বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়েও এক বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে অপহরণকারীরা। গত ২৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে মালয়েশিয়ার সেরি কেম্বানগান তামিলজায়ার বাসার নিচ থেকে সোহেল মিয়াকে (৩৯) কে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা।
অপহরণের ১১ দিন পর স্থানীয় সময় দেশটির পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করেছে।
বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়াললামপুর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে সেলাঙ্গর রাজ্যের সেরিকামবাগানের তামিং জায়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১০ নম্বর রোডের একটি কারখানার পেছনের জঙ্গল থেকে এই প্রবাসী বাংলাদেশির মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় কাজাং থানা পুলিশ।
বাংলাদেশ হাইকমিশন সূত্র এবং সোহেলের প্রবাসী স্বজনরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মালয়েশিয়ার কাজাং ওসিপিডির সহকারী কমিশনার মোহম্মদ জাইদ হাসান জানিয়েছেন, মরদেহে আংশিক পচন ধরেছে। তার হাত সেলোফেন টেপ দিয়ে পেঁচানো ও মুখ বাঁধা ছিল।
তিনি জানান, অপহরণের ঘটনায় আটক অন্য চার প্রবাসী বাংলাদেশির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে সোহেলের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোহেলের মামা মিজানের দায়ের করা অভিযোগের ভিওিতে কাজাং থানা পুলিশ অভিযান শুরু করেছিল।
শুক্রবার সকালে সারডাং হাসপাতালে মরদেহ নিয়ে আসার পর সোহেলের প্রবাসী মামা মিজান মরদেহ শনাক্ত করেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে তামিলজায়া এলাকায় বাসার কাছ থেকে সোহেল মিয়াকে অপহরণ করা হয়। মেরে ফেলার হুমকিতে ২৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের বরিশালের একটি ব্যাংকের শাখার মাধ্যমে অপহরণকারীদের দাবি করা ৫ লাখ টাকার মুক্তিপণ পাঠায় সোহেলের পরিবার। কিন্তু তারপরও মুক্তি না পাওয়ায় মালয়েশিয়ায় দুটি এবং দেশে একটি মামলা করে সোহেলের পরিবার। এছাড়াও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসেও সহায়তা চেয়ে আবেদন করে তার পরিবার।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দক্ষিণ ধলাপাড়া গ্রামের মরহুম আহমেদ মিয়ার ছেলে সোহেল, পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে ২০০৭ সালে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান তিনি। সেখানে একটি কারখানায় কাজ করতেন তিনি।
কাজং পুলিশ জানায়, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ৫ অক্টোবর বিকেলে বেরানং এলাকা থেকে দুই বাংলাদেশি এবং পরদিন সেমোনিয়া এলাকা থেকে আরও দুই বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে মামুন শিকদার ও আলমগীরের নাম প্রকাশ হলেও তদন্তের স্বার্থে অন্য দুজনের নাম জানায়নি পুলিশ।
এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার বলেন, সোহেল মিয়া অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় জড়িত চক্রের সবাইকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হবে। প্রবাসে যারা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করবে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, সোহেলের অপহরণের পর থেকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে হাইকমিশন মালয়েশিয়ার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়াও বাংলাদেশের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগযোগ রাখছে।
বিজনেস আওয়ার/০৭ অক্টোবর, ২০২২/এএইচএ