বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ কমে ৩২.৫৭ বিলিয়ন ডলার (৩ হাজার ২০০ কোটি) ঘরে নেমে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) নভেম্বর-ডিসেম্বর মেয়াদের ১১২ কোটি (১ দশমিক ১২ বিলিয়ন) ডলার পরিশোধ করার পর রোববার (৮ জানুয়ারি) এই রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার।
এদিকে রিজার্ভ কমে যাওয়ায় ইতিমধ্যে ডলারের দাম ৮৫ টাকা থেকে বেড়ে ১০৫ থেকে ১০৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা শতকরা হিসাবে বেড়েছে ২৫ শতাংশের বেশি। খোলাবাজারে ডলারের দর ১২০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এখনও ১১২ থেকে ১১৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ডলার।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ৭৬৫ কোটি (৭ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন) ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে ছয় মাসে রিজার্ভ থেকে এত ডলার কখনোই বিক্রি হয়নি। এ ছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমদানি বেড়ে যাওয়ার প্রভাবে কমছে রিজার্ভ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ইতিহাসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে ২০২১ সালের আগস্টে। করোনার প্রভাব শুরুর আগ পর্যন্ত রিজার্ভ ৩২ থেকে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে ওঠানামা করছিল।
অবশ্য রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে আমদানি দায় কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু নতুন এলসি (ঋণপত্র) কমলেও আগের দায় পরিশোধের চাপের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার খরচ কমেনি। নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে আমদানি দায় পরিশোধ বেড়েছে ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ। এ সময় বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলারে। বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে (ব্যালান্স অব পেমেন্ট) ৫ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার।
এদিকে ডলার–সংকট কাটাতে ব্যাংকগুলো প্রবাসী আয় দেশে আনতে এখন প্রতি ডলারে সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা দর দিচ্ছে। আর রফতানি আয় নগদায়নে ডলারের দর ধরা হচ্ছে ১০০ টাকা। ফলে আমদানিতে ডলারের দাম পড়ছে ১০৫-১০৬ টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ হিসাবে, গত অক্টোবর মাসে মোট ৬ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারের আমদানি বিল পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। এ হিসাবে বর্তমানের রিজার্ভ দিয়ে পাঁচ মাসের আমদানি বিল মেটানো সম্ভব।
বিজনেস আওয়ার/০৯ জানুয়ারি, ২০২৩/ এএইচএ