বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করা এবং বেশি বেশি নিজের অক্ষমতা প্রকাশ করা। কারণ আমাদের মধ্যেও কিছু মানুষ আল্লাহর কাছে বিশেষভাবে ভালোবাসার পাত্র হয়ে ওঠেন। সবকিছুর স্রষ্টা যিনি, সেই মহান রব আমাদের সৃষ্টি করেছেন সবকিছুর চেয়ে সম্মানিত করে। এমন কিছু বিশেষ গুণ আপনাকে আল্লাহর নিকটবর্তী করবে।
পবিত্র কুরআন আমাদেরকে এমন মানুষদের বিশেষ হয়ে ওঠার নেপথ্যের গুণগুলো জানিয়ে দেয়। ইরশাদ হয়েছে,
الَّذِينَ يُنفِقُونَ فِي السَّرَّاءِ وَالضَّرَّاءِ وَالْكَاظِمِينَ الْغَيْظَ وَالْعَافِينَ عَنِ النَّاسِ ۗ وَاللَّـهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ
অর্থ: যারা ব্যয় করে স্বচ্ছলতায় এবং অভাবের সময়, যারা নিজেদের রাগকে সংবরণ করে আর মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে, বস্তুতঃ আল্লাহ সৎকর্মশীলদিগকেই ভালোবাসেন। (সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৪)
আয়াতে উল্লেখিত আল্লাহর পছন্দ করা তিন সৎকর্মশীল ব্যক্তি হলেন,
১. স্বচ্ছল-অস্বচ্ছল উভয় অবস্থাতেই নিজের সম্পদ থেকে আল্লাহর পথে ব্যয়কারী
ব্যক্তির অবস্থা স্বচ্ছল বা অস্বচ্ছল যাই হোক না কেন, সকল সময়ই যে ব্যক্তি তার সম্পদ থেকে আল্লাহর পথে ব্যয় করে, আল্লাহ তাকে ভালোবাসেন। দারিদ্র্যতার ভয়ে তারা তাদের দানকে বন্ধ করে দেয় না।
এ প্রকারের ব্যক্তিদের আল্লাহ ‘কল্যাণে পরিপূর্ণ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
২. রাগের সময় রাগকে দমনকারী বীর
যখন কোন ব্যক্তি কোন কারণে ক্রোধান্বিত হয়ে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর্যায়ে পৌঁছায়, এমতাবস্থায় যদি সে নিজের ক্রোধকে দমন করে, তবে সে আল্লাহর ভালোবাসা অর্জনের পথে কয়েকগুণ এগিয়ে যায়। আল্লাহ তাদেরকে উত্তম ব্যক্তি হিসেবে অভিহিত করেছেন।
সুতরাং আপনি যদি আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করতে চান, তাহলে যখনই কোন কারণে রাগান্বিত হবেন, আপনার রাগকে তখন দমন করুন। বিনিময়ে আপনি অর্জন করতে পারেন আল্লাহর অপরিমেয় ভালোবাসা, যার কল্যাণকর প্রভাব আপনি বাস্তব জীবনে দেখতে পাবেন। পরকালীন প্রাপ্তি তো আছেই।
৩. মানুষের ত্রুটি ও অপরাধ ক্ষমাকারী
যে মানুষ অন্য মানুশের ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করতে জানে, আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসেন।
পাশাপাশি মনে রাখতে হবে, কাউকে যদি একবার, দুইবার, তিনবার বা তার থেকেও বেশি ক্ষমা করার পর পুনরায় সে একই ভুল করতে থাকে, তবে চিন্তা করতে হবে, সেই ব্যক্তি কি আসলে ক্ষমার অপব্যবহার করছে কিনা।
যদি ক্ষমার দ্বারা কোন ব্যক্তির সংশোধন না হয়, তাহলে তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ দোষনীয় নয়।
রাসূল (সা.) এর জীবন থেকে আমরা এই বিষয়ের শিক্ষা পাই। মুশরিকরা তার প্রতি অত্যাচার-নির্যাতনের কিছুই বাকি রাখেনি। কিন্তু তিনি পাল্টা আঘাত করেননি।
কিন্তু যখন তা সীমা ছাড়িয়ে গেল, রাসূল মদীনায় হিজরত করে শক্তি অর্জন করেন এবং তাদেরকে প্রতিহত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
আল্লাহ আমাদেরকে বোঝার এবং আমল করার তাওফিক দান করুন।
বয়ান : মুফতি ইসমাইল মেনক
বিজনেস আওয়ার/ ২৮ সেপ্টেম্বর,২০২২/এএইচএ