প্রতিদিন খোলা জায়গায় ৪৫ মিনিট জোরে জোরে হাঁটুন; একবারে সম্ভব না হলে কয়েকবারে। এছাড়া প্রতিদিন অন্তত ১ ঘন্টা কায়িক পরিশ্রম, বিশেষ করে ঘরের কাজ করুন।
৪. সবসময় সোজা হয়ে অর্থাৎ মেরুদণ্ড সোজা রেখে বসবেন। এক অবস্থায় ঘন্টাখানেকের বেশি বসে না থেকে উঠে দাঁড়ান বা একটু হেঁটে আসুন। শোয়ার সময়ে শিরদাঁড়া বাঁকিয়ে কুঁকড়ে শোবেন না। শক্ত বিছানায় চিৎ হয়ে কিংবা ডান দিকে পাশ ফিরে সোজা হয়ে শোবেন। এতে হৃৎপিণ্ডে চাপ পড়বে না।
৫. সারাদিনের খাবারের মধ্যে তিন ভাগের এক ভাগ রান্না করা খাবার ও বাকিটা ফলমূল ও শাক-সবজির সালাদ দিয়ে পূরণ করুন। রান্নায় তেল ব্যবহার না করাই ভালো। তবে ভর্তা ও সালাদে ঘানিভাঙা সরিষার তেল বা এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল গরম না করে মেশাতে পারেন। সাদা চিনি ও ময়দায় তৈরি সব ধরনের খাবার ও পানীয় থেকে দূরে থাকবেন।
৬. প্রতিদিন ৭ রকমের শাক-সবজি ও ৭ রকমের ফল খাওয়া ভালো। সবজি ও ফলে অনেক সময় কীটনাশক ও অন্যান্য ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক বস্তু মেশানো থাকে। তাই সব রকমের সবজি ও ফল ৩ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখলে এসব বিষ থেকে অনেকটা রক্ষা পাওয়া যায়। এছাড়া প্রতিদিন কিছু পরিমাণে আদা, কাঁচা হলুদ ও গোলমরিচ একসঙ্গে খাবেন। সকালে ও দুপুরে খাবারের সঙ্গে কাঁচা পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ ও কয়েক কোয়া রসুন খাবেন।
৭. প্রতিদিন মুগডালের পাতলা স্যুপ তেলছাড়া রান্না করে খাবেন। বিভিন্ন রকমের শাক-সবজি, যেমন কলমিশাক, থানকুনি, তেলাকুচা, পুদিন, বাঁধাকপি ও লাউশাক এবং লাউ, গাজর ও বিট ইত্যাদির রস খাওয়াও ভালো। শাক-সবজির রসে আদার রস ও মধু মিশিয়ে নেয়া যায়।
৮.ফলমূল চিবিয়ে খাওয়া ভালো হলেও পরিমাণে বেশি খেতে হলে আনারস, জাম্বুরা, পাকা পেঁপে ও বাঙ্গি জাতীয় ফল কেটে পানি মিশিয়ে ব্লেন্ডারে রস করেও খেতে পারেন। তবে প্রতিটি খাদ্যবস্তু খাওয়ার পরে শরীরে কোনো অস্বস্তি বা অ্যালার্জি হলে সেই খাবার না খাওয়াই ভালো।
৯. ভাজাপোড়া ও তেলচর্বিজাতীয় খাবার এবং তামাসহ সব ধরণের নেশাদ্রব্য থেকে দূরে থাকুন। পেট পরিষ্কার রাখতে সপ্তাহে একদিন উপোস থাকা ভালো।
১০. শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে মন। কাজেই মনকে সদা প্রফুল্ল রাখুন। নিজের ও অন্যের প্রতি আন্তরিক ভালবাসাই এটিকে সম্ভব করে তোলে। তখন অন্যদের ছোটখাটো ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমার চোখে দেখে অনাবিল আনন্দে থাকা যায়।
বিজনেস আওয়ার/ ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২/এএইচএ