ঢাকা , রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সত্যিকারের ‘স্পাইডারম্যানে’র ১৪২টি সুউচ্চ ভবন জয়!

  • পোস্ট হয়েছে : ০৫:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • 4

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: ফ্রান্সের ৬০ বছর বয়সী অ্যালেন রবার্ট। তিনি এ-ভবন ও-ভবন বেয়ে বেয়ে ওঠেন শীর্ষে। এ জন্য তার নাম হয়েছে ফ্রান্সের ‘স্পাইডারম্যান’ বা মাকড়সা মানব। শিকাগোর সিয়ার্স টাওয়ার থেকে হংকংয়ের ফোর সিজনস হোটেলসহ পৃথিবীর বহু উঁচু অট্টালিকার গা বেয়ে উঠেছেন তিনি। বাদ যায়নি দুবাইয়ের বুর্জ খলিফা, প্যারিসের আইফেল টাওয়ার কিংবা সান ফ্রান্সিসকোর গোল্ডেন গেট ব্রিজ।

এজন্য তিনি কয়েকবার গ্রেফতারও হয়েছেন, এবার নিজের ৬০তম জন্মদিনে এক কাণ্ড ঘটিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়েছেন তিনি।

রবার্ট এরই মধ্যে ইতিহাসের সেরা আরোহীদের একজন হিসেবে স্বীকৃত। তিনি ১০০টির বেশি দেশের ১৪২টি সুউচ্চ ভবন জয় করেছেন।

সংবাদ ও সামাজিক মাধ্যমে ‘ফরাসি স্পাইডারম্যান’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এই ব্যক্তির নাম অ্যালেন রবার্ট। এই তো গত শনিবার তার সর্বশেষ কাণ্ড সারাবিশ্বে খবরের শিরোনামে উঠে আসে।

দিনও ছিল তাৎপর্যপূর্ণ, রবার্টের ৬০তম জন্মদিন। বিশেষ এ উপলক্ষে তরতর করে উঠে গেলেন প্যারিসের ১৮৭ মিটার উঁচু ট্যুর টোটাল বিল্ডিং।

ফ্রান্সে চাকরি থেকে অবসরের বয়সও ৬০ বছর। তাই নতুন কীর্তিকে প্রতীকী বার্তা হিসেবে দেখছেন রবার্ট। ঠিক যেন ‘বালাই ষাট’। তার ভাষায় বয়স ষাট হওয়া আসলে কোন বিষয় না। ওই সময়েও কাজকর্ম চালিয়ে নেয়া যায়; খেলাধুলা ও দারুণ দারুণ অনেক কিছু করা যায়।

স্পাইডারম্যানের মতোই কম বয়স থেকেই অ্যালেন রবার্টের দেয়াল বেয়ে উঠার অভ্যাস। এ কাজে সুপারহিরোদের মতো তার নেই অতিলৌকিক কোনো ক্ষমতা। তার সঙ্গী সহজাত প্রবৃত্তি ও সাহস। তখন বয়স মাত্র ১১ বছর। বাসা থেকে চাবি নিয়ে বের হতে পারেননি; ওদিকে বাবা-মাও যে যার কাজে। ফলে দেয়াল বেয়ে উঠার বুদ্ধি আসে মাথায়। তাদের অ্যাপার্টমেন্ট ছিল সপ্তম তলায়। এই অস্বাভাবিক কাণ্ড নিয়ে ভয় থাকা ছিল স্বাভাবিক, তবে তিনি ব্যর্থ হননি।

১৯৭৫ সালে গগণচুম্বী অট্টালিকায় আরোহণের প্রশিক্ষণ নেয়া শুরু করেন দক্ষিণ ফ্রান্সের রবার্ট। ১৯৭৭ সাল থেকে তিনি পুরোদস্তুর আরোহী। খালি হাত, একজোড়া জুতা ও ঘাম প্রতিরোধে এক ব্যাগ চকের গুড়ো ছাড়া আর কোন সরঞ্জাম লাগে না তার। এ জন্য বেশ কয়েক দফা গ্রেফতারও হতে হয়েছে তাকে। ২০০৮ সালের অক্টোবরে লন্ডনের ২০২ মিটার উঁচু সেলসফোর্স টাওয়ারে উঠার পর তাকে আটক করা হয়। ২০১৯ সালে ফ্রাঙ্কফুর্টের একই অভিযোগে ধরে নেয় জার্মান পুলিশ। তখন ১৫৩ মিটার উঠতে সময় লেগেছিল মাত্র ২০ মিনিট।

গত এপ্রিলে রবার্ট বলছিলেন, এই খেলায় একপাশে জীবন, অন্য পাশে মৃত্যু। ফলে হিসাব সহজ। হয় ভয়, না হলে মনোযোগ। প্রতিটা আরোহণের আগে আমি ভয় পাই, এটা সত্য। কিন্তু যখনই প্রথমবার লক্ষ্য অর্জন করি পরিণত হই ভিন্ন একজনে। প্রবেশ করি ভিন্ন দুনিয়ায়।

টিনেজ সুপারহিরো ‘স্পাইডার ম্যান’কে বাস্তবিকই বয়সের বাধা থেকে মুক্তি দিয়েছেন অ্যালেন রবার্ট। আর আগামী দিনও নতুন নতুন নজির গড়তে চান।

বিজনেস আওয়ার/১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সত্যিকারের ‘স্পাইডারম্যানে’র ১৪২টি সুউচ্চ ভবন জয়!

পোস্ট হয়েছে : ০৫:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: ফ্রান্সের ৬০ বছর বয়সী অ্যালেন রবার্ট। তিনি এ-ভবন ও-ভবন বেয়ে বেয়ে ওঠেন শীর্ষে। এ জন্য তার নাম হয়েছে ফ্রান্সের ‘স্পাইডারম্যান’ বা মাকড়সা মানব। শিকাগোর সিয়ার্স টাওয়ার থেকে হংকংয়ের ফোর সিজনস হোটেলসহ পৃথিবীর বহু উঁচু অট্টালিকার গা বেয়ে উঠেছেন তিনি। বাদ যায়নি দুবাইয়ের বুর্জ খলিফা, প্যারিসের আইফেল টাওয়ার কিংবা সান ফ্রান্সিসকোর গোল্ডেন গেট ব্রিজ।

এজন্য তিনি কয়েকবার গ্রেফতারও হয়েছেন, এবার নিজের ৬০তম জন্মদিনে এক কাণ্ড ঘটিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়েছেন তিনি।

রবার্ট এরই মধ্যে ইতিহাসের সেরা আরোহীদের একজন হিসেবে স্বীকৃত। তিনি ১০০টির বেশি দেশের ১৪২টি সুউচ্চ ভবন জয় করেছেন।

সংবাদ ও সামাজিক মাধ্যমে ‘ফরাসি স্পাইডারম্যান’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এই ব্যক্তির নাম অ্যালেন রবার্ট। এই তো গত শনিবার তার সর্বশেষ কাণ্ড সারাবিশ্বে খবরের শিরোনামে উঠে আসে।

দিনও ছিল তাৎপর্যপূর্ণ, রবার্টের ৬০তম জন্মদিন। বিশেষ এ উপলক্ষে তরতর করে উঠে গেলেন প্যারিসের ১৮৭ মিটার উঁচু ট্যুর টোটাল বিল্ডিং।

ফ্রান্সে চাকরি থেকে অবসরের বয়সও ৬০ বছর। তাই নতুন কীর্তিকে প্রতীকী বার্তা হিসেবে দেখছেন রবার্ট। ঠিক যেন ‘বালাই ষাট’। তার ভাষায় বয়স ষাট হওয়া আসলে কোন বিষয় না। ওই সময়েও কাজকর্ম চালিয়ে নেয়া যায়; খেলাধুলা ও দারুণ দারুণ অনেক কিছু করা যায়।

স্পাইডারম্যানের মতোই কম বয়স থেকেই অ্যালেন রবার্টের দেয়াল বেয়ে উঠার অভ্যাস। এ কাজে সুপারহিরোদের মতো তার নেই অতিলৌকিক কোনো ক্ষমতা। তার সঙ্গী সহজাত প্রবৃত্তি ও সাহস। তখন বয়স মাত্র ১১ বছর। বাসা থেকে চাবি নিয়ে বের হতে পারেননি; ওদিকে বাবা-মাও যে যার কাজে। ফলে দেয়াল বেয়ে উঠার বুদ্ধি আসে মাথায়। তাদের অ্যাপার্টমেন্ট ছিল সপ্তম তলায়। এই অস্বাভাবিক কাণ্ড নিয়ে ভয় থাকা ছিল স্বাভাবিক, তবে তিনি ব্যর্থ হননি।

১৯৭৫ সালে গগণচুম্বী অট্টালিকায় আরোহণের প্রশিক্ষণ নেয়া শুরু করেন দক্ষিণ ফ্রান্সের রবার্ট। ১৯৭৭ সাল থেকে তিনি পুরোদস্তুর আরোহী। খালি হাত, একজোড়া জুতা ও ঘাম প্রতিরোধে এক ব্যাগ চকের গুড়ো ছাড়া আর কোন সরঞ্জাম লাগে না তার। এ জন্য বেশ কয়েক দফা গ্রেফতারও হতে হয়েছে তাকে। ২০০৮ সালের অক্টোবরে লন্ডনের ২০২ মিটার উঁচু সেলসফোর্স টাওয়ারে উঠার পর তাকে আটক করা হয়। ২০১৯ সালে ফ্রাঙ্কফুর্টের একই অভিযোগে ধরে নেয় জার্মান পুলিশ। তখন ১৫৩ মিটার উঠতে সময় লেগেছিল মাত্র ২০ মিনিট।

গত এপ্রিলে রবার্ট বলছিলেন, এই খেলায় একপাশে জীবন, অন্য পাশে মৃত্যু। ফলে হিসাব সহজ। হয় ভয়, না হলে মনোযোগ। প্রতিটা আরোহণের আগে আমি ভয় পাই, এটা সত্য। কিন্তু যখনই প্রথমবার লক্ষ্য অর্জন করি পরিণত হই ভিন্ন একজনে। প্রবেশ করি ভিন্ন দুনিয়ায়।

টিনেজ সুপারহিরো ‘স্পাইডার ম্যান’কে বাস্তবিকই বয়সের বাধা থেকে মুক্তি দিয়েছেন অ্যালেন রবার্ট। আর আগামী দিনও নতুন নতুন নজির গড়তে চান।

বিজনেস আওয়ার/১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: