ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নগদ লভ্যাংশ নেবে না জেমিনির পরিচালকেরা : বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ নাকি দূর্বলতা?

  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর ২০২২
  • 45

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত জেমিনি সী ফুডের ২০২১-২২ অর্থবছরের ব্যবসায় প্রায় সাড়ে ১২ টাকার শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে। কিন্তু তারপরেও এই কোম্পানিটির উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা নগদ লভ্যাংশ নেবেন না। যেটাকে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে না, বরং কোম্পানির দূর্বলতা বা অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

সাধারনত একটি কোম্পানির লভ্যাংশ সব ধরনের শেয়ারহোল্ডার নেয়। তবে সক্ষমতার অভাবে এবং ক্যাটাগরি ধরে রাখার জন্য বা উপরে উঠার জন্য মাঝেমধ্যে কিছু কোম্পানির উদ্যোক্তা/পরিচালকদের নগদ লভ্যাংশ নিতে দেখা যায় না। কিন্তু জেমিনি সী ফুডের বড় মুনাফা অর্জন সত্ত্বেও উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা নগদ লভ্যাংশ নেবে না।

যে কারনে জেমিনির প্রকৃত মুনাফা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শেয়ারটি নিয়ে কারসাজির উদ্দেশ্যে এমনটি করা হয়ে থাকতে পারে। যে কোম্পানিটির লভ্যাংশ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যে অস্বাভাবিক দর বেড়েছে।

মাঝেমধ্যে কিছু কোম্পানির কর্তৃপক্ষ লোকসান সত্ত্বেও মুনাফা দেখায় এবং লভ্যাংশ ঘোষনা করে থাকে। বিশেষ করে ছোট মূলধনী কোম্পানিগুলো এমনটি করে থাকে। এক্ষেত্রে তারা নগদ লভ্যাংশ প্রদান করে শেয়ার কারসাজি থেকে অর্জিত মুনাফা থেকে। ওইসব কোম্পানিতে কারসাজিতে যে পরিমাণ মুনাফা করে, তার থেকে নগদ লভ্যাংশ প্রদানে ব্যয় অনেক কম হয়ে থাকে। যে কারনে মুনাফা না করেও কিছু কোম্পানি কর্তৃপক্ষ গেম্বলারদের সাথে হাত মিলিয়ে এমন লভ্যাংশ দিয়ে থাকে।

আরও পড়ুন…..
হিরুর নেতৃত্বে গেম্বলিং : শাস্তির চিঠি অন্যদের নামে

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ি, জেমিনি সী ফুডের ২০২১-২২ অর্থবছরের ব্যবসায় শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১২.৪৯ টাকা। এ হিসেবে অর্থবছরটিতে কোম্পানিটির ৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকার নিট মুনাফা হয়েছে।

এই মুনাফার বিপরীতে জেমিনির পরিচালনা পর্ষদ শুধুমাত্র সাধারন শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ হারে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা করে মোট ৩১ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আর সবার জন্য ৩০ শতাংশ হারে ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা করে বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ মোট ১ কোটি ৭২ লাখ টাকার লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে।

মুনাফার বাকি ৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা বা ৭০.৭০ শতাংশ রিটেইন আর্নিংসে যোগ হবে।

এমন অস্বাভাবিক মুনাফা করা জেমিনির শেয়ারপ্রতি পরিচালন নগদ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ঋণাত্মক। রপ্তানিকারক কোম্পানি হয়েও কোম্পানিটির ২৫.৭৯ টাকার মতো ঋণাত্মক এনওসিএফপিএস হওয়া অস্বাভাবিক। অর্থাৎ কোম্পানিটি নগদ টাকার সংকটে ভুগছে। কিন্তু রপ্তানিকারক কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষের দেনাদার বৃদ্ধির ফলে নগদ প্রবাহ এমন ঋণাত্মক হওয়ার দাবি অযৌক্তিক।

লভ্যাংশ নিতে না চাওয়া জেমিনি সী ফুডের শেয়ার দর গত কয়েক মাস ধরে অস্বাভাবিক বাড়ছিল। যে শেয়ারটি ৩ মাস আগে (২১ জুলাই) ছিল ৩২৮.৫০ টাকা। যেটি ১৯ অক্টোবর বেড়ে ৫৯৩.৪০ টাকায় উঠে যায়। তবে আজ ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়েছিল।

উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া জেমিনির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ১৬১ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এরমধ্যে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদদের মালিকানা ৬৬.৩৫ শতাংশ।

বিজনেস আওয়ার/২০ অক্টোবর, ২০২২/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

নগদ লভ্যাংশ নেবে না জেমিনির পরিচালকেরা : বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ নাকি দূর্বলতা?

পোস্ট হয়েছে : ০৪:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত জেমিনি সী ফুডের ২০২১-২২ অর্থবছরের ব্যবসায় প্রায় সাড়ে ১২ টাকার শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে। কিন্তু তারপরেও এই কোম্পানিটির উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা নগদ লভ্যাংশ নেবেন না। যেটাকে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে না, বরং কোম্পানির দূর্বলতা বা অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

সাধারনত একটি কোম্পানির লভ্যাংশ সব ধরনের শেয়ারহোল্ডার নেয়। তবে সক্ষমতার অভাবে এবং ক্যাটাগরি ধরে রাখার জন্য বা উপরে উঠার জন্য মাঝেমধ্যে কিছু কোম্পানির উদ্যোক্তা/পরিচালকদের নগদ লভ্যাংশ নিতে দেখা যায় না। কিন্তু জেমিনি সী ফুডের বড় মুনাফা অর্জন সত্ত্বেও উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা নগদ লভ্যাংশ নেবে না।

যে কারনে জেমিনির প্রকৃত মুনাফা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শেয়ারটি নিয়ে কারসাজির উদ্দেশ্যে এমনটি করা হয়ে থাকতে পারে। যে কোম্পানিটির লভ্যাংশ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যে অস্বাভাবিক দর বেড়েছে।

মাঝেমধ্যে কিছু কোম্পানির কর্তৃপক্ষ লোকসান সত্ত্বেও মুনাফা দেখায় এবং লভ্যাংশ ঘোষনা করে থাকে। বিশেষ করে ছোট মূলধনী কোম্পানিগুলো এমনটি করে থাকে। এক্ষেত্রে তারা নগদ লভ্যাংশ প্রদান করে শেয়ার কারসাজি থেকে অর্জিত মুনাফা থেকে। ওইসব কোম্পানিতে কারসাজিতে যে পরিমাণ মুনাফা করে, তার থেকে নগদ লভ্যাংশ প্রদানে ব্যয় অনেক কম হয়ে থাকে। যে কারনে মুনাফা না করেও কিছু কোম্পানি কর্তৃপক্ষ গেম্বলারদের সাথে হাত মিলিয়ে এমন লভ্যাংশ দিয়ে থাকে।

আরও পড়ুন…..
হিরুর নেতৃত্বে গেম্বলিং : শাস্তির চিঠি অন্যদের নামে

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ি, জেমিনি সী ফুডের ২০২১-২২ অর্থবছরের ব্যবসায় শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১২.৪৯ টাকা। এ হিসেবে অর্থবছরটিতে কোম্পানিটির ৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকার নিট মুনাফা হয়েছে।

এই মুনাফার বিপরীতে জেমিনির পরিচালনা পর্ষদ শুধুমাত্র সাধারন শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ হারে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা করে মোট ৩১ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আর সবার জন্য ৩০ শতাংশ হারে ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা করে বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ মোট ১ কোটি ৭২ লাখ টাকার লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে।

মুনাফার বাকি ৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা বা ৭০.৭০ শতাংশ রিটেইন আর্নিংসে যোগ হবে।

এমন অস্বাভাবিক মুনাফা করা জেমিনির শেয়ারপ্রতি পরিচালন নগদ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ঋণাত্মক। রপ্তানিকারক কোম্পানি হয়েও কোম্পানিটির ২৫.৭৯ টাকার মতো ঋণাত্মক এনওসিএফপিএস হওয়া অস্বাভাবিক। অর্থাৎ কোম্পানিটি নগদ টাকার সংকটে ভুগছে। কিন্তু রপ্তানিকারক কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষের দেনাদার বৃদ্ধির ফলে নগদ প্রবাহ এমন ঋণাত্মক হওয়ার দাবি অযৌক্তিক।

লভ্যাংশ নিতে না চাওয়া জেমিনি সী ফুডের শেয়ার দর গত কয়েক মাস ধরে অস্বাভাবিক বাড়ছিল। যে শেয়ারটি ৩ মাস আগে (২১ জুলাই) ছিল ৩২৮.৫০ টাকা। যেটি ১৯ অক্টোবর বেড়ে ৫৯৩.৪০ টাকায় উঠে যায়। তবে আজ ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়েছিল।

উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া জেমিনির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ১৬১ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এরমধ্যে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদদের মালিকানা ৬৬.৩৫ শতাংশ।

বিজনেস আওয়ার/২০ অক্টোবর, ২০২২/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: