বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ১৪ নং- দূর্গাপুর ইউনিয়নের খামার হরিপুরে বিয়ের দাবিতে দূর সম্পর্কের দুলাভাইয়ের বাড়িতে অনশন কর্মসূচি পালন করছে এক স্কুলছাত্রী। এ সময় ওই ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছে বলে জানা গেছে।
ঘটনার তিনদিন পেরিয়ে গেলেও ঐ ছাত্রী বিয়ের দাবিতে তার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন। একাধিক বৈঠক আর মিমাংসার চেষ্টা করেও কোন সমাধানে আসতে পারেনি উভয়পক্ষ। এ নিয়ে ঐ এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার শঠিবাড়ীস্থ খামার হরিপুর গ্রামের রফিক মিয়ার পুত্র মো. সুজন মিয়া (২৭) দুই সন্তানের জনকের সঙ্গে পাশ্ববর্তী ধলার-পাড়া গ্রামের মিজানুর রহমানের নাবালিকা কন্যা, শঠিবাড়ী বহুমুখী উচ্চ-বিদ্যালয়ের অষ্টম-শ্রেনীর ছাত্রীর (১৫) সঙ্গে দূর সম্পর্কের দুলাভাইয়ের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
প্রেম ভালোবাসার সূত্র ধরে, মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২ ঘটিকায় ঐ ছাত্রী সুজনের নিজ বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেয়। সুজনের পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে না নিলে মাত্রাতিরিক্ত চেতনানাশক ওষুধ সেবন করে এবং সে নিজের হাতের বিভিন্ন জায়গায় ব্লেড দিয়ে কাটাছেঁড়া করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।
বিষয়টি মিমাংসার উদ্দেশ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকারের বাড়িতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যানকে ঐ ছাত্রী জানান, যে কোন মূল্যে তিনি সুজনকে বিয়ে করতে চান। পরে উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশে ঐ ছাত্রীকে তার বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু ঐ ছাত্রী তার বাবার সঙ্গে না গিয়ে পুনরায় বিয়ের দাবিতে সুজনের বাড়িতে অবস্থান নেন।
ঘটনার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো সমাধান না হওয়ায় স্থানীয় লোকজন অস্বস্তি প্রকাশ করে বলেন, ঐ ছাত্রীকে নিয়ে আমরা খুব টেনশনে আছি। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছে। উভয়পক্ষ কোন সমাধানে না আসায় ঐ ছাত্রী অসুস্থ অবস্থায় পড়ে আছে। কখন কি করে বলা যায় না।
অভিযুক্ত সুজনের বাড়িতে গেলে, বাড়ির গেইট তালাবদ্ধ থাকায় কারো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
পরে ঐ ছাত্রীর চাচা জানান, বাড়িতে গেলে মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে। তাই সমাধানের চেষ্টা চলছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকার জানান, নাবালিকা মেয়ে, বিয়ের বয়স হয়নি; তাই তাকে বুঝিয়ে তার বাবার সঙ্গে পাঠিয়ে দিয়েছি। সালিশে ওই কিশোরীকে মারার বিষয়টিও তিনি অস্বীকার করেন। যদিও সংবাদকর্মীদের দাবি ওই কিশোরীকে তার নির্দেশে এলোপাতাড়ি পেটানো হয়েছে।
মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানান, এ বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ রিপোর্ট লেখা অবধি চতুর্থ দিনেও অনশন অব্যাহত রয়েছে।
বিজনেস আওয়ার/ ০১ অক্টোবর,২০২২/এএইচএ