ঢাকা , বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টাকার বিনিময়ে ভোট, পরে দেখা গেল সবই জাল নোট!

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ অক্টোবর ২০২২
  • 75

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে এক সদস্য পদপ্রার্থী ভোট আদায়ের কৌশল হিসেবে আগের রাতে ভোটারদের জাল টাকার বান্ডিল দিয়ে প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিজয়ী প্রার্থী সুমন সরকারের বিরুদ্ধে নকল টাকা সরবরাহ করে ভোট কেনার গোপন তথ্য ফাঁস হয়েছে। এমন অভিযোগ তুলেছে অন্তত সাত ইউপি সদস্য।

তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই ভোটাররা রাতে টাকা নেওয়ার পর নির্দিষ্ট প্রতীকে রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। পরে প্রার্থীর দেওয়া টাকা নিয়ে কিছু কেনাকাটা ও ফুর্তির জন্য বের হন তারা। তবে কেনাকাটা করতে গিয়ে পরখ করে দেখেন সবগুলো টাকা জাল। এরপর দ্রুত প্রার্থীকে জানালে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, জাল নোট যার কাছে পাওয়া যাবে তাকেই কিন্তু পাকড়াও করবে পুলিশ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতারণার শিকার একজন ভোটার বলেন, ‘আগের রাতে তাদের ওই প্রার্থী নিজ হাতে টাকার বান্ডিল বিতরণ করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, এই টাকা ভোটের আগে যেন খরচ না করা হয়। খরচ করলে টাকা দেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হবে। এতে তার ক্ষতি হবে। পরে সেই কথা অনুযায়ী ভোটের আগে টাকাগুলো খরচ করিনি। ভোট দেওয়ার পর স্থানীয় ধানগড়া বাজারে গেলে দোকানদার টাকা হাতে নিয়ে উল্টিয়ে দেখে বলে এগুলো জাল নোট। এরপর টাকাগুলো নিয়ে প্রার্থীর কাছে গেলে তিনি পুলিশে ধরিয়ে দেবেন বলে নানা ভয়ভীতি দেখান।’

বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। মশকরাও করছেন অনেকে। ফেসবুকে একজন লিখেছেন, ‘ভোট দিয়েই ভোটাররা খেলেন ধরা’।

অভিযুক্ত প্রার্থী সুমন সরকার রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। জেলা পরিষদের সদস্য পদে (বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীক) বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এরআগেও তিনি জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন।

ওই ওয়ার্ডের পরাজিত প্রার্থী গোলাম মোস্তফা বলেন, তিনি জালনোটের বিষয়টি ফেসবুকের মাধ্যমে জেনেছেন। তবে কে কাকে জাল টাকার বান্ডিল দিয়েছে
সেটা তার জানা নেই।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জয়ী প্রার্থী সুমন সরকার। তিনি বলেন, তিনি নির্বাচিত হওয়ায় তার প্রতিপক্ষরা এমন মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছেন। তিনি কোনো ইউপি সদস্যকে জাল টাকার বান্ডিল দেননি।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনে অর্থ লেনদেনের বিষয়টি দণ্ডনীয় অপরাধ। তবে আমরা এই বিষয়টি অবগত নই।

জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ বলেন, ‘জাল নোট দিয়ে ভোট কেনাবেচার বিষয়ে কেউই জানায়নি বা অভিযোগও দেয়নি। লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিজনেস আওয়ার/১৮ অক্টোবর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

টাকার বিনিময়ে ভোট, পরে দেখা গেল সবই জাল নোট!

পোস্ট হয়েছে : ০১:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ অক্টোবর ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে এক সদস্য পদপ্রার্থী ভোট আদায়ের কৌশল হিসেবে আগের রাতে ভোটারদের জাল টাকার বান্ডিল দিয়ে প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিজয়ী প্রার্থী সুমন সরকারের বিরুদ্ধে নকল টাকা সরবরাহ করে ভোট কেনার গোপন তথ্য ফাঁস হয়েছে। এমন অভিযোগ তুলেছে অন্তত সাত ইউপি সদস্য।

তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই ভোটাররা রাতে টাকা নেওয়ার পর নির্দিষ্ট প্রতীকে রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। পরে প্রার্থীর দেওয়া টাকা নিয়ে কিছু কেনাকাটা ও ফুর্তির জন্য বের হন তারা। তবে কেনাকাটা করতে গিয়ে পরখ করে দেখেন সবগুলো টাকা জাল। এরপর দ্রুত প্রার্থীকে জানালে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, জাল নোট যার কাছে পাওয়া যাবে তাকেই কিন্তু পাকড়াও করবে পুলিশ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতারণার শিকার একজন ভোটার বলেন, ‘আগের রাতে তাদের ওই প্রার্থী নিজ হাতে টাকার বান্ডিল বিতরণ করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, এই টাকা ভোটের আগে যেন খরচ না করা হয়। খরচ করলে টাকা দেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হবে। এতে তার ক্ষতি হবে। পরে সেই কথা অনুযায়ী ভোটের আগে টাকাগুলো খরচ করিনি। ভোট দেওয়ার পর স্থানীয় ধানগড়া বাজারে গেলে দোকানদার টাকা হাতে নিয়ে উল্টিয়ে দেখে বলে এগুলো জাল নোট। এরপর টাকাগুলো নিয়ে প্রার্থীর কাছে গেলে তিনি পুলিশে ধরিয়ে দেবেন বলে নানা ভয়ভীতি দেখান।’

বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। মশকরাও করছেন অনেকে। ফেসবুকে একজন লিখেছেন, ‘ভোট দিয়েই ভোটাররা খেলেন ধরা’।

অভিযুক্ত প্রার্থী সুমন সরকার রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। জেলা পরিষদের সদস্য পদে (বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীক) বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এরআগেও তিনি জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন।

ওই ওয়ার্ডের পরাজিত প্রার্থী গোলাম মোস্তফা বলেন, তিনি জালনোটের বিষয়টি ফেসবুকের মাধ্যমে জেনেছেন। তবে কে কাকে জাল টাকার বান্ডিল দিয়েছে
সেটা তার জানা নেই।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জয়ী প্রার্থী সুমন সরকার। তিনি বলেন, তিনি নির্বাচিত হওয়ায় তার প্রতিপক্ষরা এমন মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছেন। তিনি কোনো ইউপি সদস্যকে জাল টাকার বান্ডিল দেননি।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনে অর্থ লেনদেনের বিষয়টি দণ্ডনীয় অপরাধ। তবে আমরা এই বিষয়টি অবগত নই।

জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ বলেন, ‘জাল নোট দিয়ে ভোট কেনাবেচার বিষয়ে কেউই জানায়নি বা অভিযোগও দেয়নি। লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিজনেস আওয়ার/১৮ অক্টোবর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: