ঢাকা , রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুলিশ সদস্যদের জিম্মি করে ‘আটক জঙ্গিদে’র থানা দখল

  • পোস্ট হয়েছে : ০৫:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২২
  • 48

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বান্নু জেলার সেনানিবাসের একটি সন্ত্রাসবিরোধী থানা (সিটিডি) দখলে নিয়েছে পাকিস্তানি তালেবান (টিটিপি) জঙ্গিরা। পুলিশ জানিয়েছে, জঙ্গিরা থানার ভেতরে থাকা লোকদের জিম্মি করার সময় অন্তত দুই পুলিশ নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন। ঘটনার ১৮ ঘন্টা পরেও সামরিক অভিযান চলছে এবং সেখানকার পরিস্থিতি এখনও উত্তেজনাপূর্ণ।

পাকিস্তানি দৈনিক দ্য ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার বান্নু সেনানিবাসের ভিতরে কাউন্টার-টেররিজম ডিপার্টমেন্ট (সিটিডি) থানায় এই ঘটনা ঘটে। থানার ভেতরে গ্রেপ্তার হওয়া জঙ্গিদের মধ্যে একজন পুলিশের কাছ থেকে একটি একে-৪৭ ছিনিয়ে নিয়ে গুলি চালায়। এরপরই সেই জঙ্গি সেখানে আটক অন্যান্য জঙ্গিকে মুক্ত করে এবং পুরো কম্পাউন্ডের নিয়ন্ত্রণ নেয়। তারা বেশ কয়েকজন বেসামরিক ও পুলিশ সদস্যকেও জিম্মি করে।

বান্নুর জেলা পুলিশ কর্মকর্তা (ডিপিও) মোহাম্মদ ইকবাল বলেছেন, বাইরে থেকে কোনো হামলা হয়নি, একজন জঙ্গি জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশের কাছ থেকে রাইফেলটি ছিনিয়ে নেয় এবং থানাটি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

তিনি আরও জানিয়েছেন, জঙ্গিরা এখনও ভবনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং আমরা পুরো বান্নু সেনানিবাস ঘেরাও করে রেখেছি। বাসিন্দাদের বাড়ির ভিতরে থাকতে বলা হয়েছে। ওই এলাকায় ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন পরিষেবাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

এক্সপ্রেস ট্রিবিউন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আকরাম খান দুররানি এবং বর্তমান প্রাদেশিক মন্ত্রী মালিক শাহ মুহম্মদ জঙ্গিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। জঙ্গিরা জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে তাদের নিরাপদে আফগানিস্তানে পৌঁছানোর জন্য একটি হেলিকপ্টার দেয়ার দাবি জানিয়েছে।

এদিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। এক বিবৃতিতে, জঙ্গি গোষ্ঠীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, তাদের সদস্যরা সিটিডি কর্মী এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের জিম্মি করে নিয়েছিল।

বিবৃতিতে, পাকিস্তান সরকারকে টিটিপি সদস্যদের দক্ষিণ বা উত্তর ওয়াজিরিস্তানে স্থানান্তর করতে বলে যেখানে টিটিপির আস্তানা রয়েছে। অন্যথায় সমস্ত ক্ষতির জন্য সেনাবাহিনী দায়ী থাকবে বলে হুমকি দেয়।

এর আগে, সিটিডি থানা কম্পাউন্ডের ভিতর থেকে জঙ্গিদের প্রকাশিত একটি ভিডিও দাবি করে, ৯ জন পুলিশ কর্মী তাদের বন্দী অবস্থায় ছিল এবং জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে আকাশপথে আফগানিস্তানে নিরাপদে যাওয়ার দাবি করেছিল।

এদিকে এই ঘটনায় শেহবাজ শরিফের সরকারের সমালচনা করেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান। যদিও খাইবার পাখতুনখোয়ায় নেতৃত্বে রয়েছে তার দল পিটিআই।

সোমবার একাধিক টুইট বার্তায় ফেডারেল সরকারের সমালোচনা করে ইমরান খান বলেন, এই আমদানি করা সরকারের শাসনামলে দেশজুড়ে ৫০ শতাংশ সন্ত্রাসবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/১৯ ডিসেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

পুলিশ সদস্যদের জিম্মি করে ‘আটক জঙ্গিদে’র থানা দখল

পোস্ট হয়েছে : ০৫:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বান্নু জেলার সেনানিবাসের একটি সন্ত্রাসবিরোধী থানা (সিটিডি) দখলে নিয়েছে পাকিস্তানি তালেবান (টিটিপি) জঙ্গিরা। পুলিশ জানিয়েছে, জঙ্গিরা থানার ভেতরে থাকা লোকদের জিম্মি করার সময় অন্তত দুই পুলিশ নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন। ঘটনার ১৮ ঘন্টা পরেও সামরিক অভিযান চলছে এবং সেখানকার পরিস্থিতি এখনও উত্তেজনাপূর্ণ।

পাকিস্তানি দৈনিক দ্য ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার বান্নু সেনানিবাসের ভিতরে কাউন্টার-টেররিজম ডিপার্টমেন্ট (সিটিডি) থানায় এই ঘটনা ঘটে। থানার ভেতরে গ্রেপ্তার হওয়া জঙ্গিদের মধ্যে একজন পুলিশের কাছ থেকে একটি একে-৪৭ ছিনিয়ে নিয়ে গুলি চালায়। এরপরই সেই জঙ্গি সেখানে আটক অন্যান্য জঙ্গিকে মুক্ত করে এবং পুরো কম্পাউন্ডের নিয়ন্ত্রণ নেয়। তারা বেশ কয়েকজন বেসামরিক ও পুলিশ সদস্যকেও জিম্মি করে।

বান্নুর জেলা পুলিশ কর্মকর্তা (ডিপিও) মোহাম্মদ ইকবাল বলেছেন, বাইরে থেকে কোনো হামলা হয়নি, একজন জঙ্গি জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশের কাছ থেকে রাইফেলটি ছিনিয়ে নেয় এবং থানাটি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

তিনি আরও জানিয়েছেন, জঙ্গিরা এখনও ভবনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং আমরা পুরো বান্নু সেনানিবাস ঘেরাও করে রেখেছি। বাসিন্দাদের বাড়ির ভিতরে থাকতে বলা হয়েছে। ওই এলাকায় ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন পরিষেবাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

এক্সপ্রেস ট্রিবিউন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আকরাম খান দুররানি এবং বর্তমান প্রাদেশিক মন্ত্রী মালিক শাহ মুহম্মদ জঙ্গিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। জঙ্গিরা জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে তাদের নিরাপদে আফগানিস্তানে পৌঁছানোর জন্য একটি হেলিকপ্টার দেয়ার দাবি জানিয়েছে।

এদিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। এক বিবৃতিতে, জঙ্গি গোষ্ঠীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, তাদের সদস্যরা সিটিডি কর্মী এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের জিম্মি করে নিয়েছিল।

বিবৃতিতে, পাকিস্তান সরকারকে টিটিপি সদস্যদের দক্ষিণ বা উত্তর ওয়াজিরিস্তানে স্থানান্তর করতে বলে যেখানে টিটিপির আস্তানা রয়েছে। অন্যথায় সমস্ত ক্ষতির জন্য সেনাবাহিনী দায়ী থাকবে বলে হুমকি দেয়।

এর আগে, সিটিডি থানা কম্পাউন্ডের ভিতর থেকে জঙ্গিদের প্রকাশিত একটি ভিডিও দাবি করে, ৯ জন পুলিশ কর্মী তাদের বন্দী অবস্থায় ছিল এবং জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে আকাশপথে আফগানিস্তানে নিরাপদে যাওয়ার দাবি করেছিল।

এদিকে এই ঘটনায় শেহবাজ শরিফের সরকারের সমালচনা করেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান। যদিও খাইবার পাখতুনখোয়ায় নেতৃত্বে রয়েছে তার দল পিটিআই।

সোমবার একাধিক টুইট বার্তায় ফেডারেল সরকারের সমালোচনা করে ইমরান খান বলেন, এই আমদানি করা সরকারের শাসনামলে দেশজুড়ে ৫০ শতাংশ সন্ত্রাসবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/১৯ ডিসেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: