বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলায় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে মাহফুজ বাবু (৩৫) নামে এক সাংবাদিকের ওপর হামলা করা হয়েছে। এসময় হামলায় বাধা দিতে গেলে ইকবাল হোসেন সুমন (৩২) নামে আরেক সাংবাদিককেও লাঞ্ছিত করা হয়।
বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় উপজেলার কালির বাজার ইউনিয়নের আনন্দপুর এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার সাংবাদিক মাহফুজ বাবু বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের (বিএমএসএফ) কুমিল্লা জেলা শাখার সদস্য সচিব এবং বুড়িচং উপজেলা প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি। তিনি স্থানীয় ভোরের কলাম পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত আছেন।
লাঞ্ছিত সাংবাদিক ইকবাল হোসেন সুমন দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার বুড়িচং উপজেলা প্রতিনিধি। হামলায় আহত সাংবাদিক মাহফুজ বাবু স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসা শেষে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন।
সাংবাদিক মাহফুজ বাবু গণমাধ্যমকে জানান, আদর্শ সদর উপজেলার আনন্দপুর এলাকার জান্নাতুল ফেরদৌস কল্পনা নামের এক নারী কুমিল্লার আদালতে তার জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলার কার্যক্রম চলমান থাকায় আদালত বিবাদপূর্ণ জমিতে স্থাপনা নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জোর করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন আনন্দপুর উত্তরপাড়া এলাকার আব্দুল মান্নান। ভুক্তভোগী ওই নারীর এমন অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে যান সাংবাদিক মাহফুজ বাবু এবং ইকবাল হোসেন সুমন। এসময় ভুক্তভোগী নারীর বক্তব্য নেওয়ার সময় আব্দুল মান্নানের ছেলে আবু হানিফ নোমানের নেতৃত্বে ৭-৮ জন ঘটনাস্থলে এসে সাংবাদিক মাহফুজ বাবুর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
এসময় হামলায় বাধা দিতে এলে সাংবাদিক ইকবাল হোসেন সুমনকেও লাঞ্ছিত করা হয়। হামলায় সাংবাদিক মাহফুজ বাবু পেটে, কানে, মাথা ও ঘাড়ে আঘাত পান এবং তার পরনে থাকা জামা ছিঁড়ে ফেলা হয়। এসময় তাদের ব্যবহৃত প্রাইভেটকার ভাঙচুর করে তাদের (সাংবাদিকদের) ক্যামেরা, মোবাইল ফোন ছিনতাই করা হয়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় নাজিরা বাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ফোন করা হলে পুলিশ এসে সাংবাদিকদের উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত হানিফের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি জসীম উদ্দিন চাষী বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলা বরদাশত করা যায় না। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। অনতিবিলম্বে হামলায় জড়িতের বিচার দাবি করছি।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সানজুর মোরশেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়টি দুঃখজনক। খবরটি শোনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে সাংবাদিক মাহফুজ বাবুকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিজনেস আওয়ার/২৮ ডিসেম্বর, ২০২২/এএইচএ