বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: চাকরি হারানো দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনকে চাকরি দিতে চায় ৩৫টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। সাবেক এ কর্মকর্তা ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আলোচিত এক ব্যাক্তি। বর্তমানে তিনি চাকরি হারিয়ে চট্টগ্রাম ষোলশহর স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে একটি কনফেকশনারি দোকানদার।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, চাকরিচ্যুত আলোচিত দুদকের সাবেক উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) শরীফ উদ্দিন গত নয় মাস ধরে সামলাচ্ছেন ভাইয়ের কনফেকশনারি (দোকান)।
এদিকে গত কয়েকদিনে বিভিন্ন গণমাধ্যমে শরীফকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরই আবার আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসেন তিনি। এবার জানা গেল, সংবাদ প্রকাশের পর আলোচিত এই সাবেক দুদক কর্মকর্তাকে চাকরি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে দেশের ৩৫টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
তবে যে ‘কোম্পানির মাধ্যমে দেশ ও মানুষের সেবায় কাজ করতে’ পারবেন সেই কোম্পানিতে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন শরীফ।
একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘বুধবার পর্যন্ত দেশের ৩৫টি বড় বড় কোম্পানি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে চাকরি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।’
দুদকের সাবেক এ উপসহকারী পরিচালক বলেন, ‘মানুষের যে পরিমাণ ভালোবাসা পেয়েছি, তা কোনোভাবেই পরিশোধের নয়।’
উপ-সহকারী পরিচালক হিসেবে শরীফ উদ্দিন প্রায় সাড়ে তিন বছর দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। তিনি কক্সবাজারে ৭২টি প্রকল্পে সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি, কিছু রোহিঙ্গার এনআইডি ও পাসপোর্ট জালিয়াতি, কর্ণফুলী গ্যাসে অনিয়মসহ বেশ কিছু দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি মামলা করেন।
গত বছরের ১৬ জুন শরীফ উদ্দিনকে চট্টগ্রাম থেকে পটুয়াখালীতে বদলি করা হয়। এরপর তাকে ১৬ ফেব্রুয়ারি চাকরিচ্যুত করা হয়। চাকরিচ্যুতির কোনো কারণ উল্লেখ করেনি কর্তৃপক্ষ।
তিনি ২৭ ফেব্রুয়ারি ওই আদেশ প্রত্যাহারপূর্বক চাকরিতে পুনর্বহালের আবেদন করেন। তবে তার আবেদন কমিশনের কাছে বিবেচিত হয়নি। শরীফকে চাকরিতে পুনর্বহাল চেয়ে এক আইনজীবী হাইকোর্ট রিট করেন। সেটির এখনো শুনানি হয়নি।
সাড়ে সাত বছরের চাকরিজীবনের প্রথম ছয় বছরই বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনে (এসিআর) শরীফ উদ্দিনকে দুদকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা ‘অতি উত্তম’ হিসেবে মূল্যায়ন করেন। তাকে তদন্তকাজে ‘অভিজ্ঞ’ এবং ‘উদ্যমী ও দক্ষ কর্মকর্তা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে দুদক। চাকরিচ্যুতির কোনো কারণ উল্লেখ করেনি কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি মো. শরীফ উদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, কক্সবাজারে বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে দুর্নীতি, রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টসহ বিভিন্ন দুর্নীতির মামলা দায়ের ও তদন্ত করে দুর্নীতিবাজদের রোষানলে পড়েন তিনি। অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয় তাকে। চাকরি ফিরে পাওয়ার আবেদন করলেও তা হয়নি। বিভিন্ন জায়গায় চাকরির চেষ্টা করলেও প্রভাবশালীদের বাধার মুখে হচ্ছে না। শেষমেশ বাধ্য হয়ে বড় ভাইয়ের দোকানে চাকরি করছেন।
বিজনেস আওয়ার/০৯ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ